E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মহাদেবপুরে সংখ্যালঘু স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে মারপিট, বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা!

২০২২ জুলাই ১৪ ১৭:৪১:১৮
মহাদেবপুরে সংখ্যালঘু স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে মারপিট, বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা!

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে এক সংখ্যালঘু পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে মারপিট ও বসতবাড়ি ভাংচুরসহ জমিজমা দখলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতারের পরদিন আসামীরা আদালত থেকে জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে বাদীসহ সাক্ষীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অসহায় ওই সংখ্যালঘু পরিবারটি তার পরিবার ও পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তা হীনতায় দিনাতিপাত করছে। 

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কৃষকলীগের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মাস্টারের ছোট ভাইসহ কয়েকজন নেতার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় ওই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি দখল নিতে এ নারকীয় তান্ডব চালানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের ফরমানপুর (হরেকৃষ্ণপুর) গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ তার পুত্র নারায়ণ চন্দ্রসহ পরিবার পরিজন নিয়ে পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত এ বসতবাড়িতে অর্ধশত বছরেরও অধিক সময় ধরে সেখানে বসবাস করে আসছেন। হটাৎ করেই গত ৬ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে একই গ্রামের মৃত রফি উদ্দিনের পুত্র নূর ইসলাম (৫৫) ও আনোয়ার হোসেন (৪৫) গং এর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠি সোটা হাতে নিয়ে ১৮-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল সন্ত্রাসী কায়দায় দেবেন্দ্রনাথের দখলে থাকা ওই বসতবাড়ির জমি দখল নিতে হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলাকারীরা এ সময় ঘরবাড়ি ভাংচুর ও দেবেন্দ্রনাথ এবং তার স্ত্রী সরলা রানীকে একটি আম গাছে বেঁধে রেখে বেধরক মারপিট করাসহ দেবেন্দ্রনাথের পুত্রবধু তাপসী রানীকে (২৬) বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাদের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন ঘটনা স্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও মারপিটে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় ওই গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী, পুত্রবধু, প্রতিবেশী হাতেম আলীসহ অন্তত ৬-৭ জন নারী-পুরুষ আহত হয়। আহতদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে হাতেম আলীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওইদিনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অনুকূল চন্দ্র সাহা বুদু বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন হাইব্রিড নেতা পরোক্ষ ভাবে ওইসব ভুমি দস্যুদের মদদ দেয়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এমন নারকীয় তান্ডব চালানোর সাহস দেখিয়েছে তারা। এ ঘটনার পর এলাকার সংখ্যালঘু পরিবার গুলোতে দেখা দিয়েছে অজানা অতংক। এদিকে ওই নারকীয় তান্ডবের ঘটনায় দেবেন্দ্রনাথ এর পুত্র নারায়ণ চন্দ্র বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দেয়। থানা পুলিশ ঘটনার পরদিন ৭ জুলাই মামলার প্রধান আসামী নুর ইসলামসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। ওই দিনই আদালত থেকে তারা জামিনে এসে এ মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও বাদী অভিযোগ করেন।

এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাতুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্মন বলেন আওয়ামীলীগের পরীক্ষিত কোন নেতা কর্মী এমন ঘৃনিত অপরাধ করতে পারে না। কারা এ রকম অপরাধ মুলক কাজ করছে এ প্রশ্নের উত্তর নেই তাঁর কাছে। থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

(বিএস/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test