E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দৌলতপুরের নৌকা ডুবি পরিবারগুলোর ঈদ আনন্দ যেন চাপা কান্না

২০১৪ অক্টোবর ০৫ ১৩:৫০:১১
দৌলতপুরের নৌকা ডুবি পরিবারগুলোর ঈদ আনন্দ যেন চাপা কান্না

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। কিন্তু সে ঈদ কারো কারো জীবনে কখনও অনাবিল আনন্দের পরিবর্তে বয়ে আনে কষ্ট আর একরাশ চাপা কান্না। আর তা বয়ে বেড়ানো লাগে সারাটি জীবন। এমনই খুশির ঈদ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মায় নৌকা ডুবি পরিবারদের মাঝে আনন্দের পরিবর্তে বয়ে এনেছে দুঃখ, কষ্ট আর স্বজন হারানোর বেদনা।

গত রোজার ঈদের দিন ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মায় নৌকা ডুবিতে একই পরিবারের ৫ জনসহ ১৩ জন নিখোঁজ হয়। ১২ জনের লাশ উদ্ধার হলেও আজও নিখোঁজ রয়েছে কেয়া নামে ৬ বছরের এক শিশু। আবারও সেই খুশির ঈদ সবার দারপ্রান্তে। কিন্তু সে ঈদ সন্তান ও স্বজন হারানো ওই সকল পরিবারের জন্য বয়ে এনেছে বুক ভরা কষ্ট আর চাপা কন্না। ফারাকপুর গ্রামের বাবা সাজুলকে হারানো ছোট্ট দু’শিশুর একদিকে যেমন কান্না থামানো যাচ্ছে না, অপরদিকে ঈদের নতুন পোষাক না পাওয়ার যাতনা তাদের অসহায় দাদির অবুঝ মনকেও পীড়া দিচ্ছে বার বার।

রবিবার দুপুরে পদ্মায় ডুবে লাশ হওয়া ওইসব পরিবারদের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে স্বজন হারানোদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হওয়ার সাথে সাথে নিজের চোখের অশ্রু সংবরন করা যায়নি। সেদিন একই নৌকায় থেকে বেঁচে আসা নিহত পলির ছোট দু’বোন কান্না জড়িত কান্ঠে জানায়, এবেঁচে থাকা যেমন কষ্টের, তার চেয়ে বেশী কষ্টের ঈদ আমাদের সামনে হাজির হলে। কারন এদিনই তাদের পরিবারের ৫ জনকে হারিয়েছে। আবার আনন্দ করতে গিয়ে স্বজন হারিয়ে যারা বেঁচে এসেছে তারাও আজ বাকরুদ্ধ।

তাদের জীবনে আর কোনদিনই ঈদের আনন্দ ফিরে আসবে না। পারবে না তারা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। কিন্তু ঈদ আনন্দের কষ্ট যেন তাদের সাথী হয়ে রইলো চির দিনের। সন্তান হারা স্বপনের বৃদ্ধ পিতা আজ শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আবারও মেডিকেলে পড়া বিভার মা তার মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নায় কাতর হয়ে পড়লেও মুখ ফুটে শুধু বলেছে এমন কষ্টের দিন যেন কারও জীবনে না আসে।

শিশু তিন্নির পিতা ও মাতারও একই অবস্থা। গত রোজার ঈদেও দিন বিকেলে উপজেলার বৈরাগীরচরের নীচে পদ্মা নদীতে নৌকায় চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে প্রবল স্রোতে নৌকা ডুবে গিয়ে শিশুসহ ১৩ জন নিখোঁজ হয়। এদের মধ্যে পলি, বিভা, বিথী, তিন্নি, সাজুল, স্বপন, ইমরানসহ ১২জনের লাশ উদ্ধার হলেও উদ্ধার হয়নি শিশু কেয়ার লাশ।

(কেএইচ/জেএ/অক্টোবর ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test