E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে একযুগ ধরে চাকরি!

২০২২ আগস্ট ০৭ ১৮:২১:০০
নওগাঁয় জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে একযুগ ধরে চাকরি!

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার পাহাড়পুর জিতেন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডল জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে ১২বছর চাকরি করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৭ জুলাই বুধবার প্রধান শিক্ষককে পাঠিয়েছে এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম। এর পূর্বে গত ২৪ মে ২০২২ তারিখে এনটিআরসিএ সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলামের স্বাক্ষরিত পত্রে তিনি শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডলের নিয়োগকালীন সকল কাগজপত্রসহ তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কপি চেয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে পত্র প্রেরণ করেন। সে পত্র মারফত জানা যায়, সহকারী শিক্ষক (উদ্ভিদ বিদ্যা) বিপ্লব কুমার মন্ডল, পিতা: বিমল চন্দ্র মন্ডল, রোল নম্বর: ১১১৫০৫৫০; রেজি নম্বর: ৭০০০২৫৮, ৩য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০০৭ এর শিক্ষক নিবন্ধন সনদের সঠিকতা যাচাই করা প্রয়োজন। সে প্রেক্ষিতে উক্ত শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার অনুলিপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্রের ফটোকপি সত্যায়ন পূর্বক জরুরি ভিত্তিতে এনটিআরসিএ অফিসে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।

কাগজপত্রের আলোকে জানা গেছে, গত ২০১১ সালের ২২ আগস্ট পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিপ্লব কুমার মন্ডল ২০০৭সালের বিজ্ঞান বিষয়ের (উদ্ভিদ বিদ্যা) পাশ করা একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ১৬ নবেম্বর ২০১১ তারিখে গঠিত নিয়োগ বোর্ডে তার চাকরি হয়। যার নিবন্ধন নং ৭০০০২৫৮/২০০৭, এ নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ১১১৫০৫৫০ এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০০৭ খ্রিঃ। নিয়োগের পর শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডল বিদ্যালয়ে ১৫ ডিসেম্বর ২০১১ খ্রিঃ তারিখে যোগদান করেন এবং তার নিয়োগকালীন নিবন্ধন সনদ দিয়েই ১ নবেম্বর ২০১২ তারিখে এমপিওভুক্ত হন। এপর্যন্ত তিনি সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।

এনটিআরসিএ থেকে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রেরিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন এ সনদটি অন্য ব্যক্তির বিপ্লব কুমার মন্ডলের নয়। প্রকৃত সনদধারীর নামঃ খোরশেদা আক্তার, পিতা: মোঃ চাঁন মিয়া, মাতাঃ রোকেয়া বেগম, জেলাঃ কুমিল্লা বিষয়ঃ প্রাণীবিদ্যা, প্রাপ্ত নম্বর: আবশ্যিকে ৫৩ ও ঐচ্ছিকে ৫৩। এ পত্রে আরও জানা যায় যে, তিনি জাল/জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মর্মে দালিলিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। একারণে জাল ও ভুয়া সনদধারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করে তার অনুলিপিসহ এনটিআরসিএ অফিসকে অবহিত করার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এনটিসিআরএ হতে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের নির্দেশ দিলে বিপ্লব কুমার মন্ডল নিয়োগ বোর্ড গঠন ও যোগদানের ১বছর পর ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেন। তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকুরি নিয়েছেন, সেই সনদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য না পাঠিয়ে নিয়োগের ১ বছর পরে পাস করা ১০১১১১১২ নং সিরিয়াল ও রোল নম্বরের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএ তে পাঠিয়ে ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে বিপ্লব কুমার মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মায়া রানী সাহা বলেন, আমি অসুস্থ আমি কথা বলতে পারবো না। এরপর তিনি মুঠোফোনে লাইন কেটে দেন।

(বিএস/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৮ মার্চ ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test