E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কমান্ডার না হয়েও স্মৃতিস্তম্ভে মিথ্যাচারসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

২০২২ আগস্ট ১৪ ১৯:৪৬:৩৬
কমান্ডার না হয়েও স্মৃতিস্তম্ভে মিথ্যাচারসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বারাত গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে যুদ্ধকালিন কমান্ডার না হয়েও স্মৃতিস্তম্ভে মিথ্যাচার,  রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানো, যুদ্ধকালিন সময়ে আশ্রয়দাতার স্ত্রীকে বের করে নিয়ে বিয়ে করা, তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি হওয়ার সুবাদে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে না পছন্দের ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে। জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না মুক্তিযোদ্ধারা।

তালা উপজেলার খেশরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম ফজলুল হক জানান, বারাত গ্রামের মোঃ আব্দুস সোবহান কখনো যুদ্ধকালিন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি গ্রুপ কমাণ্ডার ছিলেন। এরপরও তিনি নিজ গ্রামের ষ্ষ্ঠীতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিফলকে নিজেকে যুদ্ধকালিন কমাণ্ডার লিখে মিথ্যাচার করেছেন চলেছেন। পরানপুরের রাজাকার সোবহান বিশ্বাসকে তিনি ২০১৯ সালে যাচাই বাছাই এর সময় মুক্তিযোদ্ধা বানানোর পক্ষ্যে সাক্ষর করেছেন।

এ ব্যাপারে তিনিসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ও ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলন করেছেন। প্রতিকার চেয়ে তিনি ২০২১ সালের ১৪ মার্চ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন। এরপরও আব্দুস সোবহান রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

তালার খলিলনগরের মুক্তিযোদ্ধা অমল কুমার ঘোষ, ধুলিহরের শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তালা উপজেলায় দ্বিতীয় বারের মত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই শুরু হলেন প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ঘোষিত নীতিমালা উপেক্ষা করে তিনি গ্রামে যেয়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই এর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে কমিটির অপর দুই সদস্য বিরোধিতা করলে তিনি তাদেরকেব হুমকি দিয়েছেন। ধানদিয়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ললিত মোহন সাহা যাতে মুক্তিযোদ্বা না হতে পারে সে জন্য তিনি তবিবর রহমানের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। এমনকি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ললিত মোহন সাহাসহ কয়েকজন ফাইল নিয়ে নিজ দায়িত্বে রাখার চেষ্টা করেছেন। ললিত মোহন সাহার পক্ষে সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ি মতামত না দিতে কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকারকে বারবার হুমকি দিয়ে চলেছেন।

স্থানীয় কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন মোঃ আব্দুস সোবহান একই এলাকার সরুতুল­াহ শেখ এর স্ত্রী রহিমা খাতুনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে তাকে বের করে নিয়ে বিয়ে করেন। পরে তাকে তালাক দিলে এলাকায় চাপা গুঞ্জন শুরু হয়। একপর্যায়ে রহিমা খাতুনকে বাড়ির মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। রহিমার মেয়ে সুফিয়া খাতুন বিষয়টি হত্যা বলে অবহিত করলেও কৌশলে দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয় রহিমার ভাই তোফাজ্জেল দপ্তরী ও মোজাম্মেল দপ্তরীর উপর। এরপর থেকে তিন বছর আব্দুস সোবহান তিন বছর এক ঘরে ছিলেন। আজও তোফাজ্জেল ও মোজাম্মেল মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানকে দুলা ভাই হিসেবে ডাকেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালিন ২০১৩ সালে আব্দুস সোবহানকে স্লিপের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শোকজ করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রাথমিক শিক্সা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন এ ঘটনার তদন্তে এসে ঘটনার সত্যতা পান। সম্প্রতি মোহনা বাজারে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে শালিসি বৈঠক করে তাকে জরিমানা করে আদায়কৃত মাটা অংকের টাকার বড় অংশ আত্মসাৎ করেছেন আব্দুস সোবহান। এ ছাড়া বারাতসহ পার্শ্ববর্তী বিলে হিন্দু জমির মালিকদের জোরপূর্বক হারি না দিয়ে ঘের করতে বাধ্য করতে কেশবপুরের মধু মোস্তফার পক্ষ নিয়ে ওইসব জমির মালিকদের অত্যাচার করারে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোঃ আব্দুস সোবহান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যুদ্ধকালিন সময়ে গ্রুপ কমাণ্ডার ছিলেন। একটি ত্র“টিপূর্ণ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করার সুবিধার্থে তিনি অনড় থাকায় একটি বিশেষ মহল তার সুনাম নষ্ট করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নেমেছেন।

(আরকে/এএস/আগস্ট ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test