E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুবর্ণচরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ বছর ধরে অনুপস্থিত এক শিক্ষিকা!

২০২২ আগস্ট ২৩ ১৫:৪৭:২৬
সুবর্ণচরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ বছর ধরে অনুপস্থিত এক শিক্ষিকা!

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার ৫নং চরজুবলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চর জিয়া উদ্দিন গ্রামে অবস্থিত 'চরজিয়া উদ্দিন খলিল চেয়ারম্যান বাজার বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়' এ নিয়োগের পর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ক্লাস নেন না এক শিক্ষিকা এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কিমিটি, অভিভাবক, শিক্ষক,  শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ আগষ্ট (রোববার) সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, ২০০৫ সাল সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী আবু কালাম সফি চৌধুরী , সে থেকে চলছিলো নিয়মিত পাঠ দান।

২০১০ সালে বিদ্যালয়টিতে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। তার মধ্যে অন্য শিক্ষকগণ নিয়মিত ক্লাস করলেও শাহনাজ আক্তার নামের এক শিক্ষিকা ৩/৪ দিন এসে আর কখনো আসেন নি। অফিসের রেজিঃ খাতা খুলে দেখা যায় ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষিকা শাহনাজ আক্তার উপস্থির সাক্ষর রয়েছে।

২০১০ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত আরেক শিক্ষিকা খোনা রানী দাস এবং জমির উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষিকা শাহনাজ আক্তার মাঝে মাঝে এসে শিক্ষক উপস্থিতি রেজিঃ খাতায় পুরো বছরের সাক্ষর করে যেতেন তিনি।

খোনা রানী দাস বলেন, শাহনাজ আক্তার নিয়োগের পর মাত্র ২ দিন ক্লাস করেছেন আরেকদিন স্কুলের একটি প্রোগ্রাম যোগদান করেছেন। তাহলে শিক্ষক হাজিরা খাতায় সাক্ষর কিভাবে করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ৪/৫ দিন যখন এসেছেন তখন এসব সাক্ষর করে গেছেন এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে ততকালিন প্রধাম শিক্ষক মতিন আমাদেরকে এসব বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করেন।

বর্তমান একাধিক ছাত্রছাত্রী শাহনাজ আক্তার নামে এ শিক্ষকের নামও শুনেনি বলে জানান, ছাত্রছাত্রীদের দাবী নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিলে শিক্ষার মান বাড়বে বিদ্যালয়টিতে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কিমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা আবু কালাম সফি চৌধুরী বলেন, ২০১০ থেকে শিক্ষিকা শাহনাজ আক্তার মাঝে মাঝে এসে পুরো বছরের সাক্ষর করে চলে যেতেন কিন্তু কোন ক্লাস করেনি, এ নিয়ে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছেন।

তিনি আরো বলেন, যদি তিনি ২০১৭ সাল পর্যন্ত অবৈধ উপায়ে সাক্ষর করে উপস্থিতি প্রমান করেন তবুও তো তিনি
দীর্ঘ ৫ বছর ক্লাস করছেন না। এখন ঐ শিক্ষিকার পরিবর্তে আমাদের স্কুলে একজন শিক্ষক প্রয়োজন, আমাদের দাবী সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

চরজিয়া উদ্দিন খলিল চেয়ারম্যান বাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিন বলেন, ম্যাডাম মাঝে মাঝে আসতো, তবে এখন ৫ /৬ বছর স্কুলে আসেন না, আমি চাকুরি ছেড়ে দিয়েছি। তখন তিনি এসে মাঝে মাঝে সাক্ষর গুলো করেছেন।

বর্তমান প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন বসু বলেন, আমি ২০২০ সালে নিয়োগ পেয়েছি, কখনো শিক্ষিকা শাহনাজ আক্তারকে দেখিনি, আমি পাশের আরেকটি স্কুলে চাকুরি করতাম আমার বাড়ি স্কুলের পাশেই কখনো ঐ শিক্ষিকাকে ক্লাস করতে
দেখিনি।

এলাকাবাসী এবং অভিভাবকগণ বলেন, ১০ বছর আগে শুনেছি শাহনাজ আক্তার নামের একজন শিক্ষিকা নিয়োগী দিয়েছে স্কুলে কিন্ত কোনদিন তাকে আমরা দেখিনি। অভিযুক্ত শাহনাজ আক্তারের মুঠোফোন নাম্বারটি না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু জাহের বলেন, সফি সাহেব আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এটা যেহেতু বেসরকারি স্কুল সেজন্য আমাদের তেমন দেখভাল করা হয়না, তবে বিষয়ে আমি ভালোভাবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

(এস/এসপি/আগস্ট ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test