E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সার সংকট নেই, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

২০২২ সেপ্টেম্বর ১৮ ১৫:৫৬:০৮
সার সংকট নেই, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : চলতি আমন মৌসুমে আর মাত্র ১ সপ্তাহ ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি ও টিএসপি সারের চাহিদা আছে কৃষকের কাছে। কেন্দুয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিসিআইসি সার ডিলার ২০ জন, বিএডিসি ২২ জন এবং খুচরা সার বিক্রেতা ১২৬ জন রয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায় এসব ডিলারদের কাছে যে পরিমান সার মজুদ রয়েছে এতে ইউরিয়া সহ আর কোন সারের সংকট নেই। ২০ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তবে অভিযোগ ওঠেছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এক বস্তা ইউরিয়া সার ১হাজার ২৫০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৩০০ এবং ১ হাজার ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস.এম শাহজাহান কবির জানান, উপজেলায় ২০ জন বিসিআইসি সার ডিলার, ২২ জন বিএডিসি এবং ১২৬ জন খুচরা সার বিক্রেতার কাছে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৩শ মেট্রিকটন ইউরিয়া ৬৮ মেট্রিকটন ডিএপি, ৬৩ মেট্রিকটন এমওপি ও ৩৬ মেট্রিকটন টিএসপি সার মজুদ রয়েছে।

তিনি বলেন, যে পরিমান সার মজুদ রয়েছে এতে সারের আর কোন সংকট নেই। সরকার নির্ধারিত মূল্যে এক বস্তা ইউরিয়া সার ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা ১হাজার ২৫০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৩০০ এবং ১ হাজার ৩২০ টাকায় বিক্রি করছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চড়া দামে সার বিক্রি হচ্ছে, এরকম কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। কৃষকদের যাথে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হতে হয় সেজন্যে গত সপ্তাহে স্থানীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের উপস্থিতিতে এবং গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালালের সভাপতিত্বে সকল ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের আমি সহ ৩৯ জন কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে সার সংকট ও বিক্রির বিষয় পর্যবেক্ষন করছেন। এতে কোথাও কোন সার সংকট ও চড়া দামে বিক্রির বিষয় জানা যায়নি। গতকাল শনিবার আশুজিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর ও বীরগঞ্জ বাজারে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, খুচরা সার বিক্রেতারা এক বস্তা ইউরিয়া সার ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। দূর্গাপুর গ্রামের আছির উদ্দিন মেম্বারের ছেলে রিপন মিয়া জানান, ১ সপ্তাহ আগে কৃষ্ণরামপুর বাজারে খুচরা সার বিক্রেতা বাবুল মিয়ার দোকানে যান। সেখানে ১ বস্তা সার ১ হাজার ৩০০ টাকা দাম চাইলে তিনি ওই বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা আবুলের দোকানে যান, সেখানেও ১ বস্তা সার ১ হাজার ৩০০ টাকা চাইলে তিনি ওই দাম দিয়েই ১ বস্তা সার কিনেন।

কৃষ্ণরামপুর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে নয়নন মিয়া, গোবিন্দপুর গ্রামের আবীর হোসেনের ছেলে আব্দুল হাই জানান, ১ বস্তা ইউরিয়া সার ১ হাজার ৩০০ টাকাই বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে খুচরা সার বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, আমি কিছু সার এনেছিলাম, তবে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করিনি। নির্বাচনের জের হিসেবে আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। বীরগঞ্জ বাজারের খুচরা সার ব্যবসায়ী জাকির হোসেন নয়ন বলেন, ইউরিয়া সহ ডিএপি সারের সংকট রয়েছে, তবে আমি অতিরিক্ত দাম দিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রয় করেছি। বিক্রিও করছি ১ বস্তা ১ হাজার ২৫০ বা ১৩০০ টাকায়। আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে সার সংগ্রহ না করলে কৃষকদের সারের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হতো। তাছাড়া অনেক সময় আমরা বাকিতেও সার বিক্রি করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি কাবেরী জালালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতাদের নিয়ে শনিবার বিকেলে সভা করেছি। পর্যাপ্ত পরিমান সার মজুদ আছে, চড়া দামে বিক্রির কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। তবে গত সপ্তাহে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে মাসকা ইউনিয়নের ২ জন অবৈধ খুচরা সার ব্যবসায়ীকে ৪ হাজার এবং গড়াডোবা ইউনিয়নে ১ জন খুচরা সার ব্যবসায়ীর দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, চড়া দামে সার বিক্রির লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test