E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরবে গরীবের ডাক্তার নলিনী রঞ্জন দাসের স্মরণ সভা 

২০২২ অক্টোবর ২৭ ১৬:২৪:৩৭
ভৈরবে গরীবের ডাক্তার নলিনী রঞ্জন দাসের স্মরণ সভা 

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে গরীবের ডাক্তার বলে পরিচিত প্রয়াত নলিনী রঞ্জন দাসের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তার প্রতিষ্ঠিত উপজেলার শিমুলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় ওই স্মরণসভার আয়োজন করে।

গত ৩ এপ্রিল মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, “গরীবের ডাক্তার” খ্যাত নলিনী রঞ্জন দাস বার্ধক্যজনিত নানারোগে ভোগে ইহধাম ত্যাগ করেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আফিকুল ইসলাম হারিছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি বিশিষ্ট লেখক-কলামিস্ট মো. শফিকুল ইসলাম, প্রয়াতের ছোটভাই, সম্প্রচার বিশেষজ্ঞ মনো রঞ্জন দাস, বিএনপি নেতা ডাক্তার আব্দুল ওয়াহাব, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম।

বক্তারা এ সময় বলেন, প্রয়াত ডা. নলিনী রঞ্জন দাস বহুগুণের অধিকারী ছিলেন। “সাদা মনের মানুষ” বলতে যা বুঝায়, তিনি ছিলেন তেমন। তিনি ধর্ম-বর্ণ-গোত্রে নিজেকে আবদ্ধ করে না রেখে তিনি ছিলেন একজন “মানুষ”। সমস্ত মানবিক গুণে তিনি ছিলেন গুণান্বিত। যা বর্তমান কালের জন্য খুবই বিরল।

বক্তারা আরও বলেন, তিনি তার ডাক্তারি পেশার শুরু থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিনে পয়সায় রোগী দেখেছেন। ওষুধের মূল্য কেউ দিলে নিয়েছেন, না দিলে কখনোই চেয়ে নেননি। ফলে বহুবার ফার্মেসী দিলেও, তার সেই ব্যবসা লাভজনক হয়নি। পূঁজি হারিয়ে তিনি বারংবার দেওলিয়া হয়েছেন। কিন্তু এতে করে কখনও তার কোনো দুঃখবোধ হয়নি। এটিকে বরং তিনি মানব সেবার ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন।

ঐতিহ্যবাহী শিমুলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাদের পরিবার। গ্রামের অনগ্রসরমান জনগোষ্ঠির লোকজনের সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার প্রয়াসে বাবার দেওয়া স্কুলটি তিনি আমৃত্যু দেখ-ভাল করেছেন। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন বহু বছর। তার রোজগারের অধিকাংশ টাকা তিনি অকাতরে বিলিয়েছেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে ভৈরবে হানাদার ও রাজাকার প্রতিরোধ কমিটি গঠনের প্রথম সভাটি হয় তার বাড়িতে। সেই কারণে পাকবাহিনী তার বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। রাজাকাররা হামলা চালায় সেখানে। কিন্তু তাকে এইসব হামলা পিছু হঠাতে পারেনি লক্ষ্য থেকে। স্বাধীনতাযুদ্ধের পুরো ৯ মাস তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে গেছেন বিনে পয়সায়।

বক্তারা বলেন, তিনি সমাজ বা রাষ্ট্র থেকে কখনও কিছু পাওয়ার আশা করতেন না। তিনি কেবলি দেওয়ার চেষ্টায়রত ছিলেন। রাগ, ক্রোধ, অহমিকা-তাকে কখনোই স্পর্শ করতো না। ধীর ও অল্পভাষী মানুষ ছিলেন তিনি। পেশার বাইরে অধিকাংশ সময় তিনি ব্যয় করতেন পড়াশোনা করে। তাই তার জানার পরিধি ছিলো বহুমূখি ও প্রগাঢ়।

(এস/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test