E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘একদিন নেত্রকোণা গেলে আইলে ৩ দিন বিছানায় থাকতে হয়’

২০২২ অক্টোবর ৩১ ২৩:৩৪:১৫
‘একদিন নেত্রকোণা গেলে আইলে ৩ দিন বিছানায় থাকতে হয়’

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা কেন্দুয়া : কচ্ছপ গতিতে চলছে নেত্রকোণা কেন্দুয়া সড়কের প্রসস্থ করণের নির্মান কাজ। ২৭ কিলোমিটার সড়ক। জমি অধিগ্রহণসহ এই সড়কের নির্মাণ কাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩শ ৫৩ কোটি টাকা। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে এই কাজ। নির্মানের জন্য পুরাতন সড়কের কাটাকাটি ও কুড়াকুড়ি করতে গিয়ে সড়কে এখন আরো বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক নয় এ যেন একটি মরন ফাঁদ। এই সড়কে সিএনজিতে একদিন নেত্রকোনা গেলে আসলে অসুস্থ হয়ে ৩/৪ দিন বিছানায় পড়ে থাকতে হয়। মানুষের দূর্ভোগ এতটাই বেড়েছে যে, যে কেউ নেত্রকোণা যাওয়ার কথা শুনলেই মনের ভেতরে কান্নাকাটি শুরু হয়।

২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল সড়কের নির্মান কাজ শুরু করা হয়। ভাওয়াল কনস্ট্রাকশান ও মইন উদ্দিন বাশি, তানভির ও মইন উদ্দিন বাশি সহ ওই ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছেমতো ওই সড়কের নির্মান কাজ করছে। নির্মান কাজের মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে তবে ভ‚ক্তভোগী জনসাধারনের দাবি যেভাবেই হোক অতি দ্রুত সড়কের কাজটি সম্পন্ন করা দরকার।

নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায় প্রথম প্যাকেজে ২০ শতাংশের কিছু বেশি, ২য় প্যাকেজে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি ও ৩য় প্যাকেজে ৭০ শতাংশের মতো কাজ করা হয়েছে। প্রতিদিন কেন্দুয়া, মদন ও আটপাড়া উপজেলা সদর থেকে নেত্রকোণা জেলা সদরে শতশত যাত্রী সাধারন সিএনজিতে চলাফেরা করে থাকেন। রাস্তায় ছোটবড় অনেক গর্ত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই যানবাহন উল্টেগিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেত্রকোণার কেন্দুয়া সড়কে প্রয়োজনের তাগিদে শত শত মানুষ ও গনপরিবহনে চলাচল করছে। ৩ উপজেলার কোর্ট কাচারি নেত্রকোণা জেলা সদরে। যেসকল লোক মামলা পরিচালনা করতে ও আদালতে হাজিরা দিতে জেলা সদরে যাচ্ছেন, তাদের কথা হলো এই সড়কে চলাচল করার চেয়ে মরে যাওয়াও ভালো। কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজিজুল ইসলাম উপজেলা সমন্বয় ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেন, সে দিন পরিষদের কাজে নেত্রকোণা সদরে গিয়েছিলাম। জীবনটা শেষ। তিনি বলেন, সিএনজিতে একদিন নেত্রকোণা গেলে আইলে অসুস্থ হয়ে ৩ দিন বিছানায় পড়ে থাকতে হয়। আমি ৩/৪ দিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় ছিলাম। কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটির সংস্কার ও নির্মান কাজ দ্রæতগতিতে শেষ করার জন্য জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় কয়েকবার দাবি তুলেছি। কিন্তু কাজ আগেও যেভাবে করছে এখনও সেইভাবেই করছে। ধীরগতির কাজের কারণে সড়কটি মেরামত না করায় বর্ষাকালে গর্তগুলোতে পানি জমে যে কাদার সৃষ্টি হয়েছিল, শুকনো মৌসুমে তা ধুলোয় পরিনত হয়েছে। নেত্রকোণা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি কেন্দুয়া উপজেলার আরামবাগ মহল্লার বাসিন্দা এডভোকেট আ.ক.ম বজলুর রহমান তুলিপ সড়কটির করুন চিত্র তুলে ধরে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কয়েকবার লেখালেখি করেছেন। কিন্তু দ্রুত গতিতে কাজ সম্পন্ন করার কোন তাগিদেই যেন নেই। তিনি বলেন, জনগণের এত দুঃখ কষ্ট যদি কেউ না দেখেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তৃপক্ষ সড়কটির সংস্কার ও নির্মান কাজের সঠিক তদারকি না করেন তাহলে জনগণ যাবে কোথায়। তিনি নেত্রকোণা কেন্দুয়া সড়কটি দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করার জন্য বিনীত আহবান জানান।

সড়ক নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরিফ খান সোমবার সমকালকে বলেন, মানসম্পন্ন সামগ্রী ব্যবহার করে দ্রæতগতিতে সম্পন্ন করার জন্য কাজ চলমান আছে। আগামী জুন মাসে এই সড়কের কাজের ভালো অগ্রগতির ফলাফল আশা করতে পারি।

(এসবিএস/এএস/অক্টোবর ৩১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test