E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রানাপ্লাজা ট্যাজেডির একবছর পর সন্ধান মিলল নিখোঁজ সাবিনার!

২০১৪ এপ্রিল ২৮ ১৭:২৩:২৪
রানাপ্লাজা ট্যাজেডির একবছর পর সন্ধান মিলল নিখোঁজ সাবিনার!

স্টাফ রিপোর্টার : গত বছর ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়ে রানাপ্লাজা। হতাহত হয় হাজার হাজার মানুষ। সেই সাথে নিখোঁজও হন অনেক মানুষ। এদের একজন ছিলেন গার্মেন্টসকর্মী সাবিনা। অবশেষে তার সন্ধান মিলল ধসের একবছর দুইদিন পর।

যশোরের চৌগাছা উপ-জেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গুয়াতলী গ্রামের কৃষক মঈনউদ্দীন ও গৃহিণী সালেহার ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ের মধ্যে সাবিনা (২৩) ৬ষ্ঠ। মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর থেকেই সাবিনা নিখোঁজ ছিলেন। ছিলেন সংজ্ঞাহীন এবং নির্বাক। মাত্র পক্ষকাল আগে তার জ্ঞান ফেরে। প্রায় ৬ মাস আগে ডিএনএ পরীক্ষায় তার পরিচয় সনাক্ত হয়। কিন্তু চিকিত্সার স্বার্থে এতোদিন তার পরিবার-পরিজনকে বিষয়টি জানানো হয়নি বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর অনেকের সাথে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় সাভার ক্যান্টনমেন্টের একটি দল। ৪৫০ জন সদস্যের দলটিতে নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল মারুফ হাসান। দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর ৩য় তলার একটি বাথরুমে অচেতন অবস্থায় পরিচয়হীন সাবিনাকে পাওয়া যায়। ফেটে যাওয়া মাথা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেতলানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। সাভার সিএমএইচে নেয়ার পর চিকিত্সকরা বুঝতে পারেন মেয়েটি জীবিত আছে। ১৫ দিন সাভার সিএমএইচে রাখার পর তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ১৩ দিন পর সেখান থেকে পাঠানো হয় পঙ্গু হাসপাতালে। দু'মাস হলো পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় মিরপুরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। এখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর দেখা গেছে তার বাম কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। মাথাও ক্ষতিগ্রস্ত। এ সময় কিডনি পরিবর্তনের জন্য 'ডোনার' আহ্বান করে পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়। আমেরিকা প্রবাসী এক বাঙালি এবং শেরপুরের এক ব্যক্তি কিডনিদাতা হবার আগ্রহ ব্যক্ত করে সিএমএইচে যোগাযোগ করেন। এ প্রেক্ষিতে গত রোববার বেলা ১২টার দিকে তাকে সিএমএইচ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতরাতেই সেখানে তার কিডনি প্রতিস্থাপন এবং ব্রেনের সিটিস্ক্যান করার কথা।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, রানা প্লাজা ধসের পর গ্রাম থেকে সাভারে ছুটে যান সাবিনার স্বজনেরা। তারা সাভার থেকে ঢাকার প্রতিটি প্রান্তে খুঁজে ফেরেন সাবিনাকে। কিন্তু কোনো সন্ধান না পেয়ে ফিরে আসেন গ্রামে। দ্বিতীয় দফায় আবারও সাভার আর ঢাকায় ছোটাছুটি করে রণে ভঙ্গ দেন। তবে ডিএনএ পরীক্ষার কথা জেনে রেখে আসেন রক্তের নমুনা। দুর্ঘটনার ৫-৬ মাস পর ডিএনএ পরীক্ষায় সাবিনার পরিচয় সনাক্ত হয়। কিন্তু চিকিত্সার স্বার্থে পরিবারের কাছে বিষয়টি গোপন রেখে চেষ্টা চালানো হয় সাবিনাকে সুস্থ করে তোলার। প্রায় একবছর ধরে সংজ্ঞাহীন সাবিনার জ্ঞান ফিরে আসে ১৫ দিন আগে। আধো আধোভাবে সাবিনা নিজেও তার পরিচয় নিশ্চিত করেন। এ সময় সিএমএইচ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানানো হলে সেখান থেকে সাবিনাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের পরামর্শ দেয়া হয়।

সিএমএইচ থেকে গত শনিবার রাতে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে টেলিফোনে সাবিনার পরিবারের সন্ধান করতে বলা হয়। রোববার সকালে পুলিশ চৌগাছা থানায় সাবিনার বাবা-চাচাকে নিয়ে এসে ঢাকায় যোগাযোগ করিয়ে দেয়।

(ওএস/এটি/এপ্রিল ২৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test