E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৃত বাবার বিক্রি করা জমি ফেরত নিতে ছেলেদের পাঁয়তারা, এলাকায় তোলপার

২০২২ ডিসেম্বর ০৭ ১৭:৩২:৪৩
মৃত বাবার বিক্রি করা জমি ফেরত নিতে ছেলেদের পাঁয়তারা, এলাকায় তোলপার

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : মৃত বাবার বিক্রি করা জমি প্রায় ২৯ বছর ধরে ক্রেতাদের দখলে থাকলেও ওই জমি বিক্রি নয় বলে দাবী করে ফেরত নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন ছেলেরা। এ ঘটনায় এলাকার সকল মহলে তোলপার শুরু হয়েছে। অভিযোগ হয়েছে থানা পুলিশের নিকটও। এ ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের বাশাটি গ্রামে। 

বাশাটি মৌজাস্থিত ৫২৩ ও ৫২৪ খতিয়ানের ১ একর ৪ শতাংশ জমির বিআরএস মূলে মালিক মগরাইল গ্রামের গিয়াস উদ্দিন। ১৯৯৩ সালে বাশাটি গ্রামের আব্বাস আলী ভূঞা ও কায়কোবাদ ভূঞা ১২ হাজার টাকা শতাংশ দরে গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে খরিদ করেন। জমি বিক্রির সময় গিয়াস উদ্দিন সাক্ষীদেরকে নিয়ে ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা বুঝে নেন। একই সাথে তিনি বিক্রিত জমির দখল ক্রেতাদের কাছে বুঝিয়ে দেন।

মঙ্গলবার সরেজমিন গেলে বাশাটি গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস এ.এস.এম মোহাম্মদ আলী ভূঞা, আবুল কাশেম, মোঃ শওকত আলী, শহিদুল্লাহ কায়সার, মোঃ আব্দুস সোবহান, জসিম উদ্দিন, জুয়েল জানান, বিক্রিত জমি কায়কোবাদ ও আব্বাস আলীর দখলে ২৯ বছর ধরে। তারা সঠিক মূল্য দিয়ে গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে কিনেছেন। কিন্তু বর্তমানে গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও পলাশ মিয়া ওই জমি তার বাবার বিক্রি করা নয়, বন্ধক দেয়া ছিল বলে দাবী করে অন্যত্র চড়ামূল্যে বিক্রির পায়তারা চালাচ্ছেন। এমনকি জমিটি দখলে নেয়ার জন্য খুন জখমেরও হুমকি প্রদান করছেন। এ ঘটনায় মৃত কায়কোবাদ ভূঞার ছেলে আনোয়ার হোসেন কেন্দুয়া থানায় গত ২ ডিসেম্বর নাজিম উদ্দিন ও পলাশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মৃত বাবার বিক্রি করা জমিটি ফেরত নেয়ার পায়তার চালানোর বিষয়ে এলাকার সর্বমহলে নিন্দার ঝড় বইছে।

আব্দুল কুদ্দুছ জানান, দুনিয়ার টাকা পয়সা দালান কোটা ঘর বাড়ি কেউই কবরে নিয়ে যেতে পারবেন না। আমরা শুনেছি গিয়াস উদ্দিন ১৯৯৩ সালে কায়কোবাদ ও আব্বাস আলী মাষ্টারের নিকট জমি বিক্রি করে টাকা নেয়ার পর দখল বুঝিয়ে দেন। এখন মৃত বাবার বিক্রি করা জমি ফেরত নেয়ার পায়তারার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তিনি এ ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে সমাধানের দাবী জানান।

কায়কোবাদ ভূঞার ছেলে আনোয়ার হোসেন ভূঞা কলেন, আমার বাপ চাচার নিকট জমি বিক্রি করেছিলেন বলেই, গিয়াস উদ্দিন জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। গিয়াস উদ্দিনের ছেলেরাও গ্রাম্য শালিসীতে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার অঙ্গীকার করেও অদৃশ্য কারনে সে অঙ্গীকার থেকে সরে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বাবা গিয়াস উদ্দিন এই জমি বিক্রি করেননি। তিনি বন্ধক রেখেছিলেন। তাই এই জমি এখন আমরা আমাদের দখলে এনে বিক্রি করার চেষ্ঠা করছি।

গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খান সোহাগ বলেন, বাশাটি ও মগরাইল গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিরা বলছেন, ওই জমিটি গিয়াস উদ্দিন, কায়কোবাদ ভূঞা ও আব্বাস আলী ভূঞার নিকট বিক্রি করে গেছেন। এখন গিয়াস উদ্দিনের ছেলেরা তা অস্বিকার করে অন্যত্র চড়াদামে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। তিনিও এই ঘটনাটির সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে সমাধানের আহবান জানান।

(এসবি/এসপি/ডিসেম্বর ০৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test