E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নোয়াখালীর তিন ইউনিয়নে নির্বাচন

প্রচার প্রচারণা শেষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি  

২০২২ ডিসেম্বর ২৭ ১৮:৫০:১৮
প্রচার প্রচারণা শেষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি  

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী সদর উপজেলার ৬ নং নোয়াখালী, ৭নং ধর্মপুর ও ৩নং নোয়ান্নই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এই তিন ইউনিয়নে আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে তিন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীদের প্রচারণায় উৎসব দেখা গেছে। শেষ দিনে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে ভিন্নমাত্রার প্রচার কৌশল অবলম্বন করেন।

২০২২ সালে জেলায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে ব্যালট এবং ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়। ওই নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে শেষ করায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। জেলায় চলতি বছরের সর্বশেষ নির্বাচন হচ্ছে এই তিন ইউনিয়নে। ভোটারদের দাবি তিনটি ইউনিয়নে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার তাঁদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখবেন।

ভোটারদের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ চায় নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থীরাও। একাধিক প্রার্থীর অভিযোগ, ইভিএমে ভোটগ্রহণ হলেও কিছু দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারী প্রার্থী ও তাদের লোকজন ভোটারদের ফিঙ্গার গ্রহণের পর নিজেদের প্রতীকে জোরপূর্বক টিপ দিয়ে ভোট নিশ্চিত করে নেয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে বেশিরভাগ প্রার্থী সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

নোয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট আতাউর রহমান নাছের। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে র্নিঘুম প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থী এবং তাঁর কর্মী সমর্থকরা। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও বিগত পাঁচ বছরের সুশাসনের কারণে এবারও বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত বলে আশাবাদী এডভোকেট আতাউর রহমান নাছের। অপর দিকে সুষ্ঠু ভোটের দাবি তোলেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, ইয়াসিন আরাফাত ও জসি।

ধর্মপুরে প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল ও মঞ্জুরুল হাসান মঞ্জু সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী নোয়ান্নই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী দিলদার হোসেন জুনায়েদ। তিনি জানান, এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি জনগনের নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করেছেন তিনি। জনগন তাদের কাঙ্খিত সেবক হিসেবে এবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদী জুনায়েদ। তবে তাঁর প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী আশ্রাফুল করিম বাবু বলেন, নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে নৌকার প্রার্থী তাঁর লোকজন দিয়ে মোটরসাইকেলের অফিস ভাঙচুর করিয়েছেন। আমি বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকিউল ইসলাম দুলাল জানান, মানুষ তাঁকে ভোট দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। কিন্তু নৌকার প্রার্থী ভোটারদের হুমকি-ধুমকি দিয়ে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত এই প্রার্থী।

নোয়াখালী ৭ নং ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুর হাসান বলেন, গত নির্বাচনেও ভোটাররগণ দিতে পারিনি, ব্যালট টেনে নিয়ে আমাদের ভোট অন্যরা দিয়েছে। এবারও নানা হুমকি-ধুমকি দেওয়া হচ্ছে। এবার ইভিএমে ভোট, ভোট সুষ্ঠু হলে কেন্দ্রে যাব, সুষ্ঠু না হলে কেন্দ্রেও যাব না। কেন্দ্রে না গেলে এবার তো সিল মারতে পারবে না।

বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভোটাররা বলেন, আমরা চায় যোগ্য প্রার্থী আমাদের প্রতিনিধি হোক। তাই ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। পরিবেশ ভালো না হলে আর কখনো ভোট কেন্দ্রে যাব না।

সুশীলসমাজের একাধিক ব্যক্তি বলেন, এটি ইউনিয়ন নির্বাচন হলেও এই নির্বাচন সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এখানে কোন অনিয়ম হলে, তা আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। তাই একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া জরুরি।

তিনটি ইউনিয়নের ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, জেলা নির্বাচন অফিসার মেজবাহ উদ্দিন ও সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার জুলকার নাইম। তাঁরা বলেন, তিন ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৮৫ হাজার। মোট প্রার্থী ১৯০ জন। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৬০জন এবং পুরুষ সদস্য ৯৫ জন।

এদিকে নোয়াখালী, ধর্মপুর ও নোয়ান্নই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, তিনটি ইউনিয়নে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপার দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না। কোন অনিয়ম করার চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test