E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাত্র দুই দিনে পেনশন নিষ্পত্তিতে আব্দুল খালেকের উদ্ভাবন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত

২০২২ ডিসেম্বর ২৯ ২৩:১৬:৪৪
মাত্র দুই দিনে পেনশন নিষ্পত্তিতে আব্দুল খালেকের উদ্ভাবন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : নীলফামারী জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারের কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চাকরী থেকে অবসরে গিয়ে মাত্র দুই কর্ম দিবসে পেনশনের কাগজপত্র হাতে পেয়ে যাচ্ছেন। পেনশন প্রক্রিয়ার এই সহজীকরণ উদ্ভাবন করে চারদিকে হইচই ফেলে দিয়েছেন ইনোভেশন সার্কেলের শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার আব্দুল খালেক।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের প্রকাশনায় ইনোভেশন পরিক্রমা ডিসেম্বর - ২০১৬ তে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে আব্দুল খালেক লিখেছেন, পেনশনারদের হয়রানি বন্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তার ওপর চিন্তা ভাবনা করতে থাকি। এই প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে পেনশনারদের জন্য বসার জন্য সোফার ব্যবস্থা করেন। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় কর্তৃক পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক বিভাগের প্রধান প্রধান সমস্যা গুলো চিহ্নিত করা হয়। পেনশন কেইস নিষ্পত্তি প্রস্তাব করা হলে সে প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রথম কর্মদিবসে পেনশন কেইস প্রাপ্তি ও ডায়েরিভুক্তি, দ্বিতীয় কর্মদিবসে অডিটর কর্তৃক পেনশনারদের মোবাইল কিংবা এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া এবং তৃতীয় কর্মদিবসে অডিটর কর্তৃক যাচাই ও কর্মকর্তাদের টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। চতুর্থ ও পঞ্চম কর্মদিবসে কর্মকর্তা যাচাই ও নিষ্পত্তির প্রস্তাব গৃহীত হয়। উক্ত নিবন্ধে আব্দুল খালেক আরও উল্লেখ করেছেন, সারাদেশ এই প্রক্রিয়া চালু করলে পেনশনারদের ভোগান্তি কমে যাবে।

এই প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে সারা ফেলে দিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নীলফামারীর ডোমারে এই প্রক্রিয়ার চালু করেছিলেন। ধীরে ধীরে এটি ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সব উপজেলায়।
প্রধানমন্ত্রীর এটুআই প্রজেক্টের আওতায় ২০১৪ সালের ৮ জুলাই চার দিনব্যাপী অ্যাসোড অনুষ্ঠিত হয়। ছয়টি দফতরের মোট ৩৬ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে ছয়টি বিভাগের প্রধান সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে নাগরিক সমস্যার নিত্য নতুন উদ্ভাবন বের করা হয়। সেখানে সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পেনশন পেতে ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনায় এনে তা দ্রুত সমাধানের পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন নীলফামারী জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার আব্দুল খালেক।
পেনশন কেইস নিষ্পত্তির এই প্রক্রিয়ার উদ্ভাবক নীলফামারী জেলার ডোমারে কর্মরত থাকাকালীন ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮০টি ফাইলের পেনশন নিষ্পত্তি করেছেন। প্রতিটি ফাইল নিষ্পত্তি করতে সময় লাগে মাত্র দুই কর্মদিবস। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দুই কর্মদিবসে পেনশন পাওয়ার প্রক্রিয়ার উদ্ভাবক আব্দুল খালেক ইতিমধ্যে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থানের সন্মাননা পেয়েছেন।

এ বিষয়ে আব্দুল খালেকউত্তরাধিকার ৭১ নিউজকেজানান, প্রথম ইএলপিসি (প্রত্যাশিত শেষ বেতনপত্র) ইস্যুর পূর্বেই একজন সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারির যাবতীয় তথ্য যাচাই করে ইএলপিসির ইস্যু করা হয়। চাকরী জীবনের কোন পাওনা থাকলে এবং ত্রুটিপূর্ণ বেতন নির্ধারণ করা থাকলে সেটাও সংশোধন করে দেওয়া হচ্ছে। কোন অবস্থাতেই যেন সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারি হয়রানীর শিকার না হয়, সেটি মাথায় রেখে সেবা প্রদান করা হয়।

প্রতি বছর সরকারী চাকরী থেকে যারা অবসর গ্রহণ করেন, তাদের পেনশন পেতে যাতে কোন ঝামেলা পোহাতে না হয়, সেজন্য পেনশনপ্রাপ্তদের হয়রানী বন্ধ করতে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল নীলফামারী কার্যালয়ে যোগদান করে আব্দুল খালেক এখন পর্যন্ত ৬০জন অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবীদের তাদের পেনশন বুঝিয়ে দিয়েছেন। আর এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে মাত্র দুই দিন।

(ওকে/এসপি/ডিসেম্বর ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test