E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তালায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা

২০২৩ জানুয়ারি ২১ ১৯:৫৩:২৩
তালায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ফুসলিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রেখে অন্তঃস্বত্বা করার পর তাকে অস্বীকার করায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে। শনিবার ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে সাতক্ষীরার তালা থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

এর আগে ওই ছাত্রী স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ওই ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাগুরাডাঙা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান কর্মসুচি পালন করে।
অভিক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম শেখ রাসের বাদশা (২৩)। সে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাগুরাডাঙা গ্রামের ইউপি সদস্য শেখ মঈনুল ইসলামের ছেলে ও মাগুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের একটি গ্রামের ও স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৫) জানান, তাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মাগুরাডাঙা গ্রামের ও মাগুরা ইউপির ৬নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ মঈনুল ইসলামের ছেলে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র শেখ রাসেল বাদশা ১০ মাস আগে স্কুলে যাওয়া আসার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। একপর্যায়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস আগে রাসেল তাকে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙা ইউনিয়নের রাজবাড়ি গ্রামের তাসলিমা নামের এক সৌদিরফরৎ মহিলার বাড়িতে নিয়ে যায় । সেখানে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপরও কয়েকবার বাদশা তাকে ওই বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে।

সর্বোপরি গত বছরের ২০ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাদশা তাকে স্কুলে ঢোকার আগেই রাস্তা থেকে মটর সাইকেলে তুলে নিয়ে রাজবাড়ির ওই তাসলিমার বাড়িতে নিয়ে যেয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরবর্তীতে সে স্থানীয় চিকিৎসক ডাঃ ফারুক হোসেনের সহায়তার জালালপুর পরিবার পরিবল্পনা কেন্দ্রে যেয়ে রক্ত ও আল্ট্রসনোগ্রাফির মাধ্যমে জানতে পারে যে সে দুই মাসের অন্তঃস্বত্বা। এরপর থেকে ফিরে এসে বাদশাকে সে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেেত থাকে। বাদশা তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপসৃষ্টি করে। এমনকি এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেয়ে গর্ভপাতের ঔষুধ খাওয়ায়। একপর্যায়ে সে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে শুক্রবার বিকেলে বাদশা এর বাড়িতে যেয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে তাকে মারপিট করেন বাদশা ও তার বাবা মঈনুল। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শেখ রাসেল বাদশার কাছে জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বাবা মাগুরা ইউপি’র ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ও ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মঈনুল ইসলাম ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার না করেই বলেন, কি আর করার আছে বলেন, বাবা হলে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়।

মাগুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক মুকুল দাস বলেন, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে বিষয়টি জানার পর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিলন রায়কে অবহিত করেছেন। অবিলম্বে শেখ রাসেল বাদশার বিরুদ্ধে সাংগঠণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে ওই স্কুল ছাত্রী যে অন্তঃস্বত্বা তার নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ হাফিজা খাতুন।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চৌধুরী রেজাউল করিম জানান, ওই ছাত্রীকে স্কুলের সামনে থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে তার মা বাদি হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৯(১) ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার বিকেলে ওই মেয়েটিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ হাফিজা খাতুন ডাক্তারি পরীক্ষা করেছেন। পরে তাকে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম-২য় আদালতের বিচারক মোঃ সালাহউদ্দিনের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। বাদশাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(আরকে/এএস/জানুয়ারি ২১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test