E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গলাচিপায় আগুনে দগ্ধ শিশুটি হাসপাতালে কাতরাচ্ছে

২০২৩ জানুয়ারি ২৯ ১৮:০৫:৩৩
গলাচিপায় আগুনে দগ্ধ শিশুটি হাসপাতালে কাতরাচ্ছে

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা : পটুয়াখালীর গলাচিপায় আগুনে দগ্ধ হওয়া শিশুটি হাসপাতালে কাতরানোর খবর পাওয়া গেছে। রবিবার (২৯ জানুয়ারী) হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় শিশুটি বেডে শুয়ে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। আর চোখে মুখে যন্ত্রনার ছাপ। চার বছরের ফুট ফুটে শিশু নুরুন্নাহার। যে সময়টাতে তার হাসিখুশিতে মেতে থাকার কথা। ঠিক সে সময়ে শিশুটি গলাচিপা হাসপাতালের বেডে মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তার শরীরের পনের ভাগ আগুনে পুড়ে গেছে। হতদরিদ্র বাবা নূরুল ইসলামের পক্ষেও শিশুটির চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। যদিও গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল খবর পেয়েই শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে গেছেন। তিনি শিশুটির চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন পরিবারটিকে। তারপরও কাটছে না অনিশ্চয়তা। শিশুটির অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ জানুয়ারি শুক্রবার। কিন্তু ঘটনাটি জানাজানি হয়েছে শিশুটির দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে।

পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার দিন কোস্টগার্ড সদস্যরা জাটকা ইলিশ ধরার অবৈধ জাল উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বন্দর সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাছে নিয়ে আসে। নদীর তীরে কোস্টগার্ড সদস্যরা অভিযানে উদ্ধার করা জালগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। কোস্টগার্ডের সদস্যরা জালগুলো ভস্মীভূত হওয়ার আগেই সেখান থেকে চলে যায়। শিশু নুরুন্নাহার ওই সময়ে খেলাচ্ছলে আগুনে ভস্মীভূত হতে থাকা জালের সঙ্গে ভাসা অর্থাৎ প্লাস্টিকের ফ্রুটগুলো আনতে গেলে তার শরীরে আগুন লেগে যায়। প্রতিবেশীরা আগুন নেভানোর আগেই শিশুটি মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ হয়। শিশুটির বাবা নূরুল ইসলাম সেদিনই নুরুন্নাহারকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অর্থাভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে গেলে শিশুটির অবস্থার অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের সহায়তায় আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিশুটির বাবা দরিদ্র নূরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ঘটনার পর কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফোনে নূরুন্নাহার চুলার আগুনে পুড়ে গেছে বলে সবাইকে জানাতে বলে। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কেউ কথা বলেননি।

এ বিষয়ে গলাচিপা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুহা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, শিশু নুরুন্নাহারের শরীরের নিম্নাংশের প্রায় ১৫ ভাগ পুড়ে গেছে। বাড়ি চলে যাওয়ায় সঠিক পরিচর্যার অভাবে পোড়া অংশে ঘা বেড়ে গেছে। আপাতত শিশুটিকে আমরা নিবির পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

এ প্রসঙ্গে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের চিফ পেটি অফিসার মোনায়েম হোসেন বলেন, অগ্নিদগ্ধ শিশু নুরুন্নাহারের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, মৎস্য অভিযান একটি সমন্বিত কাজ। ঘটনাটি আমাদের আগে জানা ছিল না। জানার সঙ্গে সঙ্গে শিশু নুরুন্নাহারকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজম্ববর নিয়েছি। ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসডি/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test