E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ

২০১৪ এপ্রিল ২৯ ১২:১৭:৫৭
ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ

নিউজ ডেস্ক : ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ। ১৯৯১ সালের এ দিনে প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত এবং এক কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়। নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূণিঝড়গুলোর মধ্যে ’৯১-এর এই ঘূর্ণিঝড় একটি।

’৯১-এর এই ভয়াল ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীকে। ঘটনার এত বছর পরও স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না সেই দুঃসহ সময়গুলো। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যায় জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে হলে। নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিত্কার আর বিলাপ ফিরে ফিরে আসে তাদের জীরনে।

প্রতি বছরের মতো বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ স্মরণ করবে এই দিনটিকে। স্বজন হারানোর বিলাপে মুখরিত হবে আকাশ বাতাশ। সেদিনের ঘটনার পর যারা বেঁচে আছেন, আত্মার শান্তি কামনা করবেন হারিয়ে যাওয়াদের। তবে অনেক পরিবারের সব সদস্যই সেই ভয়াল রাতে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ হারিয়েছেন অনেক সদস্যকে।

পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬ মিটার (২০ ফুট ) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত করে এবং এর ফলে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়। এদের বেশিরভাগই নিহত হয় চট্টগ্রাম জেলার উপকূল ও দ্বীপগুলোতে। সন্দ্বীপ, মহেশখালী, হাতীয়া দ্বীপে নিহতের সংখ্যা সর্বাধিক। এর মধ্যে শুধু সন্দ্বীপে মারা যায় ২৩ হাজার লোক।

ধারণা করা হয়, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ১ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের (১৯৯১ সালের মার্কিন ডলার) ক্ষতি হয়। সাগর ও নদীর উপকূল প্লাবিত হয়। কর্ণফুলী নদীর তীরে কংক্রিটের বাঁধ থাকলেও এটি জলোচ্ছ্বাসে ধ্বংস হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১০০ টন ওজনের একটি ক্রেন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে স্থানচ্যুত হয় এবং আঘাতের কারণে টুকরো টুকরো অংশে বিভক্ত হয়। বন্দরে নোঙর করা বিভিন্ন ছোট বড় জাহাজ, লঞ্চ ও অন্যান্য জলযান নিখোঁজ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অনেক যানও ছিল। এছাড়াও প্রায় ১০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ সম্পর্কে সেই সময় বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ১৯৯১-এর ২২ এপ্রিল বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। বাতাসে গতিবেগের ও নিম্নচাপের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি ২৪ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর শক্তি আরও বাড়তে থাকে। ২৮ ও ২৯ এপ্রিল এটির তীব্রতা প্রচণ্ড বৃদ্ধি পায় এবং গতিবেগ ১৬০ মাইল/ঘণ্টায় পৌঁছায় যা একটি ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য।

প্রতি বছরের মতো বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ স্মরণ করবে এই দিনটিকে। স্বজন হারানোর বিলাপে মুখরিত হবে আকাশ বাতাশ। সেদিনের ঘটনার পর যারা বেঁচে আছেন, আত্মার শান্তি কামনা করবেন হারিয়ে যাওয়াদের। তবে অনেক পরিবার আছে সব সদস্যই সেই ভয়াল রাতে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ হারিয়েছেন অনেক সদস্যকে।

২৯ এপ্রিল রাতে এটি চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ১৫৫ মাইল/ঘণ্টা বেগে আঘাত করে যা ক্যাটাগরি-৪ ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য। স্থলভাগে আক্রমণের পর এর গতিবেগ ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং ৩০ এপ্রিল এটি বিলুপ্ত হয়।
(ওএস/এটি/এপ্রিল ২৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test