E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বামনায় ইটভাটার কাজে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ

২০২৩ মার্চ ০১ ১৪:৫৯:৫২
বামনায় ইটভাটার কাজে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ

আসাদ সবুজ, বরগুনা : বরগুনার বামনায় ভাটায় ইট তৈরির জন্য বিষখালী নদীর তীর থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নদীর পাড়ের বেড়িবাঁধ। অপরদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে মাটি ক্রয় করে ইট তৈরি করছেন বলে দাবি করছেন ভাটা মালিকরা।

পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যে বামনা উপজেলায় ৯টি ইটভাটা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুম আটটি ভাটায় ইট তৈরির কার্যক্রম চলছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক মাস ধরে বিষখালী নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে এক্সকাভেটর(বেকু) দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। নদীর তীর থেকে মাটি কেটে ভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করছে স্থানীয় একটি চক্র। ইটভাটায় মালপত্র পরিবহনের জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধেরও ক্ষতি করছে তারা।

উপজেলার খোলপটুয়া এলাকায় নাজাত ব্রিকসের অবস্থান। এর পাশেই জেগে উঠেছে বিষখালী নদীর তীর। গত সোমবার গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটায় এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। সাথেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ। ট্রলিতে করে মাটি ভাটায় নেওয়া হচ্ছে এর ফলে নষ্ট হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

ট্রলির চালক আল আমিন বলেন,‘প্রতিদিন দুই হাজার টাকা মজুরিতে নদীর চর থেকে কাটা মাটি ভাটায় নিয়ে যাই। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ গাড়ি মাটি ভাটায় নিয়ে থাকি।'

নাজাত ব্রিকসের মালিক আবুল কালামের ছেলে আল আমিন নাজাদ বলেন, 'এখানে সরকারি কোনো জমি নেই। এটা রেকর্ডীয় জমি। স্থানীয় লোকজন আমাদের কাছে মাটি বিক্রি করেছেন।'

বামনা পূর্ব শফিপুর এলাকায় বন্যা রক্ষাবাধের পাশ থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে এমকেএস ভাটায় ইট তৈরির কাজে। এই মাটি পরিবহনের জন্য ভাটাসংলগ্ন এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি করছে তারা।

ভাটার পরিচালক নেছার বলেন, 'স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে মাটি সংগ্রহ করি। বাঁধের পাশে জায়গা রেখেই মাটি কাটছি। বাঁধ নষ্ট হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে কাজ শেষ হইলে মেরামত করে দেয়া হবে।

শফিপুর এলাকার বাসিন্দা মনির বলেন, বাঁধের পাশ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে বাঁধ হুমকিতে পড়ছে। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে তাঁদের অনেক ক্ষতি হবে।

পাউবোর বরগুনা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসংলগ্ন এলাকার নদীর তীরের মাটি কাটা অবৈধ। সরেজমিনে পরিদর্শন করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে বামনা উপজেলা প্রশাসন বলেছে, বেড়িবাঁধের পাশের মাটিকাটা অপরাধ। তবে খতিয়ে দেখতে হবে সরকারি জমির মাটির কাটছে কি-না, রেকর্ডই জমি হলে তারা মাটি কাটতে পারবে। তবে বেড়িবাঁধের একেবারে পাশ থেকে কাটতে পারবে না।

(এএস/এএস/মার্চ ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test