E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে আবারও নৌকার মনোনয়ন চাইবেন ফয়জুর রহমান বাদল

২০২৩ মার্চ ১৭ ১৭:০৮:১৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে আবারও নৌকার মনোনয়ন চাইবেন ফয়জুর রহমান বাদল

গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী হতে আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে ইচ্ছে পোষণ করেছেন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও এই আসনের সাবেক জনপ্রিয় সংসদ সদস্য, বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই দুইবারের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় তাঁর দৃষ্টিনন্দন বাগানবাড়িতে নবীনগর নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর এ সুপ্ত ইচ্ছের কথা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। এসময় তিনি দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হতে 'জাতির বিবেক' খ্যাত সাংবাদিক সমাজের সুপরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতাও চান। সাবেক সাংসদের আমন্ত্রণে সাংবাদিকেরা তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বাগানবাড়িতে প্রায় তিনঘন্টা সময় কাটান।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী এই আসনের সাবেক এই 'স্পষ্টভাষী' খ্যাত সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল বিগত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত 'এমপি' ছিলেন। এমপি থাকাকালীন তাঁর আমলে নবীনগর উপজেলায় প্রায় ১৩০০ কোটি টাকার যে উন্নয়ন কাজ তিনি করেছেন, সেগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তিনি সাংবাদিকদের সামনে সবিস্তুারে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন,'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিগত সরকারের আমলে, আমি জননেত্রীর স্নেহধন্য হয়ে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলাম। এমপি হ্ওয়ার পর নেত্রীর দিক নির্দেশনা ও আশীর্বাদ পেয়ে যুগের পর যুগ ধরে দারুণভাবে অবহেলিত শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির পাদপীঠ খ্যাত নবীনগর উপজেলার সামগ্রিক চেহারাটা আমি পাল্টে দেয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি।

যারমধ্যে পশ্চাৎপদ নবীনগরবাসির জেলা সদর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাতায়াতের জন্য 'নবীনগর শিবপুর রাধিকা সড়ক, নবীনগর কুড়িঘর গোকর্ণঘাট মহেশ সড়ক ও নবীনগর কৃষ্ণনগর সাদেকপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া'- এই তিনটি সড়ক নির্মাণের জন্য,শত শত কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিলাম। যেই সড়ক তিনটির নির্মাণকাজ এখনও চলমান রয়েছে।

এছাড়া সোয়া চার'শ কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলার উত্তরাঞ্চলবাসির প্রাণের দাবী 'নবীনগর আশুগঞ্জ সড়ক' নির্মাণের জন্যও সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলাম। যার নির্মাণকাজ এখনও চলছে। এছাড়া ৩০ কি.মি. দীর্ঘ 'নবীনগর কোম্পানীগঞ্জ সড়কের প্রশ্স্থকরণসহ উপজেলার অসংখ্য প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট আমার আমলে নির্মিত হয়েছে। পাশাপাশি মেঘনা ও তিতাস নদীর ভাঙ্গণ রোধ ও স্কুল কলেজ মাদ্রাসা মসজিদ মন্দিরের সার্বিক উন্নয়নেও প্রচুর কাজ আমি করেছি।

আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলার অন্যতম আসামি ও বঙ্গবন্ধুর সহচর সার্জেন্ট মুজিবুর রহমানের সন্তান 'স্পষ্টবাদী' খ্যাত এই সাবেক সাংসদ বলেন, 'বিভিন্ন কারণে গত নির্বাচনটি আমি করতে পারিনি। তাই নবীনগরকে নিয়ে আমার সবগুলো পরিকল্পনা এবং আমার হাতে নেয়া যাবতীয় উন্নয়ন কাজগুলো শেষ করে যেতে পারিনি। তবে সামনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবীনগরবাসির ভালোবাসা ও দোয়ায় এবং আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার স্নেহধন্য হিসেবে আবারও নবীনগর আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেলে, আমি আপনাদের (সাংবাদিক) সকলের সহযোগিতায় আমার বিগত দিনের অসমাপ্ত সবগুলো কাজ সবাইকে সাথে নিয়ে সুন্দরভাবে সমাপ্ত করতে চাই। আমি চাই, আগামি দিনে সবার আন্তরিকতাপূর্ণ সহযোগিতা ও সুপরামর্শে নবীনগরকে সত্যিকার অর্থে সারাদেশের মধ্যে একটি অনুকরণীয় উন্নয়নের 'রোল মডেল' হিসেবে গড়ে তুলতে। যা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবেন।

এ সময় তিনি নবীনগরকে নিয়ে তাঁর বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উপস্থিত সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা ও সুপরামর্শ চান।

এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও খোলামেলা জবাব দেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বিগত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমার আমলে নবীনগরের সাধারণ মানুষ দিনে ও রাতে সামগ্রিকভাবে যেরকম সুখে শান্তিতে নিরাপদে নির্ভয়ে বসবাস করেছে, আগামি দিনে তিনি আবারও এমপি নির্বাচিত হলে, নবীনগরবাসি ঠিক আগের মতই অনুরূপভাবে সুখে শান্তিতে, নির্ভয়ে ও নিরাপদে বসবাস করবেন।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি কখনও কোনদিন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি এবং আমৃত্যু কখনও কোন ধরণের অপরাধ ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবো না। অন্যায়কারী কিংবা জুলুমবাজ দলীয় কিংবা ব্যক্তিজীবনে আমার যতই কাছের লোক হোক না কেন, এরা অন্যায় করে আমার কাছে কোনদিনও রেহাই পাবেনা ইনশাল্লাহ। এসময় 'সত্য'টা সাহসের সঙ্গে লিখে অনেক সাংবাদিকই এখন নবীনগরে নানাভাবে মামলা, হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রাণীর শিকার হচ্ছেন, এমন পরিস্থতিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের 'সভাপতি' হিসেবে তাঁর কিছু করণীয় আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদেরকেও তাদের নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সাংবাদিকদের মধ্যে থাকা নানা দ্বন্দ্ব ও বিভেদ ভুলে সবার আগে কলম সৈনিকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কেবল সব মতভেদ ভুলে সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলেই, কেউ সাংবাদিকদেরকে হয়রাণী করতে কখনও সাহস পাবেনা। সুতরাং সাংবাদিকদেরকেই তাদের নিরাপত্তার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এসময় তিনি সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্যের পক্ষে ও সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্তভাবে কলম ধরার জন্য সাংবাদিকদের উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন,'এরপরও যদি নবীনগরে কোন সাংবাদিক অন্যায়ভাবে হয়রাণীর শিকার হোন, আমি আপনাদের পাশে আমার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে পাশে দাঁড়াবো ইনশাল্লাহ।'

উল্লেখ্য, এত বিপুল পরিমান (প্রায় অর্ধশত) স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে ঢাকায় বসে নবীনগরের কোন রাজনৈতিক দলীয় নেতার আমন্ত্রণে এই প্রথমবারের মতো এ ধরণের স্বত:স্ফুর্ত মতবিনিময় কিংবা সৌজন্য সাক্ষাতের ঘটনা ঘটে।

(জিডি/এসপি/মার্চ ১৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test