E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পর্তুগালে দেয়াল চাপা পড়ে নিহত রেমিট্যান্স যোদ্ধা শাহীনের জানাযা সম্পন্ন

২০২৩ এপ্রিল ০২ ১৯:৪৬:৩২
পর্তুগালে দেয়াল চাপা পড়ে নিহত রেমিট্যান্স যোদ্ধা শাহীনের জানাযা সম্পন্ন

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : দু'বছর আগে উন্নত সপ্ন নিয়ে ইউরোপের পর্তুগালে ফাঁড়ি জমান মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নিতেশ্বর গ্রামের রেমিট্যান্স যোদ্ধা শাহীন আহমদ (৪৮)। পরিবার আর স্বজনদের সপ্ন ছিলো শাহীন আয়-রোজগার আর দামী সব জিনিসপত্র নিয়ে ফের দেশে পরিবারের কাছে আসবে। পরিবার জুড়ে আবার জমে উঠবে আনন্দ আর হাসিখুশি। কদিন আগেও শাহীন পরিবারকে জানিয়েছিলেন রেসিডেন্সি কার্ড পাবার কথা। কার্ড পেলে দেশে আসবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তবে ভাগ্য'র নির্মম পরিহাস। আমিরাতের বিশাল বিমানে করে ঠিকই এসেছেন শাহীন। তবে প্রাণহীন নিথর দেহ নিয়ে।

গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার সকালে পর্তুগালের পর্যটন সমৃদ্ধ শহর ভেজায় ভারতীয় মালিকানাধীন একটি কোম্পানির কন্সট্রাকশনে কাজ করা অবস্থায় পুরাতন দেয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর মৃতদেহ রাখা হয় সেখানকার একটি হাসপাতালের মর্গে।

পাশাপাশি বাংলাদেশী কমিউনিটির লোকজনের সহায়তায় লাশ দেশে পাঠাতে নানা আইনি পক্রিয়া সম্পন্ন শেষে মৃত্যুর ১২ দিন পর শরিববার ( ১ এপ্রিল) বিকাল ৫ টা ২০ মিনিটের সময় আমিরাত এয়ারলাইনসের বিমানে করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে শাহীনের মরদেহ। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা পরিবারের লোকজন মরদেহ গ্রহণ করে পরদিন শনিবার ভোর ৫টায় এম্বুলেন্স যোগে আসেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নিতেশ্বর গ্রামে শাহীনের নিজ বাড়িতে। বিরাজ করে শোকাবহ বেদনাদায়ক এক পরিবেশ। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত্যুর ১২ দিন অপেক্ষায় থাকা অবুঝ সন্তান, মা আর স্বজনেরা।

রবিবার ২ এপ্রিল দুপুর দুইটায় সদর উপজেলার মোকামবাজার এলাকার নিতেশ্বর লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে পুর্ব নির্ধারিত জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় শাহীন আহমদের। জানাযার নামাজে পরিবার,সহপাঠী ও স্বজনরাসহ হাজারো শোকার্ত মানুষ উপস্থিত হন। তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশের। জানাযার নামাজ শেষে নিতেশ্বর পঞ্চায়েত কবরস্থানে দাফনকাজ সম্পন্ন হয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা এই রেমিট্যান্স যোদ্ধার।

নিহত শাহীন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের মোকামবাজার এলাকার নিতেশ্বর গ্রামের মৃতঃ আরশদ উল্লার ছেলে। পাঁচ ভাই আর তিন বোনের মধ্যে শাহীন তৃতীয়। শাহীন ২০২১ সালে দেশ থেকে পর্তুগাল যান। এর আগে দীর্ঘ ৮ বছর মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে ছিলেন তিনি। কাতার থেকে ২০২১ সালে দেশে এসে পরবর্তীতে চলে যান পর্তুগাল।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত শাহিনের রাইছা নামে ২ বছর বয়সী ও মিন্নু নামে ৮ বছর বয়সী দুই কন্যা শিশু রয়েছে। ছোট মেয়েকে ৩ মাসের রেখেই পর্তুগাল চলে যান শাহিন।

এদিকে প্রবাসে বাবার নির্মম মৃত্যুর কথা শোনার পর থেকেই রাইছার কান্না থামানো যাচ্ছে না। বাবার জন্য সে বার বার মুর্ছা যাচ্ছে দুই অবুঝ শিশু আর নিহত শাহীনের জন্মদাতা মা। এ ঘটনায় লিসবনসহ গোটা পর্তুগালের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। শোকাবহ পরিবেশ তৈরি হয় শাহীনদের নিজ বাড়িতেও।

এর আগে শনিবার বিকালে নিহত শাহীনের ছোট ভাই সাহেল আহমদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শাহীন আহমেদ ও একই ঘটনায় নিহত সিলেটের সুহেদ মিয়ার জানাযার নামাজ বেজার সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

(একে/এএস/এপ্রিল ০২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test