E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাজবাড়ীতে চারকোল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

২০২৩ এপ্রিল ০৩ ১৮:৪৪:১৯
রাজবাড়ীতে চারকোল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি চারকোল কারখানায় (পাটখড়ির ছাই থেকে কার্বন তৈরির কারখানা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

রবিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের দর্পনারায়ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আগুনের সূত্রপাত হলে আশপাশের বাড়িঘরের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ শুরুর প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

চারকোল কারখানার কর্মী সাব্বির জানান, তিনিসহ ৮ জন কর্মী কারখানার অফিস কক্ষে ইফতার শেষ করে মাগরিবের নামাজ পড়তে বসেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে নামাজ শেষ করে উঠেই দেখেন কারখানায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। সেসময় তারা ফায়ার সার্ভিস অফিসে খবর দেন।

রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান জানান, ৭টা ৪০ মিনিটে তারা আগুন লাগার খবর পান। দু'টি ইউনিট দ্রুত গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। তাদের সঙ্গে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের আরও দুটি ইউনিট যোগ দেয়। চারটি ইউনিট চার ঘণ্টা কাজ করে রাত পৌনে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরণের একটি কারখানায় যে ধরনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার কথা তার কিছুই নেই। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলে আগুন এতটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারত না।

জানা গেছে, কারখানাটিতে পাটখড়ির ছাই থেকে তৈরি করা কার্বন চীনে রফতানি করা হয়, যা দেশিটিতে মোবাইলের ব্যাটারি, প্রসাধনী, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধ, কার্বন পেপার, ফটোকপির কালি, আতশবাজি, ফেসওয়াশ ও প্রসাধন তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আবাসিক এলাকায় শিল্প ও কল-কারখানা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও চারকোল কারখানার মালিক বছরের পর বছর কারখানা পরিচালনা করে যাচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটখড়ি কিনে কারখানায় আনা হয়। এরপর সেগুলো বিশেষ চুল্লিতে লোড করে আগুন জ্বালানো হয়। ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা জ্বালানোর পর চুল্লির মুখ বন্ধ করে দেয়া হয় যাতে কোনোভাবে অক্সিজেন প্রবেশ করতে না পারে। এভাবে চার দিন রাখার পর সেখান থেকে বের করে ক্র্যাশিং করে কার্বন প্যাক করা হয়। চুল্লি জ্বালানোর সময় কারখানা থেকে প্রচুর ধোঁয়া বের হয়। এই ধোঁয়াতেই মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষিত হয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে চারকোল কারখানার মালিক আতিকুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র রয়েছে। তবে সেটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। দ্রুত আমরা মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করব। আর আমাদের কারখানাটি ছোট হওয়ায় তেমন বড় ধরনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। যতটুকু ব্যবস্থা ছিল তাতে এত বড় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এ অগ্নিকাণ্ডে তার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে পরিবেশ অধিদফতরের ফরিদপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. সাঈদ আনোয়ারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

(এমজি/এসপি/এপ্রিল ০৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test