E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ

চসিক কাউন্সিলর ও ৩ প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা

২০২৩ এপ্রিল ১২ ১৫:১৫:১৯
চসিক কাউন্সিলর ও ৩ প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম আকবর শাহ থানার বেলতলী ঘোনায় অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) এক কাউন্সিলর ও তিন প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সংস্থাটির চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে গতকাল আকবর শাহ থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে চসিকের ৯ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে। অন্য আসামিরা হচ্ছেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, সিনিয়র সাব–এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালী আহমেদ, পাহাড় কাটায় জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি–হক ব্রাদার্সের ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী তাকিয়া বেগম এবং মো. ইসমাইল নামে এক শ্রমিক।

আসামিদের মধ্যে চসিকের প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপ–পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক। তিনি বলেন, পাহাড়টি খাড়াভাবে কাটার ফলে যে কোনো সময় ভূমিধস হয়ে জান–মালের ক্ষয়–ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বেলতলী ঘোনায় ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ করছে চসিক। ওই প্রকল্পের আওতায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে। পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, সেখানে খাড়া ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়। কাটা অংশে ইটের রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই অংশে ৭ এপ্রিল পাহাড় ধসে মজিবুর রহমান খোকা নামে এক শ্রমিক মারা যান এবং তিনজন আহত হন।

পরিবেশ অধিদপ্তর মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কোনো টিলা বা পাহাড় কাটা হবে কিনা, কী পরিমাণ টিলা–পাহাড় কাটা হবে এবং পাহাড় কাটলে ভূমিধস রোধে কোনো গাইডওয়াল কিংবা রিটেনশন ওয়াল নির্মাণ করা হবে কিনা এ সম্পর্কে কোনো তথ্য সিটি কর্পোরেশন জানায়নি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদনও নেয়নি। পূর্ব অনুমতি ছাড়া পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫–এর ধারা ৬ (খ) লংঘন করা হয়েছে।

জানা গেছে, পাহাড় ধসের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মতিন ও হাছান আহম্মদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে আনুমানিক ৫০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার সত্যতা পান।

এর আগে ডিসেম্বরে অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স কো–অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি পরিবেশ অধিদপ্তরে দেয়া আরেকটি লিখিত অভিযোগে দাবি করে, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নির্দেশে মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনের যোগসাজসে মোহাম্মদ ইসমাইল এঙকেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটছে। জনৈক সেলিম বাদশা, ফিকুল ইসলাম মিন্টু, মোহাম্মদ মানিক ও মোহাম্মদ সাদ্দাম পাহাড় কাটায় সহযোগিতা করেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য মোবাইলে কল দিলে রিসিভ করেননি সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। মামলার আসামি চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব আজাদীকে বলেন, ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছি। তাছাড়া আমি ওই প্রকল্পের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছি না।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি বেলতলী ঘোনায় জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এতে পাহাড় কাটায় জড়িত একজনকে ৮ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় এবং একটি এঙকেভেটর জব্দ করা হয়। মো. শাহজাহান দণ্ড পাওয়া ওই স্কেভেটর চালকের কাছ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর জানতে পারে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নির্দেশে মো. ইসমাইল এঙকেভেটর লাগিয়ে রাস্তা নির্মাণের উদ্দেশ্যে পাহাড় কাটেন।

(জেজে/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test