E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরগুনায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ 

মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার স্ত্রীকে মারধর

২০২৩ এপ্রিল ১৫ ১৮:৪২:০৬
মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার স্ত্রীকে মারধর

আসাদ সবুজ, বরগুনা : বরগুনায় ৯ম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে জোড় পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা। মামলাটি তুলে নিতে নিতে ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা (মামলার বাদী) কে মারধর করেছে আসামীর আত্মীয় - স্বজনরা। মারধরের ঘটনায় বরগুনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা। ঘটনার বিষয়ে ধর্ষণকারী ও ধর্ষণে সহায়তাকারী দুই যুবকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।

গত ১২ এপ্রিল (বুধবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটে বরগুনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ এর ৯(১)/৩০ ধারায় মামলাটি দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা ইদ্রিস মুন্সি। বরগুনা থানার মামলা নং ১৮/১১৩।

মামলার আসামীরা হলেন সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরকগাছিয়া গ্রামের ওবায়দুল গাজীর ছেলে (ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত) হৃদয় হোসেন ও ওই একই এলাকার আঃ কাদের গাজীর ছেলে (ধর্ষণে সহায়তাকারী) শহিদুল গাজী।

ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা ইদ্রিস মুন্সি বলেন, গত ৯ এপ্রিল নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া আমার মেয়েকে বাসায় রেখে কাজের জন্য সদর উপজেলার চালিতাতলা যাই। ওই দিন অর্থাৎ ৯ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে আমার বসত ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে মামলার ১নং আসামী হৃদয় হোসেন আমার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে শহিদুল গাজীর সহায়তায় আমার বসত ঘরে বসেই ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় শহিদুল গাজী আমার মেয়ের মুখ চেপে ধরে আর হৃদয় হোসেন আমার স্কুল পড়ুয়া নাবালক মেয়েকে ধর্ষণ করে। আমি ও আমার স্ত্রী বাড়িতে আসলে আমার মেয়ে আমার কাছে ঘটনার কথা খুলে বলে। আমি স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে গত ১২ই এপ্রিল রাতে বরগুনা থানায় মামলা দায়ের করি। এই মামলার তুলে নিতে গতকাল ১৪ই এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আসামীদের আত্মীয় স্বজনরা আমার বাড়িতে এসে আমাকে ও আমার স্ত্রী ফাহিমাকে মারধর করে এবং মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।

এ সময় আসামীদের আত্মীয় স্বজনরা আরো বলে যে, আমার ছেলে মিরাজকে যেখানে পাইবে সেখানে বসেই পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করবে, এমনকি মিরাজকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যেকোন সময় আমাদের উপর বড় ধরনের হামলা হতে পারে এবং আমি ও পরিবারের সদস্যদের বড় ক্ষতি হতে পারে। আমি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরগুনা থানায় মারধর ও হুমকি-ধমকির বিষয়ে জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা ইদ্রিস মুন্সি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আমি আমার মেয়ের ধর্ষণের ন্যায় বিচার চাই, আসামীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই। যাতে আর কোন বাবার নাবালক মেয়ের সাথে এমন ঘটনা না ঘটে।

ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর মা ফাহিমা বেগম বলেন, আমার মেয়ের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে, তার ন্যায় বিচার চেয়ে আমরা মামলা করেছি। ন্যায় বিচার চাওয়া কি অপরাধ? এই সমাজে কোন ধর্ষিত মেয়ের পরিবার কি ন্যায় বিচার চাইতে পারে না? ন্যায় বিচার চাইলে মার খেতে হয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই, আপনিও একজন মা, আমিও একজন মা। মা (প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে) আমি আমার মেয়েকে ধর্ষণের বিচার চাই।

ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর বড় ভাই মিরাজ হোসেন বলেন, আমার নাবালক ছোট বোনকে শহিদুল গাজীর সহায়তায় হৃদয় হোসেন ধর্ষণ করেছে। আমরা থানায় মামলা করেছি। গতকাল সকালে আমার বাবা মাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকিসহ মারধর করছে। আমাকেও কুপিয়ে জখম করাসহ মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। তাহলে কি আমরা ন্যায় বিচার পাবো না? আমি আসামীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছি।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় বরগুনা থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

(এএস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test