E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকূপায় আ.লীগের ত্যাগী নেতারা মূল্যায়ন চায়

২০২৩ এপ্রিল ১৬ ১৯:০০:২৮
শৈলকূপায় আ.লীগের ত্যাগী নেতারা মূল্যায়ন চায়

শেখ ইমন, শৈলকূপা : ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সকল আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতি থেকে এখন কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। দলের সুসময়ে এখন তারা অনেকটাই পরিত্যক্ত হয়ে গেছেন। এদের প্রত্যেকেরই রাজনীতিতে ছিল সোনালী অধ্যায়। এসব পরিবারের সদস্যরা আবার দলের জন্য হারিয়েছেন অনেক কিছু।

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন মুক্তার হোসেন মৃধা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর শৈলকূপার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন অগ্রভাগে। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সক্রিয়। ১৯৯০ সালের এরশাদ বিরোধী গণ-আন্দোলনে শৈলকূপায় আন্দোলন গড়ে তুলেন এবং এরশাদ সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হন তারা। ১৯৯১ সালে বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক হামলা মামলার শিকার হয়ে কারাবাস করেন তিনি। তৎকালীন মাগুরা উপ-নির্বাচনে প্রয়াত আসাদুজ্জামানের নির্দেশে সক্রিয় ভাবে কাজ করেন তিনি।

২০০১ সালে বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে আবারও একাধিক মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেন তিনি। ১/১১ পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন মুক্তার হোসেন মৃধা। এক সময়ের সেই সাহসী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধার খোঁজ রাখে না কেউ। আওয়ামী লীগের সুসময়ে তিনি এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত।

নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন এলাকাছাড়া, ছিল না কোনো সাংগঠনিক কর্মকান্ড, সে সময় নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কর্মীদের নিয়ে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি। ২০০৮ সালের পর দলের সুসময়ে আমরা সবদিক থেকে অবহেলিত হয়েছি। হাইব্রিড আর অনুপ্রবেশকারীদের ভিড়ে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। বিগত দুই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েও হাইব্রিডদের টাকার কাছে পরাজিত হয়েছি। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে জনপ্রতিনিধিদের রায়ে আমি জয়লাভ করি। আমাদেরকে দলীয় পদ-পদবী কেন দেওয়া হয় না এ সম্পর্কে আমরা দলের হাই কমান্ডের নিকট জানতে চাই।

শৈলকূপাতে শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধা নয়। তার মত একই অবস্থা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী জোয়ার্দার ও আওয়ামী লীগ জাতিয় পরিষদের সাবেক অধ্যক্ষ আবেদ আলীসহ বেশকিছু ডাকসাইটে নেতাদের। দলীয় কর্মসূচীতেও এখন আর তাদের ডাকা হয়না।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন আব্দুল হাই। তিনি আবার শৈলকূপা আসনের এমপি। তার মনে যা চাই তিনি তাই করেন। নিজের বলয় ঠিক রাখতে তার পছন্দের ব্যক্তিকে পদ-পদবি দিয়ে থাকেন। যার ফলে শৈলকূপায় প্রকৃত আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও শৈলকূপার সন্তান পারভীন জামান কল্পনা জানান, শৈলকূপা আওয়ামী লীগে সাবেক কয়েকজন নেতার অবদান অপরিসীম। তাদেরকে পদবঞ্চিত করে রাখা সত্যিই দুঃখজনক। ইতোমধ্যে তাদেরকে মূল্যায়নের জন্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দদের অবগত করা হয়েছে।

(এসআই/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test