E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন

২০২৩ এপ্রিল ২২ ১৪:১৪:০৬
মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : প্রবাসী অধ্যুসিত জেলা মৌলভীবাজারে দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনা শেষে সব ভেদাভেদ ভুলে সৌহার্দ আর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে পালিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। 

এবছর জেলার সবচেয়ে বৃহৎ ও নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ হযরত সৈয়দ শাহ্ মোস্তফা (র:) পৌর ঈদগাহ মাঠে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মুসল্লী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ঈদগাহটিতে মোট তিনটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পুরো ঈদগাহ মাঠের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে মূল সড়ক আলোকসজ্জা করা হয় পৌরসভার পক্ষ থেকে। চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকসজ্জা দৃষ্টি কারে পথচারীসহ মুসল্লীদের। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঈদগাহের দৃষ্টিনন্দন আলোর ঝলকানি দেখতে শতশত মানুষ ভিড় জমান শাহমোস্তফা সড়কে।

শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬ টায় অনুষ্ঠিত হয় বিশাল এই ঈদগাহের প্রথম ঈদ জামাত। এতে জামাতে ইমামতি করেন, মৌলভীবাজার টাউন দেওয়ানী জামে মসজিদ এর পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহিত উদ্দীন। দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৭ টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন, শহরের পশ্চিমবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহিবুর রহমান। এর পর সর্বশেষ তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮ টায়। ওই জামাতে ইমাম হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন, শহরের প্রাচীণ কওমী মাদ্রাসা দারুল উলুম জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম (কালাপুরী)।

প্রতিটি জামাতেই বিপূল সংখ্যক মুসল্লী অংশ নেন। মাঠের ভিতর পূর্ণ হয়ে মাঠের বাহিরের বড় অংশসহ পুরো শাহমোস্তফা সড়কজুড়ে খোলা আকাশের নিচে জায়নামাজ নিয়ে নামাজ পড়তে দেখা যায় মুসল্লীদের। প্রথম জামাতের নামাজ শুরুর আগে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার-রাজনগর ৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমেদ এমপি, পৌর মেয়র ফজলুর রহমান। প্রথম জামাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ শহরের বিশিষ্টজনেরাও অংশ নেন। নামাজ পরবর্তী খুৎবা ও মোনাজাত শেষে ভাতৃত্বের বন্ধনে শিশু, যুবক, বৃদ্ধাসহ নানা বয়সীরা একে অপরের সাথে খোলাখুলি ও আনন্দে মেতে উঠেন। বুকের সাথে বুক মিলিয়ে হৃদয়ের উষ্ণতায় প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হন সবাই।

এছাড়াও শহরতলীর পুলিশ লাইনস মাঠে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর বাহিরে জেলার রাজনগর, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলাসহ ৭টি উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল ফিতরের জামাত। সব মিলিয়ে জেলায় শতাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে পর্যটন সমৃদ্ধ জেলা হওয়ায় কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হামহাম জলপ্রপাত, শ্রীমঙ্গলের শীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা, আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ, সবুজ চাবাগান, বাইক্কাবিল, বড়লেখার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত,পাথারিয়া পাহাড় ও হাকালুকি হাওরসহ জেলার পর্যটন স্পট গুলোতে আজ থেকে শুরু হবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আগমন। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে অন্য বছরের তুলনায় এবছর পর্যটক সংখ্যা কিছুটা কম হওয়ার সম্ভাবনা। তবে পর্যটন এলাকা গুলো বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের হোটেল ও রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের বরণে পুরোদমে প্রস্তুত।

শ্রীমঙ্গলের পাঁচতারকা হোটেল গ্র্যান্ড সুলতার টি রিসোর্ট এন্ড গল্ফের জেনারেল ম্যানেজার আরমান খান জানান, ঈদের ছুটি কাটাতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশী পর্যটকরা বুকিং সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন, সামনে পরীক্ষা থাকায় হয়তো এই ঈদে পর্যটক একটু কম হবে, তবুও আমরা আশাবাদী।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতো জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও বড়লেখাসহ জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা রক্ষায় খোলা জীপে উচ্চ শব্দে গান বাজানো ও বেপরোয়া বাইকারদের বিষয়ে নজর থাকবে পুলিশের।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test