E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা

ভগ্নদশায় পাউবোর দুই শতাধিক ব্রীজ

২০২৩ এপ্রিল ২৭ ১৭:৫৯:৩০
ভগ্নদশায় পাউবোর দুই শতাধিক ব্রীজ

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল ও খালের প্রায় দুই শতাধিক ব্রিজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মাণের পর আর কখনও সংস্কার না করায় এখন ব্রিজগুলো মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেহাল দশা ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত পারা হতে হচ্ছে ছোট-বড় যানবহন, স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকদের। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই দ্রুত এসব ব্রিজ সংস্কারের দাবি করছেন স্থানীয়রা। 

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বেলতলা, হরিশপুর, কালাপাহাড়ীয়া, শ্রীপুর, ধুলিয়া, রামনগর, কুলবাড়ীয়া, সাতব্রিজ আন্দুলিয়া, পোলতাডাঙ্গা, চটকাবাড়ীয়া, পার্বতীপুর ও শুড়া গ্রামসহ অনেক এলাকায় ব্রিজ ভেঙে গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করে কোনো মতে চলাচল করেন। তবে মাঠ থেকে ফসল আনতে হলে ঘুরতে হয় প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ। জোড়াদহ, ফসলি, রঘুথানপুর তাহেরহুদা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এদিক দিয়ে চলাচল করলেও ব্রিজটি সংস্কারে নেই কোনো উদ্যোগ। পাশের ফুলবাড়িয়া গ্রামের ব্রিজটি ভেঙেছে দেড় বছর আগে। ব্রিজের মাঝখানে বড় ছিদ্র হওয়ায় পারাপার হচ্ছে না কোনো যানবাহন। কোনোমতে ভ্যান, মোটরসাইকেল পার হলেও প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

হরিণাকুণ্ডুর মত পার্শ্ববর্তী উপজেলা শৈলকূপা ও সদরের অধিকাংশ ব্রিজের একই দশা। ব্রিজগুলো ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়দের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাই দ্রুত এগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বেলতলা গ্রামের মোহাম্মাদ আলী জানান, এই ব্রিজ বিগত ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে আগে ভেঙে পড়ে আছে। এটা মেরামতের জন্য কেউ তদারকি করে না। মাঝে মধ্যে কিছু লোকজন এসে আমদের আস্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ ব্রিজটির কারণে আমাদের এলাকার সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে চরম সমস্যা হচ্ছে। আমাদের এখনে মান্দিয়ার একটা বড় বাজার আছে। এখানে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি করার জন্য প্রায় দুই থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।

মান্দিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আমাদের এখানের এই ভাঙা ব্রিজটি আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি। এখানে এসে বিভিন্ন গাড়ি আটকে থাকে। সেই সঙ্গে চলাচলকারী মানুষরাও আটকে পড়েন। এছাড়া প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকের হাত-পা ভেঙে গেছে। অনেকে রাগ করে অন্য দিক দিয়ে ঘুরে যাতায়াত করেন। ব্রিজ ভাঙা হওয়ায় মানুষ মাঠ থেকে ফসল আনতে পারেন না। এটা ছাড়াও আশপাসের প্রায় প্রতিটি ব্রিজই ভাঙা। এলাকার মানুষের আর কোনো উপায় না থাকায় ঝুকিপূর্ণ এসব ব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কয়েকদিন আগেও ব্রিজে একটি গাড়ি উল্টে একজন ব্যক্তির প্রায় মারা যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে প্রধান, সেকেন্ডারী ও টারশিয়ারী ৫২০ কিলোমিটার খালের ওপর ১৯৬৫ সালে ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপর মহলে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি আচিরেই ব্রিজগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test