E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় বৃষ্টি হলেই লেপটে যায় শহরের রাস্তাগুলো, জনদুর্ভোগ চরমে

২০২৩ মে ০৬ ১৯:১১:৪৫
নওগাঁয় বৃষ্টি হলেই লেপটে যায় শহরের রাস্তাগুলো, জনদুর্ভোগ চরমে

নওগাঁ প্রতিনিধি : সামান্য বৃষ্টি হলেই নওগাঁ পৌর শহরের বেশিরভাগ রাস্তা হয়ে যায় চলাচলের অনুপযোগী। কোথাও কোথাও দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলো পাকা না কাচা রাস্তা। আবার গর্তের কারণে কোথাও পানি জমে আছে।  বৃহস্পতিবার ৪মে বৃষ্টির পানিতে শহরের চলাচলের সড়কে সৃষ্টি হয়েছে এমন পরিস্থিতির। এর আগে গত রবিবার বৃষ্টিতেও শহরের রাস্তায় এমন দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টির পানিতে মাটি ভিজে সড়ক হয়েছে কাদায় একাকার। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের লোকজনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ পৌর মেয়রের সদিচ্ছা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পাকা সড়কগুলোর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

গত সপ্তাহের রবিবার রাতে হঠাৎ করে বৃষ্টি হলে বৃষ্টির পানিতে শহরের কাপড় পট্রি থেকে আরজি নওগাঁ, ঘোষ পাড়া মোড় থেকে পালপাড়া ব্রীজ পার হয়ে সুলতানপুর রাস্তার আলুপট্রি, এছাড়া শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডের কোথাও না কোথাও এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি হলে সরেজমিনে শহরের একাধীক স্থানে ঘুরে দেখা যায় বৃষ্টির পানিতে লেপটে গেছে শহরের রাস্তাঘাট। বিশেষ করে কাপড়পট্রি, ডাবপট্রি, টিনপট্রি, আরজি-নওগাঁ, দপ্তরি পাড়া লেপটে আছে। আবার কোথাও কোথাও পানি জমে আছে।

শুক্রবার কাদা লেপটে আছে রাস্তায়, আছে পানি জমে। মানুষজন কাঁদা মাটি গায়ে লাগার ভয়ে চলাচল করছে সাবধানে ভিতিকর পরিস্থিতির মধ্যে। কখন যেন গাড়ির চাকা পড়ে কাঁদা পানি গায়ে পড়বে এই ভয়ে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক এখন কাঁদা সড়কে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মোটরসাইকেল চালকরা। ঝুঁকি নিয়ে তারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। সড়কের পাশের লোকজন ও ব্যবসায়ীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। এছাড়া শহরের প্রধান প্রধান সড়কের কিছু কিছু জায়গায় ট্রাক্টরের বহন করা মাটি পড়ে বৃষ্টির পানিতে পাকা রাস্তাগুলো কাদাময় হয়ে পড়ে। চলাচলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বাড়ে দুর্ভোগ।

আত্রাই উপজেলা থেকে এসে পরিবার নিয়ে শহরে ভাড়া থাকেন মিঠু। চালাচ্ছেন অটোরিকসা। তিনি বলেন, বৃষ্টির পর শহরের মধ্যে সতর্কতার সাথে রিকসা চালাতে হয়। রিকসার চাকা পানিতে পড়ে পানি ছিটকে গিয়ে পথচারীদের গায়ে পড়ে কিনা এই ভয়ে। কারণ গর্তে পানি জমে থাকলে বুঝতে পারা যায় না। তাই সাবধানে চালাতে হয়।

ঘোষপাড়ার ব্যবসায়ী ও মানাপের সভাপতি উত্তম সরকার বলেন, বৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষের পায়ে হেটে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে কিছু এলাকা। স্যান্ডেল হাতে নিয়ে প্যান্ট এবং লুঙ্গি হাঁটু পর্যন্ত উঠিয়ে যেতে হয়। অথচ পৌর সভার নির্ধারিত যত রকম ট্যাক্স আছে আমরা সেগুলো দিয়ে থাকি। কিন্তু প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত আমরা সাধারণ জনগণ। আমরা পৌর শহরের বাসিন্দা হলেও মনে হয় কাঁদা মাটি যুক্ত গ্রাম এলাকায় বসবাস করছি। তাই শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা উচিত। আর সেই বিষয়ে পৌর মেয়রের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।

তবে জনগুরুত্বপূর্ণ শহরের এই সড়কগুলোর যদি এখনই কোনো ব্যবস্থা নেয়া না যায়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম তো আছেই। এজন্য এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তাই পথচারীদের দূর্ভোগ থেকে উত্তরণের জন্য এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সচেতন পৌরবাসী জানান, বর্তমানে দেশে উন্নয়নের সরকারবহাল থাকলেও নওগাঁ পৌরশহরের কোন উন্নয়ন শুধু রান্তাঘাটই নয়, শহরের রাস্তাঘাটে কোন রোড লাইট নেই। পূজা গেল ঈদ গেল. গোটা শহর য়েন প্রেতপুরি।বর্ধিত এলাকারগুলো তো ভাবাই যায় না।তাদের মতে উন্নয়নের সরকার খ্যাত বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারে বদনাম ছড়াতে বিএনপি ঘরানার মেয়র কৌশলে পৌরবাসীকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছেন বলে কথা উঠেছে।

জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক সনি মুঠোফোনে মিডিয়াকে বলেন, আপনার মাধ্যমে ভালো সংবাদ দিতে চাই। ব্রীজের মোড় থেকে কাপড় পট্রি হয়ে পুরাতন কাঠহাটি, তুলাপট্রির রাস্তা, চুড়িপট্রির মুখ থেকে বীণাপাণির মোড়, এর সাথে আরেকটি রাস্তা আছে সেটা খাস-নওগাঁ নবির ডাক্তারের মোড় থেকে ইদুর বটতলী হয়ে শহিদুলের মোড় পর্যন্ত এই চারটি রাস্তার কাজের জন্য ৫কোটি ৪৮লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে টেন্ডারে চলে গেছে। অল্প দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। আর সবগুলো রোড ও ড্রেন আরসিসি হবে।

(বিএস/এসপি/মে ০৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test