E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শ্রীনগরে বিনা বাধায় দুই ফসলি জমি ভরাট করছে প্রভাবশালীরা

২০২৩ মে ১৬ ১৫:৪৯:৫০
শ্রীনগরে বিনা বাধায় দুই ফসলি জমি ভরাট করছে প্রভাবশালীরা

আমিনুল ইসলাম, শ্রীনগর : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক প্রকার বিনাবাধাঁয় দুই ফসলি জমি ভরাট করছে প্রভাবশালীরা। উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের ৯ নম্বর রোডের (কেসি রোড) সুফিগঞ্জ কালভার্টের পুর্ব পাশে প্রায় দুই একর ফসলি জমি ভরাট চলছে। অপরদিকে একই এলাকার পাড়াগাঁও গ্রামের সড়কের উত্তর চকে প্রায় এক একর কৃষি জমি কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। সুফিগঞ্জের ড্রেজার ব্যবসায়ী প্রভাবশালী মো. রিপনের বিরুদ্ধে এসব দুই ফসলি জমি কাটা ও ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। 

রিপন দির্ঘদিন ধরে সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাটি বাণিজ্য করে অত্র এলাকায় অসংখ্য কৃষি জমি, পুকুর, জলাধারসহ সরকারি নয়নজুলির জায়গা ভরাট করে সংশ্লিষ্ট জমির শ্রেণি পরিবর্তণ করে আসছে। এছাড়া এসব জমি কাটার কাজে স্ক্যাভেটর মেশিন (ভেক্যু) ও ড্রাম ট্রাকে মাটি আনা নেয়ার কাজে ভারি যানবাহন ব্যবহারে অত্র এলাকার কোটি টাকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে আসছে। এ যেন দেখার কেউ নেই!

অভিযোগ উঠেছে ড্রেজার সিন্ডেকেট চক্রের অন্যতম সদস্য প্রভাবশালী রিপনের মাটি বাণিজ্যের ফলে এ অঞ্চলের পাঁকা সড়কগুলো ভেক্যু মেশিন ও ড্রাম ট্রাকের ওভারলোডিংয়ে বেহাল হয়ে পড়েছে। যে কারনে সড়কে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ রকম প্রভাশালী মাটি খেকোদের এমন চিত্র উপজেলাব্যাপী লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়েও রিপনের মাটি বাণিজ্যের চিত্র চোখে পড়েছে। পাড়াগাঁও মাস্টার বাড়ির পাশে পাকা সড়কের উত্তরদিকে ভেক্যু দিয়ে মাজেদ নামে এক ব্যক্তির মালিকানা দুই ফসলি জমির মাটি কেটে ড্রাম ট্রাকে ভরা হচ্ছে। মাটি ভর্তি ট্রাকগুলো তন্তর-শ্রীনগর পাকা সড়ক দিয়ে তন্তর পালবাড়ি সংলগ্ন ৯নং রোডের (কেসি রোড) সুফিগঞ্জ জোড়া সেতুর পাশে অপর একটি ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে। মাটির ট্রাকের ওভারলোডিংয়ে সড়কটির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে। ড্রাম ট্রাকের মাটি সড়কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ধুলোবালির সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সড়কে যাতায়াতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলে যেভাবে ফসলি জমি কাটার পাশাপাশি ভরাট হচ্ছে এতে এক সময় কৃষি জমি আর থাকবেনা। যে যারমত বিনা অনুমতিতে জমির শ্রেণি পরিবর্তণ করছে ! সরকারের নিয়মনীতির কিছুই মানা হচ্ছে না এখানে। দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে জমির শ্রেণি পরিবর্তণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কেউই তা মানছেনা। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ, ফসলি জমির মাটি কাটা ও ভরাটের অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আর্থিক জরিমানা করলেও কদিন বাদেই মাটি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠে।

সচেতন মহল বলছেন, ফসলি জমি রক্ষার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এদের থামানো সম্ভব হবে না। মাটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ কিছু বলতে সাহস পাননা।

অভিযুক্ত মো. রিপনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, আমি এখন ড্রেজার বন্ধ রাখছি। জমি কি আমি জোর করে কাটছি নাকি। জমির মালিকরা কাটার জন্য বলছে তাই কাটছি।

ফসলি জমির টপ সয়েল মাটি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাও কি অপরাধ? ভেক্যু মেশিন ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে সড়কের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তার ক্ষতি হলে সরকার করবে।ড্রাম ট্রাক চলতে সড়কের কিছুটা ক্ষতিতো হবেই। প্রশাসন সবই জানেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মামুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা সবই তো দেখছেন এ বলে এড়িয়ে যান তিনি।

স্থানীয় উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার পালের এ বিষয়ে কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে সবাইকে নিষেধ করা হয়েছে। মাটি কাটা বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে এখন জানতে পারলাম। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

(এআই/এসপি/মে ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test