E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাংশায় সেই চেয়ারম্যানের হিন্দু বিদ্বেষী বক্তব্যের পর নির্ঘুমে হিন্দুরা

২০২৩ মে ১৬ ১৯:৩১:০০
পাংশায় সেই চেয়ারম্যানের হিন্দু বিদ্বেষী বক্তব্যের পর নির্ঘুমে হিন্দুরা

স্টাফ রিপোর্টার, পাংশা থেকে ফিরে : রাজবাড়ী পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা: বিলকিস বানুর হিন্দু বিদ্বেষী বক্তব্যের পর অত্র অঞ্চলের সনাতন ধর্মালম্বী মানুষদের নির্ঘুম রাত কাটছে। অনেকেই দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত ও নিচ্ছে।

একটা হত্যা কান্ড কে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মালম্বী মানুষের উদ্দেশ্যে আক্রমণাত্মক বক্তব্য পুলিশ হয়রানিসহ নানান কারনে তারা দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত বেছে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক লোক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কথা প্রকাশ হলে যেকোনো সময় মেরে ফেলতে পারে আমাদের! তাই আমরা অনেকেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি এই দেশেও কাজ করে খেতে হয়! তার থেকে ভারত গিয়ে কাজ করে খাবো,তাতে অন্তত রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবো। কোন রাজনৈতিক নেতা পুলিশ বা সন্ত্রাসের ভয় থাকবে না।

উপজেলা শহরে অনেক হিন্দু নেতা আছে! তারা নিজেদের আখের গোছাতে সজাতিদেরও বিপদে ফেলতে দ্বিধাবোধ করে না। নিজেরা উপস্থিত থেকে এমন করে বক্তব্য দিয়ে যায়! এটা কিসের ইংগিত দেয়?

আমাদের এলাকায় এমন হইছে যে রাতে যদি কোন প্রতিবেশী মরেও পরে থাকে কেউ ঘরের দরজা খুলে বাইরে বেড় হবে না। একদিকে উগ্রবাদী মানুষের ভয় অন্য দিকে তো সন্ত্রাস আছেই। এর পর আবার পুলিশ।

গত ৩০ এপ্রিল রাতে মো: মিজানুর রহমান কে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনার পর নিহত মিজানুর রহমানের শ্যালক পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মারুফ সরদার ওই এলাকায় হিন্দুদের কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন হিন্দুদের বসতবাড়ি পুরিয়ে দেওয়া হবে। এর পর মিজানুর রহমানের সাবেক ব্যবসায়িক পার্টনার অসিত কুমার প্রামাণিক কে সন্দেহজনকভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে পরে নিহতের স্ত্রী তাকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করেন। স্বজনেরা স্থানীয় সংসার সংসদ সদস্যের দ্বারস্থ হলে তিনি হিন্দুদের কোন সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

তারা আরও বলেন চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পর স্থানীয় প্রশাসন কি সংসদ সদস্য কার্যকারী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। আশংকা রয়েছে যেকোনো সময় অত্র এলাকায় অনাকাংখিত ঘটনা ঘটতে পারে।

পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান অশিক্ষিত তার বক্তব্য ধরার কিছু নাই।আমরা তাকে এই বক্তব্যের পরে রাগারাগি করছি।তবে ওই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন নিরাপদে আছে। তাদের শতভাগ নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা নিয়মিত ওই এলাকায় যাচ্ছি।তবে তার বক্তব্যে আমি নিজেও বিব্রত।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, উপজেলায় এসে চেয়ারম্যান আমাদের সামনে বক্তব্য উইড্রো করছেন। সেখানে পাংশা উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। হিন্দু নেতারা ওই এলাকার মানুষের সাথে উইথড্র করা বক্তব্যের বিষয়ে কথা পড়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিবেদককে বলেন সেটা আমি জানি না!

(এমজি/এসপি/মে ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test