E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাস্তা সংস্কার নিয়ে সংঘর্ষের জেরে কলেজ ছাত্রকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ

২০২৩ মে ২৩ ১২:৪৯:৪৭
রাস্তা সংস্কার নিয়ে সংঘর্ষের জেরে কলেজ ছাত্রকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ

কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি : কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে চলাচলের একটি কাচা রাস্তা সংস্কার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিলে রবিবার সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে নারী সহ উভয়পক্ষে  অন্তত ৫/৬ জন আহত হন। এরই জের ধরে সোমবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আজিমুল ইসলাম আদনানকে বেধড়ক মারপিট করে প্রতিপক্ষের লোকেরা। এ ঘটনায় সারা এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার করে। ছাত্রটিকে মারপিটের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

ঘটনাটি ঘটেছে কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের মরিচপুর গ্রামে। জানা যায়, গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কেন্দুয়া আঠারোবাড়ি পাকা সড়ক থেকে মরিচপুর হয়ে হরিনগর পর্যন্ত একটি চলাচলের কাচা রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটির কাজ অর্ধেকেরও বেশি সম্পন্ন হয়। রোববার ওই প্রকল্পের রাস্তা নিয়ে মরিচপুর গ্রামের মৃত হাবিবুল্লার ছেলে আবু হানিফ ও মাসুদ মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারাকে কটাক্ষ্য করে বক্তব্য দেয় প্রতিপক্ষের নজরুল ইসলাম।

মাসুদ মিয়া এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে, উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মাসুদ মিয়া ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নজরুলের শরীরে আঘাত করলে নজরুল ও তার লোকজন মাসুদ মিয়ার বাড়িতে এসে হামলা চালায়। হামলায় আবু হানিফ, মাসুদের স্ত্রী আনোয়ারা ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য কর্পোরাল মাহাবুব আলম আহত হয়। মাসুদের স্ত্রী আনোয়ারা আবু হানিফকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রকল্পে নেয়া হয়।

অপরদিকে আহত নজরুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান রোবাবর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে আর ঝগড়া বিবাদ না করার পরামর্শ দেন। কিন্তু নজরুল ইসলাম আহত হওয়ার জের ধরে সোমবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র আজিমুল ইসলাম আদনানকে রাস্তায় বেধড়ক মারপিট করে প্রতিপক্ষের জাকিরুল গংরা। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কলেজ ছাত্র আদনানকে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছেনা।

তবে হামলাকারী জাকিরুলের মা রেনু আক্তার বলেন, কলেজ ছাত্র আদনান তার ছেলে জাকিরুলকে আগে লাঠি দিয়ে মেরেছে তার পর জাকিরুল আদনানকে কয়েকটি আঘাত করেছে। তিনি বলেন, আমরা মহিলারা ঘটনাটি থামানোর চেষ্টা করেছি। গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম আকন্দ বলেন, রবিবারের ঘটনাটি ঘটার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে ঝগড়া বিবাদ থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি এবং বলেছি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব। কিন্তু নজরুল গংরা আমাদের নিষেধ অমান্য করে কলেজ ছাত্র আদনানকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের ভাষা রবিবারের ঘটনায় আমরা উভয়পক্ষকেই কিছু বলিনি। কারন উভয় পক্ষেরেই দোষ ছিল। কিন্তু সোমবার কলেজ ছাত্র আদনানকে যেভাবে মারপিট করেছে তা ন্যাক্কারজনক। এভাবে একজন ছাত্রকে মারপিট করা ঠিক হয়নি। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু হানিফ বলেন, আমরা জনগনের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাটি সংস্কার করে দিচ্ছি। কিন্তু নজরুল গংরা ওই রাস্তার কাজে বাধা দিলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে চলে আসি। কিছুদূর আসতেই দেখা যায় দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে ফিরে গেলে মাসুদ তার হাতে থাকা ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নজরুলকে আঘাত করে। এতে নজরুলের শরীর থেকে রক্ত বের হওয়ার পর তার পক্ষের সকল লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে মাসুদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। নজরুল আহত হওয়ার জেরে তার লোকজন কলেজ ছাত্র আদনানকে সোমবার সকালে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় সারা এলাকার মানুষ নিন্দা জানাচ্ছে। আমিও এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। কলেজ ছাত্র আদনান, তার বাবা ও অন্যান্যদের মারপিটের ঘটনায় কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

(এসবি/এএস/মে ২৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test