E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাস্তা নিয়ে সংঘর্ষের জের 

কলেজ ছাত্রকে বেধড়ক মারপিট থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

২০২৩ মে ২৩ ১৯:৫২:১৮
কলেজ ছাত্রকে বেধড়ক মারপিট থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের মরিচপুর গ্রামে একিট কাঁচা রাস্তা সংস্কার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। এ ঘটনায় রোববার দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে নারী সহ উভয়পক্ষে অন্তত ৫/৬ জন আহত হন। এরই জের ধরে সোমবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র আজিমুল ইসলাম আদনানকে বেধড়ক মারপিট করে প্রতিপক্ষের লোকেরা। এ ঘটনায় সারা এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার করে। তবে সংঘর্ষ ও ছাত্রটিকে মারপিটের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই পক্ষের লোকেরা। কলেজ ছাত্রের বাবা আবু হানিফ বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের লোকদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেন অপর দিকে সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে কলেজ ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের বিবাদী করে অপর একটি অভিযোগ দেন।  

জানা যায় গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কেন্দুয়া আঠারোবাড়ি পাকা সড়ক থেকে মরিচপুর হয়ে হরিনগর পর্যন্ত একটি চলাচলের কাচা রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। প্রকল্পটির কাজ অর্ধেকেরও বেশি সম্পন্ন হয়। রোববার ওই প্রকল্পের রাস্তা নিয়ে মরিচপুর গ্রামের মৃত হাবিবুল্লার ছেলে আবু হানিফ ও তার ভাই মাসুদ মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারাকে কটাক্ষ্য করে কথা বলেন প্রতিপক্ষের নজরুল ইসলাম। এই ঘটনায় মাসুদ মিয়া প্রতিবাদ জানালে, উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মাসুদ মিয়া ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নজরুলের শরীরে আঘাত করলে নজরুলের লোকজন মাসুদ মিয়া ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আবু হানিফ, মাসুদের স্ত্রী আনোয়ারা ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য কর্পোরাল মাহাবুব আলম সহ অন্যান্যরা আহত হয়। মাসুদের স্ত্রী আনোয়ারা সহ অন্যান্যদের কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।

অপরদিকে আহত নজরুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ইউপি চেয়ারম্যান রোবাবরই ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে আর ঝগড়া বিবাদ না করার পরামর্শ দেন। কিন্তু নজরুল ইসলাম আহত হওয়ার জের ধরে সোমবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র ছাত্র আজিমুল ইসলাম আদনানকে রাস্তায় বেধড়ক মারপিট করে নজরুলের লোকেরা। স্থানীয় লোকজন তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে কলেজ ছাত্র আদনানকে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছেনা।

হামলাকারী জাকিরুলের মা রেনু আক্তার বলেন, কলেজ ছাত্র আদনান তার ছেলে জাকিরুলকে আগে লাঠি দিয়ে মেরেছে, পরে জাকিরুল আদনানকে কয়েকটি আঘাত করেছে। গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম আকন্দ বলেন, রোববারের ঘটনাটি ঘটার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে ঝগড়া বিবাদ থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি এবং বলেছি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব। কিন্তু নজরুলের লোকজন আমাদের নিষেধ অমান্য করে কলেজ ছাত্র আদনানকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের ভাষা, রোববারের ঘটনায় উভয় পক্ষেরেই দোষ ছিল। কিন্তু সোমবার কলেজ ছাত্র আদনানকে যেভাবে মারপিট করেছে তা ন্যাক্কারজনক। এভাবে একজন ছাত্রকে মারপিট করা ঠিক হয়নি। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু হানিফ বলেন, আমরা জনগনের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাটি সংস্কার করে দিচ্ছি। কিন্তু নজরুল গংরা ওই রাস্তার কাজে বাধা দিলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে চলে আসি। পরে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হলে আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর মাসুদ তার হাতে থাকা ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নজরুলকে আঘাত করে। এর পর নজরুলের লোকজন লোকজন লাঠিসুটা নিয়ে মাসুদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। নজরুল আহত হওয়ার জেরে তার লোকজন চেয়ারম্যানের নিষেধ অমান্য করে কলেজ ছাত্র আদনানকে সোমবার সকালে বেধড়ক মারপিট করে। আমি এই নিন্দা জানাই।

অপর দিকে নজরুলের পক্ষের সাইফুল ইসলাম বলেন, নজরুলকেই তারা ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে, আমরা তাদের উপর কোন হামলা করিনি।

কেন্দুয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মির্জা শফিউল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষ ও কলেজ ছাত্রকে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এর তদন্ত চলছে।

(এসবি/এসপি/মে ২৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test