E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অস্ত্র আইনে গ্রেফতার দুই ব্যক্তির বিষয়ে তদন্তে আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৩ মে ২৪ ১৮:২২:০৩
অস্ত্র আইনে গ্রেফতার দুই ব্যক্তির বিষয়ে তদন্তে আইন ও সালিশ কেন্দ্র

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : অস্ত্র আইনে গ্রেফতার “নিরীহ” দুই ব্যক্তি এলাকায় ক্ষোভ। শিরোনামে গত ১৩ মে সমকাল পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ওই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে সরেজমিনে তদন্তে নেমেছেন আইন ও সালিশ কেন্দ (আসক) এর অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং ইনভেস্টিগেটর মোঃ মোস্তফা কামাল ও তাওহীদ আহমেদ রানা।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বেলা ৪ টা পর্যন্ত কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের সাহিতপুর এলাকায় তদন্ত করেন। এসময় তারা র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হাওয়া সুব্রত বর্মন ও রিপন চন্দ্রের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এছাড়া সাহিতপুর বাজার ও গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথেও কথা বলেন।

গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়নাল আবেদিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সান্দিকোনা ইউনিয়ন ১নং ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া, উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র বিশ্বশর্মা, ফল ব্যাবসায়ী সোহেল মিয়া, রুহুল আমিন ও বাচ্চু মিয়া সহ অনেকের সাথেই কথা বলেন। তারা সকলেই গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক সুব্রত বর্মন ও রিপনকে নিরপরাধ দাবী করেন।

একই সঙ্গে এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ তাদেরকে কারাগার থেকে আদালতের মাধ্যমে মুক্তিরও দাবি জানান। আইন ও শালিশ কেন্দ্রের ইনভেস্টিগেটর মোঃ মোস্তফা কামাল ও তাওহীদ আহমেদ রানা সমকালকে বলেন, আমরা এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। সকলেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা দুই যুবককে নিরপরাধ ও নির্দোষ দাবী করেন।

এছাড়া কেন্দুয়া থানার ওসি মোঃ আলী হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শফিউল আলমের সাথেও কথা হয়। তাদের ভাষা, মামলাটি নিবির ভাবে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিষ্কার ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, র‌্যাবের সদস্যরা যুবকদের গ্রেফতার ও থানায় হস্তান্তর করার আগপর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য পুলিশের জানা ছিলনা।

আইন ও শালিশ কেন্দ্রের দুই কর্মকর্তা সার্বিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে এলাকাবাসীর সাথে একমত পোষন করে বলেন, গ্রেফতারকৃত যুবকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলার ঘটনার সাথে এদের চরিত্রের কোন মিল খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা সত্যিকার অর্থেই নিরীহ বলে মনে হচ্ছে। তবে কি কারনে তাদের গ্রেফতার ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা সুষ্ঠুভাবে খতিয়ে দেখার জন্য র‌্যাবের মহা পরিচালক ও নেত্রকোনা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে আইন ও শালিশ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আবেদন মাধ্যম জানানো হবে।

জানা গেছে গত ১১ মে বৃহস্পতিবার রাত অনুমান ৮টা ৫মিনিটের দিকে র‌্যাব-১৪ সিপিসির একটি দল সান্দিকোনা ইউনিয়নের সাহিতপুর বাজারে আসে। প্রথমে সতিশ চন্দ্রের ছেলে কাটমিস্ত্রি রিপন চন্দ্রকে তার দোকান থেকে গ্রেফতার করে। পরে রিপনের মোবাইল ফোন থেকে সুব্রত বর্মনের মোবাইলে কল দিতে বলে। কল পেলে সুব্রত বর্মন তার মিষ্টির দোকান থেকে রাস্তার উত্তর পাশের সোহেল মিয়ার দোকানের সামনে যাওয়া মাত্রই তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় র‌্যাব সদস্যরা।

তবে র‌্যাব-১৪ সিপিসির উপ-পরিদর্শক ফকরুল বাদী হয়ে যে মামলা করেন সেই মামলায় উল্লেখ করেন, গ্রেফতার দুইজনের কাছে দেশী পাইবগান পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর এ কারণেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেপতারকৃত দুই যুবককে গত ১২ মে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হলে এ পর্যন্ত তারা কারাগারেই আছেন। গ্রেফতারকৃত দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা তাদের মুক্তির দাবিতে আহাজারি করছেন। একই সঙ্গে কর্মক্ষম ব্যক্তিদের গ্রেফতার করায় পরিবারের সদস্যরা আর্থিক কষ্টেও ভোগছেন বলে তারা দাবি করেন।

(আরকে/এসপি/মে ২৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test