E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সুদের কারবারি রফির খুঁটির জোর কোথায়?

২০২৩ মে ২৮ ১৭:৩০:০২
সুদের কারবারি রফির খুঁটির জোর কোথায়?

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের এক অত্যাচারী সুদ কারবারির নাম রফি। চলেন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে। সব সময় তার সঙ্গে মোটরসাইকেলের বহর। কেউ কোন প্রতিবাদ করলেই চলে নির্যাতন। সুদের টাকা না দিলে অফিসে নিয়ে করা হয় নির্যাতন। এ ভাবেই তিনি সদর উপজেলার বিষয়খালী এলাকায় রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। তিনি বর্তমানে মহারাজপুর ইউনিয়নের নবাব। মানেন না কোন আইন কানুন। সবাইকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেন। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে তাই অভিযোগ দিয়েও হতদরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। 

অভিযোগ উঠেছে, সদর থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে রেখেছে রফি। যাতে আইনি কোন ঝামেলা না হয়। ফলে বীরদর্পে সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন রফি। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ আর অসন্তোষ বাড়ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের বিষয়খালি বাজারে রান ক্ষুদ্র ঋণদান ও সমবায় সমিতি অবধৈভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের ফাঁকা চেক নিয়ে ঋণের ময়োদ শেষ হবার আগেই গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রহকদের হয়রানি করে আসছিলেন। এ নিয়ে প্রায় শতাধিক ভুক্তভুগী পরিবার লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন। অভিযোগ দেন জেলা সমবায় অফিসেও। অভিযোগ পেয়ে জেলা সমবায় অফিস সরজমিন তদন্ত করেন। তদন্তে সুদখোর রফির অত্যাচার নির্যাতনের সত্যতা মেলে।

এদিকে তদন্ত দলের কার্যক্রম চলাকালে রফি ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে উপস্থিত অভিযোগকারীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকেন। পরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে আনে। এর আগে শুনানীর আগের রাতে ২ জন অভিযোগকারীর বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ দিয়ে এবং সুদ মওকুফের কথা বলে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে সমবায় অফিসারদের জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে আসে রফির লাঠিয়াল বাহিনী। এখনো পর্যন্ত রফির বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শংকায় দিন পার করছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এলাকার মাদকসেবীদের নিয়ে রফি ভাড়াটে বাহিনী গঠন করেছে। সেই বাহিনী নিয়ে রফি বাড়ি বাড়ি ঋন গ্রহীতাদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। নলডাঙ্গা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের আক্তরুজ্জামানের স্ত্রী রফির কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। ঋণের ৫০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে তিন লাখের বেশি টাকা পরিশোধ করেন। আরো টাকার জন্য চাপ দিতে থাকলে বিষয়খালী বাজারে রান সমবায় সমিতিতে দেখা করতে আসেন আক্তার। রান সমিতির অফিসে তাকে মারধর করা হয়। পরে লজ্জায় মুখ দেখোতে না পরে বিষপানে আত্যহত্যা করেন আক্তারুজ্জামান।

কালিগঞ্জ চাপালিয়া গ্রামের স্বপন ঘোষ সুদের টাকা দিতে না পারায় পৈতৃক সম্পাত্তির পাওয়ার অব এ্যার্টানী করে দখল করে নেয়। যার কারনে হার্ট এ্যাটাকে স্বপ্ন ঘোষ মারা যায়। ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের বাসীন্দা স্বপ্না খাতুন স্বামীর ব্যাবসার জন্য রফির কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋন গ্রহন করেন। টাকা পরিশোধের পরও তার নামে মাম্যলা দেওয়া হয়। এভাবে প্রায় দেড় শত নিম্ন আয়ের পরিবারকে ঋণের ফাঁদে ফেলে রফি মামলার জালে আটকে নিত্যদিন অত্যাচার নির্যাতন করে গেলেও বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে। সুদখোর রফির অত্যাচারে এ সকল পরিবার এখন অজানা আতংকে দিন পার করছে।

এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল ইসলাম রফি বলেন, ঋণ নিয়ে তার বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবী করেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি সমবায় সমিতি চালাচ্ছেন। আইন মেনেই সব কিছু করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, রফির বিরুদ্ধে আমরা দুইটা অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। আমাদের কেউ সুদ কারবারিদেরকে সহযোগিতা করছে কি না সেটা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(একে/এসপি/মে ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test