E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হবিগঞ্জে শচীন্দ্র কলেজের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০১৪ অক্টোবর ২৭ ১৭:২৯:১৭
হবিগঞ্জে শচীন্দ্র কলেজের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নাগুড়া এলাকায় অবস্থিত শচীন্দ্র কলেজের নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কলেজটির শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ করেছে সর্বস্তরের ছাত্রজনতা। সোমবার দুপুরে কলেজের সামনে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।

এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশে কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, শচীন্দ্র লাল সরকার জীবনের সর্বস্ব দিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৯৯৮ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা হলেও আজ ১৬ বছর পর কলেজের নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে শচীন্দ্র কলেজের নাম স্থায়ীকরণের দাবি জানান। অনথ্যায় দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্র নির্মূল করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। অপরদিকে একই সময় জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে সর্বস্তরের ছাত্রজনতা। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে চৌধুরী বাজার ট্রাফিক পয়েন্টে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আব্দুর রকিব রনি। এতে বক্তৃতা করেন পিযুষ চক্রবর্তী, হুমায়ূন খান, স্বপন মজুমদার, আহমেদ জামান খান শুভ, বিপ্লব রায়, আব্দুল মজিদ, সজল রায় প্রমূখ।

এর আগে কলেজের নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিঃসন্তান শচীন্দ্র লাল সরকার। এ ষড়যন্ত্রে স্থানীয় এমপি মো. আব্দুল মজিদ খান মদদ যোগাচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। শনিবার হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার সারা জীবনের স্বপ্নে লালিত কলেজটি আজ হুমকির মুখে। যার বর্তমান পরিস্থিতি আমার একার পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।

এ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি না পেলে আমি মৃত্যুবরণ করেও শান্তি পাব না। ভিন্ন নামে পুকুর লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করছেন গভর্নিং বডির সভাপতিসহ কোন কোন সদস্য। এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এমনকি পুকুরে বিভিন্ন তিনি রকম মেডিসিন প্রয়োগ করছেন। ফলে এর পানি শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, আমি ১৯৯৮ সনে শচীন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠা করি। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এএমএস কিবরিয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০০০ সনে কলেজটি এমপিওভূক্ত হয়। বিগত ১৬ বছরের ধারাবহিকতায় আজ কলেজটি পূর্ণাঙ্গরূপ ধারণ করে অনার্স কলেজে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে ওই কলেজের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। ১৯৯৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে আমার নামে শচীন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০০৪ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটে কলেজের নামকরণ বিষয়ে নিষ্পত্তি হয়। আমি জীবনে কিছুই চাইনি। সারা জীবন সৎপথে যা উপার্জন করেছি তা দিয়ে হবিগঞ্জের গরীব দুঃখী মানুষের স্বার্থে শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। আমার চোখের সামনে আমার স্বপ্নের লালিত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ও বক্তব্য যখন শুনি তখন আমি স্থির থাকতে পারি না। আমার বয়স প্রায় ৯০ এর কাছাকাছি। আমার একার পক্ষে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি অসহায় হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় আপনারা সহযোগিতা করুন।

কলেজের বিভিন্ন সময়ের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শচীন্দ্র লাল সরকার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হরেকৃষ্ণ রায় বিভিন্ন ভূয়া ভাউচারে কলেজের টাকা আত্মসাত করেছেন। এ অধ্যক্ষের চাকরীকালীন সময় অডিট হলে অডিটে অধ্যক্ষের অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমান জেলা প্রশাসক এ দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পরপর দুই বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়েছেন। এছাড়া কলেজের দুইজন শিক্ষক হাবিবুর রহমান ও প্রমোদ সাহাজী ২০০৯ সালে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত বেতন বিল জালিয়াতি করে বর্ধিত টাকা উত্তোলন করেন।

(পিডিএস/এএস/অক্টোবর ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test