E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

কর্ণফুলীতে হিরোগিরি দেখাতে মরিয়া একাধিক ‘কিশোর গ্যাং’

২০২৩ জুন ০৮ ১৮:১২:৩৩
কর্ণফুলীতে হিরোগিরি দেখাতে মরিয়া একাধিক ‘কিশোর গ্যাং’

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং এক আতংকের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লা কিংবা গ্রামের অলিগলিতে নানা নামে এরা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রয়েছে তাদের হোয়াটসঅ্যাপস ও ফেসবুক গ্রুপ। মুহুর্তেই এরা এক জায়গায় হাজির হতে এসব গ্রুপ চালিয়ে থাকেন। 

বেপরোয়া মনোবৃত্তির এসব কিশোর নাগরিকদের জন্য অস্বস্তি বয়ে নিয়ে আসছে, আবার কখনও কখনও নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়িয়ে পড়ছে। এতে প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

ভয়াবহ তথ্য হলো, কথিত কিশোর গ্যাং অপসংস্কৃতি এখন বিভিন্ন ক্রাইমে ছড়িয়ে পড়েছে। অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। এসব বকাটে যুবক কিশোর গ্যাং চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্রবাজি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে প্রায় সব অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন।

তাদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে ‘গডফাদাররা’। বড় ভাই বড় নেতা বা নীতি বহির্ভূত জনপ্রতিনিধিরা। কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে অনেকেই রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। দিন যত যাচ্ছে, ততই ভয়ংকর উঠছে কিশোর গ্যাং। দিন-দুপুরে তারা ছুরিকাঘাত করছেন। কথায় কথায় মারামারি ও অস্ত্রবাজি করছে। খুন করতে দ্বিধাবোধ করছে না। তাদের হাতে রয়েছে রাম দা ও সুইচ গিয়ার ছুরি।

পুলিশের তথ্যমতে, গত ৫ বছরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অন্তত ৯ খুনের ঘটনা ঘটেছে। তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে গত ৪ বছর আগে তালিকা করা হলেও সেটি আর হালনাগাদ করা হয়নি। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে পাড়া-মহল্লার উঠতি বয়সি কিশোররা।

যদিও কারণ ছাড়া কোনো কিছু ঘটে না কিংবা উদ্ভব হয় না। কিশোর গ্যাংয়ের বিস্তারও সমাজের কোনো অসঙ্গতি বা ক্ষত থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এর কিছু আমরা জানি। আবার কিছু ব্যাপার সামাজিক গবেষণার মাধ্য্যমে উদ্ঘাটন জরুরি। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হিরোইজমের বিষয়টি সব সময় আকর্ষণীয়, এটাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী এদের বিপথগামী করছে এমন তথ্য অনেকের জানা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন কারণে কিশোররা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর জন্য পরিবার থেকে শুরু করে সামাজিক পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয় দায়ী। উঠতি বয়সি কিশোরদের মধ্যে সব সময় উদ্দীপনা কাজ করে। ফলে খারাপ দিকে প্রভাবিত হয় বেশি।

আবার এমনও অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের কিছু ছাত্র-যুব নেতা ওসব কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করছেন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরীর পাড়া-মহল্লায় প্রতিনিয়ত আধিপত্য বিস্তার এবং হিরোগিরি দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠছে কিশোররা। প্রতি বছর গ্যাংয়ে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সদস্য।

গত কয়েক বছরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে কিশোর অপরাধীরা। একের পর এক খুন, মাদক চোরাচালান, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও আধিপত্য বিস্তারে জড়িয়ে পড়ছে তারা।

কর্ণফুলীর আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম টুকু বলেছেন, কিশোরদের অবশ্যই কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতা থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য প্রথমেই অভিভাবকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। কিশোর গ্যাং সদস্যদের তালিকা করে তাদের শোধরানো ও নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে।

কর্ণফুলী থানার ওসি মো. দুলাল মাহমুদ বলেন, কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়নের কিশোর গ্যাংদের তালিকা করা হয়েছে। ক্রাইম স্পট গুলো সিসিটিভির আওতায় আনতে কার্যক্রম শুরু করু হয়েছে। মানুষের জান মাল নিরাপত্তার বিষয়ে সিএমপি পুলিশ সব সময় সতর্ক রয়েছেন। একই কথা বলেছেন বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা।

(জেজে/এসপি/জুন ০৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test