E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

'মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি' পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কলাপাড়ায় 'যুব সমাবেশ'

২০২৩ জুন ২৬ ১৯:৩৬:০০
'মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি' পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কলাপাড়ায় 'যুব সমাবেশ'

কলাপাড়া (পটুয়াখালি) প্রতিনিধি : 'মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি' পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা বাতিলের' দাবিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় 'যুব সমাবেশ' অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন প্রান্তজন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোটের (বিডব্লিউজিইডি) উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রান্তজনের নির্বাহী পরিচালক এস এম শাহজাদা। 'জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনোমিক্স জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশের জন্য সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) প্রণয়ন করছে।

২০১০ ও ২০১৬ সালেও জাইকার সহোযোগিতায় বিদুৎ খাত বিষয়ক মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি) প্রনয়ন করা হয়েছিল। এ গুলোতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল আমদানি নির্ভর কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটে এখন বাংলাদেশ গুরুতরভাবে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতিতে ভূগছে। ফলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করেও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।

প্রান্তজনের মাঠ কলাপাড়া সমন্বয়কারী সাইফুল্লাহ মাহমুদ বলেন, 'সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) প্রনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চরম ঘাটতি রয়েছে। জাইকা বা বাংলাদেশ সরকার কোনো পক্ষই এই পরিকল্পনা তৈরির বাজেট ও কার্যক্রম প্রকাশ করেনি। জাপানের কারিগরি সহায়তার অধীনে গোপনে জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে জাইকা এই কাজ করছে, যা অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) ভূক্ত দেশ হিসাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।'

যুব সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে জলবায়ু সহিষ্ণু উচ্চ আয়ের দেশে পরিনত হবার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহন করে । এর আলোকে ওই বছরই ডিসেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীপরিষদ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেয়। এতে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইইপিএমপি’র চতুর্থ খসরা তৈরি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার বিরুদ্ধে গিয়ে। এই খসড়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ তথাকথিত ‘পরিছন্ন জ্বালানি'র লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। পরিছন্ন জ্বালানির আওতায় উন্নততর প্রযুক্তির নামে আমদানি-নির্ভর অনির্ভরযোগ্য তরল হাইড্রোজেন, আ্যামোনিয়া ও কার্বন সংরক্ষন প্রযুক্তি প্রবর্তনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ছাড়া খসড়া পরিকল্পনায় ২০৫০ সাল নাগাদ ৩০.৭% জ্বীবাশ্ম জ্বালানি (প্রধানত কয়লা ও এলএনজি), ৩২.৮% তথাকথিত উন্নততর প্রযুক্তি এবং মাত্র ১৭.১% নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যাবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ২০৪১ এর অধীনে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা ও নিরাপদ পরিবেশ সংরক্ষনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে যুব সমাবেশ থেকে জোর দাবি করা হয়েছে। দাবিসমূহ হলো ১. জাইকার অর্থায়নে জাপানি প্রতিষ্ঠান আইইইজে প্রণীত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী খসড়া আইইএমপি অবিলম্বে বাতিল করুন ২. মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’র আলোকে ২০৫০ সাল নাগাদ শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের জন্য সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ প্রাধান্য দিয়ে দেশজ মালিকানায় দেশের নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞসহ সকল অংশিদারকে নিয়ে সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করুন।

৩. বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদার জাপনের প্রতি আমাদের অনুরোধ, জাপানি কোম্পানি ও তাঁদের প্রযুক্তি চাপিয়ে না দিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করুন।

যুব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আমরা কলাপাড়াবাসীর সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা সু-শীলনের প্রকল্প কর্মকর্তা পলাশ মোড়ল, যুব প্রতিনিধি ইমরান হোসেন, রিক্তা ইসলাম, তাসফিয়া ইসলাম প্রমুখ।

(এমকেআর/এএস/জুন ২৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test