E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কেশবপুরে মৎস্য ঘেরের দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

২০২৩ জুলাই ২০ ১৯:৩৯:২০
কেশবপুরে মৎস্য ঘেরের দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরের কেশবপুরে গড়ভাঙ্গা বিলের একটি মৎস্য ঘেরের দখল নিতে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় আদালত ওই ঘেরের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষ ঘের মালিক ঘেরের ৪ স্থানের ভেড়িবাঁধ কেটে দিয়ে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।  

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরের সীমান্তবর্তী পাঁজিয়া ইউনিয়নের গড়ভাঙ্গা বিলে কেশবপুর মৌজায় ১২০ বিঘা ও মনিরামপুর মৌজায় ১১০ বিঘা জমি রয়েছে। ২০১৭ সালে ৪ বছরের চুক্তিতে ওই বিলে মাছের ঘের করেন মনিরামপুর উপজেলার হাসাডাঙ্গা গ্রামের তমাল হোসেন মিন্টু। ঘেরের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সে গায়ের জোরে আরও ১ বছর দখলে রেখে মাছ চাষ করে। এছাড়া, সে ঠিকমত জমির হারির টাকা দিত না। এনিয়ে জমির মালিক কৃষকদের সাথে তার বিরোধ শুরু হয়। এরই জের ধরে, চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল কেশবপুর মৌজার ১২০ বিঘা জমির কৃষকরা তাদের জমির সীমানা দিয়ে ভেড়িবাধ করে প্রকাশ্য ডাকে আগামী ৫ বছরের জন্যে ঘেরটি ডিড করে দেয় বাটবিলা গ্রামের মৃত আছিরউদ্দীনের ছেলে আলমগীর মোড়লের কাছে। এসময় প্রত্যেক কৃষক তাদের জমিতে লাল পতাকা টাঙিয়ে তাদের জমি ঘের মালিক আলমগীরকে বুঝে দেয়। অপরদিকে, মানিরামপুর অংশের কৃষকদের জমি নিয়ে মাছ চাষ করছেন তমাল হোসেন মিন্টু। বর্তমান তমাল হোসেন মিন্টু ওই বিলের সমস্ত জমি দখলে নিয়ে মাছ চাষ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এনিয়ে দুই ঘের মালিক একে অপারের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। বিষয়টি নিয়ে থানায় দু‘দফা বসাবসি হলেও নিরসন না হওয়ায় ঘেরের দখলকে কেন্দ্র করে দুই ঘের মালিক মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

এদিকে, গত ৮ জুলাই সকালে তমাল হোসেন মিন্টু বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০/২৫ জন লোক ভাড়া করে এনে আলমগীর মোড়লের ঘেরের পতাকা তুলে সীমানা আইল ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এসময় আলমগীর মোড়লসহ কেশবপরু এলাকার জমির মালিকরা বাধা দিলে তারা ঘেরের দখল নিতে ব্যর্থ হয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ঘের মালিক আলমগীর মোড়ল বাদি হয়ে যশোর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পূর্বের ঘের মালিক তমাল হোসেন মিন্টুকে বিবাদী করে ফোজদারী কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই বিরোধীয় ঘেরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এদিকে, গত ১৮ জুলাই আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তমাল হোসেন মিন্টু ওই মৎস্য ঘেরে অনধিকার প্রবেশ করে ঘেরের ভেড়িবঁাধ কেটে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। এ নিয়ে দুই ঘের মালিক বর্তমান মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। যে কোন সময় উভয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। তমাল হোসেন মিন্টু বলেন, ওই বিলের কৃষকরা আমার নামে ঘেরের ডিড করে দিয়েছে। অপর ঘের মালিক আলমগীর জানান, ঘের কমিটি ও জমির মালিকগন ৪ দফা মাইকিং করে মিটিং করলেও তমাল হোসেন মিন্টু উপস্থিত না হওয়ায় কেশবপুর উপজেলা অংশের জমির মালিকগন ৫ বছরের জন্য মাছ চাষ করতে আমার নামে ডিড করে দিলে আমি ঘেরে মাছের পোনা ছেড়ে চাষ করে আসছি।

এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার উপ-পরিদর্শক তাপস দাস বলেন, ঘের মালিক আলমগীর মোড়লের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে ঘেরটি পরিদর্শন করে জানতে পারি মোট মালিকের ৬৯ বিঘা জমির মালিক আলমগীর মোড়লের ডিডে এবং ৪৯বিঘার জমির মালিক তমাল হোসেন মিন্টুর ডিডে স্বাক্ষর করেছে। আদালতে ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার পর বিষয়টি নিরসনে ২১ জুলাই সহকারি পুলিশ সুপার খ সার্কেল আশেক সুজা মামুন স্যার দায়িত্ব নিয়েছেন।

(এসএমএ/এএস/জুলাই ২০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test