E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে গণ অভিযোগ, ভেঙে পড়েছে শিক্ষার পরিবেশ

২০২৩ আগস্ট ০৭ ১৭:২৩:৫৬
রাণীনগরে প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে গণ অভিযোগ, ভেঙে পড়েছে শিক্ষার পরিবেশ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরের ২৯নং কাটরাশইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক দুর্নীতি, বিভিন্ন অনিয়ম এবং অসদাচরণের বিরুদ্ধে গণ অভিযোগ প্রদান করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা: শাহানাজ বেগমের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, সহকারি শিক্ষক এবং অভিভাবক ও বিদ্যালয় ক্যাচমেন্ট এরিয়ার কাটরাশইন, সিংগারপাড়া, উমুরপুর, পোঁয়াতাপাড়া গ্রামের প্রায় শতাধিক বাসিন্দা স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর সম্প্রতি প্রদান করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারি শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চলে আসা অন্ত:দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষার্থীসহ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে ১৯২০সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই আদর্শ বিদ্যাপিঠটি। তাই দ্রুতই বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অন্ত:দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটিয়ে পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে একটি সুন্দর, মনোরম ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সভায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছর থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছর পর্যন্ত মোট ৫ বছরের আয়-ব্যয় উপস্থাপনে অক্ষমতা প্রকাশ করেন। পরবর্তিতে অতিরিক্ত সময় নেওয়ার পরও সঠিক আয়-ব্যয়ের তালিকার মাধ্যমে সাড়ে ৩লাখ থেকে ৪ লাখ টাকার হিসাব তুলে ধরতে পারেননি। তিনি একক ভাবে স্লিপ ও বিদ্যালয় উন্নয়নের পরিকল্পনা করেন। মিথ্যে বিল-ভাউচারের মাধ্যমে বিল উত্তোলন করেন, বিভিন্ন বিল ও ভাউচারে শিক্ষক প্রতিনিধিসহ অন্য শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করেন। প্রায়ই সহকারি শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রতিদিনই ১০টার পর বিদ্যালয়ে আসেন আর সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই অফিসের কাজের অজুহাতে দুপুর পর বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। অভিযোগপত্রে এই রকম ১২টি অনিয়ম উল্লেখ্য করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে স্থানীয় সাংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশও করেছেন।

প্রধান শিক্ষক মোছা: শাহানাজ বেগম মুঠোফোনে জানান, অভিযোগপত্রে আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পন্ন মিথ্যে ও বানোয়াট। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ইন্ধনে একটি মহল আমাকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য দীর্ঘদিন যাবত নানা কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। আমি আমার জায়গায় সঠিক আছি।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলাম বেলাল জানান, বিদ্যালয়ে ২০১০সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে শাহানাজ বেগম যোগদানের পর ২০১৭সাল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে বিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ অন্ত:দ্বন্দ্বের সূত্রপাত শুরু হয়। বিশেষ করে প্রধান শিক্ষকের পেশীশক্তির জোড়, স্বেচ্ছাচারিতা, সহকারিদের সঙ্গে অসদাচরণসহ নানা রকমের কর্মকান্ড সেই অন্ত:দ্বন্দ্বকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারি শিক্ষকদের অনেকবার হাতাহাতিসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছে যা ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি পাঠদানের সুষ্ঠ পরিবেশও নষ্ট করেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাদিরউজ্জামান বলেন এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারি শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে অভ্যন্তরীণ অন্ত:দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

(বিএস/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test