E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভরা মৌসুমেও দাম কমছে না ইলিশের

২০২৩ আগস্ট ১৯ ১৮:৩০:২৯
ভরা মৌসুমেও দাম কমছে না ইলিশের

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : চাঁদপুরের রুপালী ইলিশ মাছ, তার স্বাদ, আকৃতি এবং দাম বাংলাদেশে নিয়মিত আলোচনার বিষয়। ক্রেতারা বলছেন, এই প্রিয় মাছটি আগের চেয়ে বেশ চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। চাঁদপুর ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছ ঘাটে গত কয়েকদিন যাবত প্রচুর ইলিশের আমদানি বেড়েছে। 

শনিবার (১৯ আগস্ট) চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটের আড়ত ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ওরা মৌসুমেও আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮/৯০০ থেকে হাজার বারো'শ টাকায়। স্থানীয় নদীর ইলিশ হলে ১৫ থেকে ১৭'শ টাকা কেজি।

আড়তে এবং বাজারে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেলেও চড়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। তাই সাধ থাকলেও সাধ্যের কারণে মাছটির স্বাদ নিতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা।

দূরদূরান্ত থেকে আগত একাধিক ক্রেতা বলছেন, বাজারে এক কেজি ওজনের মাছের যা দাম দেখি তা কেনার সাহস হয় না। ইলিশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে এদিক সেদিক কেবল ঘুরে ঘুরে দেখছেন।

জানা যায়, ইলিশের ভরা মৌসুম জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। পাঁচশ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এই আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৯০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। গত বছর একই সময় একই আকৃতির ইলিশের দাম ছিল সাড়ে ছয়শ থেকে সাড়ে সাতশ টাকা। এমন তথ্য দিচ্ছে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা সাধারণ। বারশ থেকে চৌদ্দশ টাকার বেশি পড়ছে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম।

সরজমিনে ঘাটের আড়ত গুলো ঘুরে দেখা যায়, হাজী মালেক খন্দকার, হাজী বাবুল হাজী,গফুর জমাদার, ছোট সিরাজসহ অন্যান্য আড়ত গুলোতে ইলিশের স্তুপ। ইলিশ সংশ্লিষ্ট শত শত মানুষ কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। গত দুই দিনে ৮ থেকে ১০ টি ইলিশ বোঝাই ফিসিং বোট ও পিকআপ ভর্তি হয়ে ৫ /৭টি গাড়ি আসায় বড় স্টেশন মাছঘাট ইলিশে সয়লাব। প্রায় ৫ হাজার মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে বলে জানান চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার।

তিনি বলেন, ইলিশ ধরা পড়ার অনুকূল পরিবেশ জোঁ,বাতাস ও বৃষ্টি ছিল বলে সাগর অপুকেলিও এলাকায় প্রচুর ইলিশ জেলের জালে ধরা পড়ছে। আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন থাকায় ভালো দামের আশায় বৃহত্তর নোয়াখালীর হাতিয়া রামগতি আলেকজান্ডার ও লক্ষীপুর এলাকা থেকে এসব ইলিশ আসায় দামও কেজিতে দুই-তিন'শ টাকা কমেছে। ইলিশের এমন আমদানি আরো কয়েকদিন থাকলে দাম আরো কমবে। স্থানীয় নদীতে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা।

আলী আকবর নামে ঘাটের একজন ইলিশ ব্যবসায়ী বলেন, এখন ইলিশ দাম হওয়ার কথা সবচেয়ে কম। কিন্তু এখনই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এই মাছ। ঘাটে এখন যেই ইলিশ দেখা যাচ্ছে তার সিংহভাগই সাগরের। ঘাটে মাছ বেশি দেখলে কি হবে, এসব মাছ এখান থেকে অন্যত্র চালান হয়ে যাচ্ছে আবার ক্রেতারা প্রচারিত হচ্ছে। লোকাল নদীর মাছ হলে ইলিশের দাম ১৭০০ থেকে ২০০০ টাকা কেজি। সাগরের ইলিশ হওয়াতে হাজার বারোশো টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ গ্রাম ওজনের একটি মাছ কিনতে হয়েছে ৯০০ টাকায়। ১৫০০ টাকা করে কেজি। কিন্তু এই মাছটির দাম হওয়া উচিত ছিল ৪০০ টাকা। দামের কারণে বিত্তবানরাই ঠিকমতো ইলিশ খেতে পারছে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের তো খাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

সচেতন মহলের মতে, এবার সকল পণ্যেরই দাম বাড়ায় এর প্রভাব ইলিশ মাছের উপরও পড়েছে। তাই ভর মৌসুমেও ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাইরে চলে গেছে।

(ইউ/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test