E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকূপায় দেড় বছরে খুন ১০ আ.লীগ কর্মী

২০২৩ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৫:২৭:৩০
শৈলকূপায় দেড় বছরে খুন ১০ আ.লীগ কর্মী

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলায় সামাজিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গত দেড় বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১০ কর্মী খুন হয়েছেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার খুন হন আবু সাঈদ বিশ্বাস। তিনি উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের গোলকনগর গ্রামের ওমর বিশ্বাসের ছেলে। এ ঘটনায় শাহিন বিশ্বাসসহ তিনজনকে ধরে পুলিশে দেন গ্রামবাসী। আবু সাঈদ বিশ্বাস ও শাহিন বিশ্বাস সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস এবং সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন বিশ্বাসের মধ্যে দীর্ঘদিন সামাজিক আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আবু সাঈদ গত ইউপি নির্বাচনে মফিজ উদ্দিনের পক্ষে ছিলেন। তবে পক্ষ ত্যাগ করে ফারুক হোসেনের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছিলেন।

আবু সাঈদের বাবা ওমর বিশ্বাস জানান, তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। এক সময় মফিজ উদ্দিনের পক্ষে থাকলেও এখন ফারুক হোসেনের সঙ্গে কাজ করেন। এক বছর আগে নানা অপকর্মের অভিযোগে ভাতিজা শাহিনকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হলে, তিনি বর্তমান চেয়ারম্যানের পক্ষ নেন। এরপর এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে শাহিন প্রতি রাতে মহড়া দেন এবং সমাজের একটি অংশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি শাহিনের অনুসারীরা ওমর বিশ্বাসের পক্ষ নেয়। সামাজিক আধিপত্য হারানোর ভয়ে প্রতিশোধ নিতে ছেলেকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস জানান, সামাজিক বিরোধে আবু সাঈদকে তাঁর চাচাতো ভাই হত্যা করেছে। আবু সাঈদ আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। শাহিনের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বিশ্বাসের অভিযোগ, শাহিন বিশ্বাস বর্তমান চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় গোলকনগরের আশপাশে তিনটি গ্রামে নানা অপকর্ম করছে। তার রোষানলে পড়ে আমাদের কর্মী আবু সাঈদের প্রাণ গেছে। আমি তার বিচার চাই।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় শৈলকূপায় গত ইউপি নির্বাচন ও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় সারুটিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে নারী কর্মীসহ ৭, শৈলকূপা পৌরসভা ও বগুড়া ইউনিয়নে এক কর্মী নিহত হন। তারা হলেন সারুটিয়া ইউনিয়নে আব্দুর রহিম, হারান বিশ্বাস, অখিল সরকার, স্বপন মণ্ডল, জসিম বিশ্বাস, সুফিয়া খাতুন, জানেক শেখ; বগুড়া ইউনিয়নের কল্লোল খোন্দকার ও শৈলকূপা পৌরসভার যুবলীগ কর্মী স্বপন শেখ।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন আব্দুল হাই। তিনি সকলের অভিভাবক। কিন্তু নিজের বলয় ঠিক রাখতে তিনি শৈলকূপায় গ্রুপিং করেন। এতে করে ওই এলাকায় একাধিক সামাজিক দল তৈরি হয়েছে। ওই সমস্ত দলের অনেকেই তাকে অভিভাবক হিসেবে মানতে চাই না। যার ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দমন-পীড়ন হামলা-মামলাসহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। নেতৃত্বের ব্যর্থতা ও ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রকৃত আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রাণ দিতে হচ্ছে।

(একে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test