E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্স বিস্ফোরণে ৮ নিহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করলেন আব্দুর রহমান

২০২৩ সেপ্টেম্বর ২১ ২২:১১:৫৬
ভাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্স বিস্ফোরণে ৮ নিহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করলেন আব্দুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে গত ২৪ জুন দ্রুতগতির অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লেগে ৮ জন নিহতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে। ঘটনার তিনমাস পরে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মাইটকুমরা ও ফেলাননগর গ্রামের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বোয়ালমারী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক সেলিম রেজা লিপন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু, আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খান বেলায়েত হোসেন, বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলী আকবর আলী, জেলা যুবলীগের সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, দাউদুজ্জামান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম, এনামুল হক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কামরুল সিকদার, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আইয়ুব শেখ, ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তুজা আলী তমাল, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতৃবৃন্দ।

জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফেলাননগর উত্তরপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা শেষে মেয়ের বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ঢাকার কদমতলী এলাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ফেলাননগরের উদ্দেশ্যে তার দুই মেয়ে, চার নাতি-নাতনীসহ ৭ জন গত ২৪ জুন অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে ওইদিন বেলা ১১ টার দিকে ভাঙ্গা-ঢাকা বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গার মালিগ্রাম ফ্লাইওভারের সংযোগ সড়কে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের আইল্যান্ডে সঙ্গে ধাক্কা লেগে গাড়ির ব্যাটারির কানেকশন থেকে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে গ্যাসের সিলিন্ডারের পাইপ ফেটে আগুন ছড়িয়ে পড়লে গাড়িতে থাকা একই পরিবারের ৭ সদস্য পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

এ দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা মিতুল মালোকে (২৪) শিবচর হাইওয়ে থানার পুলিশ ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে মারাত্মক আহত মিতুল মালোকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে বার্ণ ইউনিটে শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যায়। নিহতদের লাশ ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সনাক্ত শেষে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ওইদিন রাত ৯ টায় নিহত তাসলিমা বেগমের মরদেহ ফেলাননগর, তার বড় মেয়ে শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমড়া গ্রামের আলমগীর খানের স্ত্রী কমলা পারভীন (৩২), কমলা পারভীনের বড় ছেলে আরিফ (১৩), মেঝ ছেলে হাসিব (৮) ও কন্যা আফসার (২) লাশ রাত সাড়ে ১০ টায় মাইটকুমরা গ্রামে এবং নিহত তাসলিমার মেঝ মেয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলা আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামের সেনা সদস্য মাহামুদুল হাসান রনির স্ত্রী মোসা. বিউটি পারভীন (২৭), বিউটি পারভীনের ছেলে মেহেদীর (১০) মরদেহ নিজবাড়ি কুচিয়াগ্রামে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সের চালক মিতুল মালোর মরদেহ পরেরদিন ২৫ জুন ফরিদপুর পৌর মহাশ্বশানে দাহ করা হয়।

ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় এবং নিহতদের পরিবারের আবেদন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দিলে ঘটনার তিনমাস পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাইটকুমড়া গ্রামের নিহত একই পরিবারের ৪ জনের ৪ লাখ, আলফাডাঙ্গার কুচিয়াগ্রামের দুইজনের ২ লাখ টাকার অনুদানের চেক আলমগীর খানের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে বেলা ২ টায় ফেলাননগর গ্রামের নিহত তাসর্লিমার বেঁচে থাকা একমাত্র ছেলে আনিচের হাতে এক লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন আব্দুর রহমান।

এ ব্যাপারে নিহতদের পরিবারের হাতে প্রধানমন্ত্রীর চেক তুলে দেওয়া আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশের মানুষের কল্যানের জন্য কাজ করে গেছেন। তেমনি তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল পর্যায়ের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। আমার নির্বাচনী এলাকার একই পরিবারের ৭ জনসহ ভাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্স বিস্ফোরণে ৮ জন নিহতের ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে প্রত্যেককে নেত্রী এক লাখ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন।

(পিএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test