E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেঘনায় ৩ জেলের মৃত্যু: জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে সুবর্ণচরে  মানববন্ধন

২০২৩ অক্টোবর ০১ ১৮:১৭:০০
মেঘনায় ৩ জেলের মৃত্যু: জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে সুবর্ণচরে  মানববন্ধন

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালীর মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপ-স্বন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছের খোপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ আহত আরও এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গুলিবিদ্ধ তিন জেলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জলদস্যুদের গ্রেফতার ও ঘেরাও করে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করে জেলে ও উপকূলের বাসিন্দারা।

রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চত্তরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জলদস্যুদের আইনের আওতায় এনে বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার। বিচারের আশ্বাস পেয়ে উপজেলা পরিষদ ও থানা ঘেরাও এবং সড়ক অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

নিহত মো. ইসমাইল হোসেন (৩০) সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর আলাউদ্দিন গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।

নিহত অপর দুজন জেলে হলেন, সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চর মজিদ গ্রামের আবদুর রহমান (৩৩) এবং একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে রাজু (১৬)। গতকাল শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গত বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেলের কাছে ইলিশ মাছের খোপে মাছ ধরার সময় জেলেদের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো.ইসমাইল হোসেনের মামা রাজা মিয়া জানান, শনিবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর দুপুরের দিকে ইসমাইলের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সে মারা যায়।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ অংশ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে মাছ শিকার আসছে। বুধবার সন্ধ্যার দিকে কেফায়েত বাহিনী ওই খোঁপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যায় ভুক্তভোগী জেলেরা। একপর্যায়ে সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে ৬ জেলে গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়।

অভিযুক্ত কেফায়েত এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনে জানান, তিনি গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে চট্রগ্রামে বিশেষ কাজে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। সেখানে হোটেলের রেজিস্টার ও সিসিটিভি ক্যামেরায় তার অবস্থান রেকর্ড রয়েছে। তিনি কোনভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন,তিনি বলেন কিছু প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করেছে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, একই দাবীতে গতকাল শুক্রবার বিকালে সুবর্ণচর উপজেলার মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজারেন হত্যার সাথে জড়িত সদস্যদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে উপকূলের বাসিন্দারা।

এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হোসেন টুটুল, সাবেক ইউপি সদস্য হাসান খোকন, যুবলীগ নেতা আমির হোসেন রাজা মিয়াসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।

(এস/এসপি/অক্টোবর ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test