E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ভিডিও ভাইরাল, সংবাদ সম্মেলনে অসত্য দাবি

২০২৩ অক্টোবর ০৩ ১৭:২৬:৪৫
মৌলভীবাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ভিডিও ভাইরাল, সংবাদ সম্মেলনে অসত্য দাবি

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে শাশুড়ির সম্পত্তি কেড়ে নেয়ার অভিযোগে মৌলভীবাজার শহরের নাজিয়া হক নামের এক বৃদ্ধ নারীর ভিডিও ভাইরাল নিয়ে রীতিমতো টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। আর ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের পরপরই। শাশুড়ির অভিযোগের তীর মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেকলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী মো: জাকারিয়ার বিরুদ্ধে। 

মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে শ্বাশুড়ির ভিডিও ভাইরালের পর গত সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: জাকারিয়ার স্ত্রী উম্মে সালমা হক সুমি-কে নিয়ে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন। শাশুড়ির অভিযোগ মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে হলেও সেখানে প্রথমে লিখিত বক্তব্য তোলে ধরেন জাকারিয়ার স্ত্রী উম্মে সালমা হক সুমি। তবে লিখিত বক্তব্য না দিলেও এসময় স্বামী মো: জাকারিয়াও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। জাকারিয়া দাবি করেন বৈধভাবে তিনি ওই সম্পত্তি ক্রয় করে মালিক হয়েছেন। তাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ যাতে না পান এজন্য তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এসব করাচ্ছেন।

লিখিত বক্তেব্যে উম্মে সালমা হক সুমি বলেন, ২৯ তারিখ রাত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার মায়ের একটি ভিডিও বার্তা রেজা হক নামীয় আইডিতে প্রকাশিত হয়। যা আমার নজরে আসে। ওই ভিডিও বার্তাটি আমার ও আমার স্বামীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার স্বামী মোঃ জাকারিয়া মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রদপ্রার্থী হয়েছেন। আমার স্বামী জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে প্রতিনিয়তই লড়াই করে যাচ্ছেন। আমার স্বামীর কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও শত্রু লোক আমার বয়োবৃদ্ধ মা কে ভুল বুঝিয়ে ও প্রভাবিত করে দুরবিষন্ধি মূলক অসৎ ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে আমার স্বামীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ক্ষতি সাধিত হয় এমন বক্তব্য রেজা হক নামক ফেইসবুক আইডিতে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে বলা হয়েছে আমার স্বামী জায়গা দখল করে বসে আছে এবং আমাকে জোর করে আমার কাছ থেকে জমি নিয়েছেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা ভাই-বোন দুই জন আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে এই জায়গার মালিক হই।

আমার ভাইয়ের জায়গা অন্যত্র বিক্রি করে দিলে আমার স্বামী এই জায়গা ক্রয় করেন। পরবর্তীতে আমার নামীয় জায়গা আমার স্বামীর নামে দিয়ে দেই। এবং এই জায়গা ব্যাংকে বন্ধক রেখে আমারা স্থাপনা তৈরি করেছি। আমি আমার স্বামী সন্তান এবং আমার মা কে নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছি এবং আমার মায়ের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আমার স্বামীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার ক্ষতি সাধন করার জন্য আমার মা কে ব্যবহার করছে।

এবিষয়ে উম্মে সালমা হক সুমির বড় ভাই রেজা হক জানান, ওই প্রোপ্রাটির মালিক তার মা। তিনি জীবদ্দশায় এই সম্পত্তির ভাগভাটোরা হয় কি করে। তিনি বলেন, সম্পত্তি ভাগই যদি না হয় তা হলে আমি আমার ভাগ বিক্রি করি কি ভাবে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন তারা কি সাবকবলা দলিল দেখাতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আমার মা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবিষয়ে তার যথেষ্ট মেধা আছে। তাকে নির্যাতন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই সম্পত্তি তারা গ্রাস করতে চায়।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: জাকারিয়ার শ্বাশুড়ি ও শহরের সিকন্দর আলী সড়কের বাসিন্দা নাজিয়া হক এর ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৪ সেকেন্টের ভিডিওতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করে বলেন আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। আমার মেয়েকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো: জাকারিয়ার সাথে বিয়ে দিয়ে ছিলাম। সে গ্রামের ছেলে আমি ওরে খুব মায়া করে আমার শহরের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে আমার বাসায় এনেছিলাম।বাসায় আনার পর সে তার ক্ষমতা বলে কীভাবে অবচেতন ভাবে আমার জায়গা সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে যায়। এখন রাস্তায় রাস্তায় আমাকে ঘুরাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে এই বিচার দিয়েছি। কিন্তু বিচার পাইনি। সে আমাকে মানুষিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। আমি নৌকায় ভোট দেই ও কর্মী হিসেবে কাজ করি। ভূমিদস্যু মেয়ের জামাইয়ের জন্য আমি আজকে রাস্তায় রাস্তায় আছি। পাড়াপ্রতিবেশীর বাসায় গিয়ে ভাত খাই। টাকা আনি। আমাকে সে টাকা দেয় না। অথচ এই সম্পত্তিটা আমার বাবার। আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। তার শেষ সম্বলটা আমাকে দিয়ে গেছেন। ওই সম্পত্তিটাও আমার হাত থেকে সে কেড়ে নিলো। আমি অসহায়ের মতো রাস্তায় রাস্তায় থাকি। আমার একটা ছেলে সেও ভাড়াটিয়া বাসায় থাকে। তিনি দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন আমি একজন অসহায় বিধবা মহিলা আমাকে ও আমার ছেলেকে বাচাঁন।

(একে/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test