E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত

নবীনগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক, অধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা

২০২৩ অক্টোবর ১৬ ১৮:২৪:৪০
নবীনগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক, অধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় একজন মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রকে (১০) বলাৎকার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বলাৎকারের শিকার ওই মাদ্রাসা ছাত্রকে অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনারর পর অভিযুক্ত ওই শিক্ষক, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এ তিনজনকে আসামি করে আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে বলাৎকারের শিকার ওই ছাত্রের মা (মিনু আক্তার) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

বাদীর আইনজীবী এডভোকেট আমীরুল হক মানিক মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে আজ দুপুরে বলেন, 'বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন'।

মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বাড্ডা গ্রামের বাসিন্দা, দুবাই প্রবাসি জনৈক ব্যক্তির ১০ বছর বয়সী সন্তান সলিমগঞ্জে স্থানীয় রিয়াজুল জান্নাত নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়ণ করে।

পরিবারের লোকজন জানান, সে ওই মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকেই পড়াশুনা করতো। ঘটনার দিন গত ১ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ৫ম শ্রেণির ওই ছাত্রকে মাদ্রাসার এক শিক্ষক আনোয়ার হোসাইন (২৫) তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। এতে ওই ছাত্রের পায়ুপথে প্রচন্ড আঘাত পায়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ঘটনার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল মামুন ও সলিমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান সোহেলের কাছে ওই ছাত্রের পরিবার বারবার বিচার চেয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে ঘটনার দুই সপ্তাহ পর আজ সোমবার বলাৎকারের শিকার ওই ছাত্রের মা বাদী হয়ে আদালতে উল্লেখিত তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেন।

বলাৎকারের সঙ্গে কেবল একজন শিক্ষক জড়িত থাকলেও, এ মামলায় কেন মাদ্রার অধ্যক্ষ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করলেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী আজ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন,'বলাৎকারকারী শিক্ষক মাদ্রাসা অধ্যক্ষের আপন ভাগ্নে হওয়ায়, অধ্যক্ষ তাকে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। আর আমাদের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ওই শিক্ষকের (আনোয়ার হোসাইন) কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ খেয়ে আমার ছেলের বিচারটা গত দুই সপ্তাহেও করেন নি। বরং গত শুক্রবার চেয়ারম্যান এর 'বিচার করতে পারবেন না' বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাই এই দুইজনও এ ঘটনায় 'সমান অপরাধী' হওয়ায় মনে করে আমি তিনজনকেই আসামি করেছি।'

এ বিষয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি অভিযুক্ত শিক্ষক আনোয়ার হোসাইন ও ৩ নম্বর আসামি মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আল মামুনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাঁদের বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে মামলার ২ নম্বর আসামি সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,'আমি চেয়ারম্যান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় এমপির পছন্দসই নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করার পর থেকেই নানাভাবে আমাকে হয়রাণী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনাটিও আমার বিরুদ্ধে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে, আমার বিরুদ্ধে আনীত এসব ভুয়া অভিযোগের কোন সত্যতা খুঁজে পাবেনা ইনশাল্লাহ।'

(জিডি/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test