E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মরে যাচ্ছে গোয়ালদাহ বাওড়ের মাছ  

২০১৪ নভেম্বর ০৫ ১৭:১৬:৪১
মরে যাচ্ছে গোয়ালদাহ বাওড়ের মাছ  

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গোয়ালদাহ সরকারি বাওড়ে মরে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ। গত ১ সপ্তাহ ধরে মাছ মরে যাওয়ায় ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা দাবি করেছে।  বাওড়ে পাট জাগ দেয়াসহ পার্শ্ববর্তী চৌগাছির বিলের বিষাক্ত কীটনাশক মিশ্রিত পানি বাওড়ে প্রবেশ করায় ব্যাকটিরিয়া জনিত কারণে মাছে মোড়ক লেগে মাছ মরে যাচ্ছে বলে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ধারনা করছেন।

গোয়ালদাহ সরকারি বাওড় লিজ নেয়া জয়নগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সম্পাদক সুশীল বিশ্বাস, সদস্য আলিম বিশ্বাস, সিহাব বিশ্বাসসহ অনেকে জানান, আকস্মিকভাবে মাছ মরে যাওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই এলাকার শতাধিক ব্যাক্তির বেচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই বাওড়টি। কিন্তু বাওড়ের প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ বিনষ্ট হওয়ায় শতাধিক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ ধরে মাছ মরা অব্যাহত রয়েছে।

পার্শ্ববর্তী বিলে লাগানো ধান ক্ষেতে কীটনাশকসহ বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের কারণে পানি দুষিত হয়ে রোগে আক্রান্ত হয়ে বাওড়ের সিলভার কার্প, মৃগেল, কাতল, রুই, পাঙ্গাস, মৃনালকার্প,জাপানি রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ গত এক সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে মারা যাচ্ছে। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পরামর্শ মতে বিভিন্ন প্রতিষেধক প্রয়োগ করেও মাছ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বাওড়ের অধিকাংশ মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মরা মাছে বাওড়টি সাদা হয়ে উঠেছে । পচা মাছের দুর্গন্ধে গোটা এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলার গোয়ালদাহ গ্রামের ১৮.৮৫ একর সরকারি খাস জমিতে বাওড়টি অবস্থিত । উপজেলা প্রশাসন প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর সরকারি নিয়মনীতি অনুযায়ী স্থানীয় মৎস্যজীবীদের টেন্ডারের মাধ্যমে বাওড়টি ইজারা দেয়।

২০১৩ সালে সকল সরকারি শর্ত ও নিয়মনীতি মেনে নিয়ে জয়নগর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি’র পক্ষে সাধারণ সম্পাদক সুশীল বিশ্বাস বাওড়টি ইজারা নেন । ইজারা প্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি সমিতির ৫৫ জন সদস্যেদের ব্যক্তিগত অর্থে সরকারি ইজারা,আয়কর ভ্যাট, মাছ চাষের উপকরণ, পোনা অবমুক্ত, মাছের খাদ্য সরবরাহ ও পারিশ্রমিকসহ এ পর্যন্ত ১০ লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছেন এবং এখানে থেকে এ বছর উৎপাদিত মাছ থেকে ১৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ বিক্রি হবে বলে ধারনা ছিল। এ বাওড়ে মাছ চাষসহ বিভিন্ন কাজ করে এলাকার দু’শতাধিক জেলে পরিবার জীবিকা করে থাকে। কিন্তু মাছ মরে যাওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ছাড়া প্রতি বছর এ বাওড়ের উৎপাদিত মাছ উপজেলার শতকরা ২৫ ভাগ লোকের চাহিদা ও পুষ্টি যোগান দিয়ে থাকে। এ বছর মাছের উৎপাদনও হয়েছিল ভাল এবং সবেমাত্র মাছ ধরা শুরু হয়েছে।

সংবাদ পেয়ে মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো। শাহাদৎ হোসেন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কালাচাঁদ সিংহ, শ্রীপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও সহকারি মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক মহলদার বাওড়টি পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন,পার্শ্ববর্তী চৌগাছি বিলের বিলের কিটনাশক মিশ্রিত পানি বাওড়ে প্রবেশ করায় ব্যাকটিরিয়া জনিত কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। এটি প্রতিকারে বাওড়ে পানিতে পটাশ ও টিনসেন্ট নামক প্রতিশেধক ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে মাছ মরে যাওয়া রোধ হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।

(ডিসি/এএস/নভেম্বর ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test