E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিলেট সীমান্তের হালচাল

সারী নদীতে গত ৪ বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকার বালু লুট, মুকবুলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

২০২৩ নভেম্বর ০২ ১৮:৪৭:১২
সারী নদীতে গত ৪ বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকার বালু লুট, মুকবুলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেটের গোয়াইনঘাটের সারী নদীতে গত চার বছরে ৪০ কোটি টাকার বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বালুখেকো মোঃ মুকবুল মিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি অভিযোগ আমলে নিয়েছে সিলেটের পরিবেশ অধিদপ্তর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৬ নভেম্বর ২০২৩ইং তারিখ সকাল ১০ টায় যান্ত্রিক উপায়ে বালু উত্তোলনের যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য বিবাদীদের নোটিশ দিয়েছেন সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ এমরান হোসেন। গোয়াইনঘাট উপজেলার আনন্দ বাজার থেকে বুধিগাও হাওড় গ্রাম সংলগ্ন খেওয়াঘাট পর্যন্ত সারী নদী থেকে অবাধে বালু লুট করছে বালু খেকোরা। গত ৩/৪ বছরে স্থানীয় থানা পুলিশের যোগসাজশে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার বালু লোপাট করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার বুধিগাও হাওড় আনন্দ বাজার থেকে বুধিগাও খেওয়াঘাটের মূখ পর্যন্ত সারী নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের বসত বাড়ী, মসজিদ, কবরাস্থানসহ নদী ভাঙ্গন ও পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন। এলাকায় নির্বিচারে ড্রেজারমিশিন দিয়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকার বালু লুট করে পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। নদী ভাঙনের চরম ঝুকিতে আছে নদীটির তীরবর্তী আশেপাশের স্থানীয় জনগণ ও তাদের স্থাপনা। গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে সিলেটের উপ-মহা পুলিশ পরির্দশক (ডিআইজি), জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর উক্ত লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেছেন বুধিগাও হাওড় গ্রামের বাসিন্দা মৃত হায়দার আলীর ছেলে মোঃ মুনসুর আলী।

পরিবেশ অধিদপ্তর’ অভিযোগটি আমলে নিয়ে ইতিমধ্যে অভিযুক্ত আসামীদের শুনানির জন্য চিঠি প্রদান করেছেন। সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিমের তথ্য অনুযায়ী সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার বুধিগাও হাওড় সংলগ্ন আনন্দ বাজার থেকে শেওলা খালের মুখ পর্যন্ত যান্ত্রিক উপায়ে ড্রেজার মেশিনের সাহয্যে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পার্শ্ববর্তী স্থাপনা ভাঙ্গার আশংকা তৈরী হয়েছে। অবৈধ ড্রেজার মেশিনের দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে সারী নদী ও নদীর তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার মারাত্নক ক্ষতি হচ্ছে, যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫, সংশোধিত-২০১০, শব্দ দুষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০০৬ 'এর পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উক্ত মর্মে আগামী ৬ নভেম্বর ২০২৩ইং তারিখে সকাল ১০ টায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটে’র কার্যালয়ে বালু উত্তোলন সংক্রান্ত কাগজপত্রসহ অভিযুক্তদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর।

অভিযোগে আসামি করা হয়েছে বাওয়ন হাওড় গ্রামের আওলাদ মিয়ার ছেলে মুকবুল মিয়া, মুকবুল মিয়ার ছেলে রিয়াজুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত: জামাল উদ্দিন’র ছেলে মোঃ হাফিজ উদ্দিন, ছায়েদ আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম, মৃত আরজান আলীর ছেলে আব্দুল হাইসহ অঞ্জাত নামা আরো ১০/১৫ জনকে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ সেস্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখে মুকবুল গংদের বিরুদ্ধে শেওলারটুক গ্রাম সংলগ্ন সারী নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের প্রতিকার চেয়ে সিলেটের উপ-মহা পুলিশ পরির্দশক (ডিআইজি), জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন, শেওলারটুক গ্রামের মৃত জিয়ার উদ্দিন’র ছেলে গণ মাধ্যমকর্মী মোঃ দুলাল হোসেন রাজু। অভিযুক্তরা শেওলারটুক, বাওয়ন হাওড় গ্রামের লোকজনের বসতবাড়ি, মসজিদ, কবরাস্থান ধ্বংস করে নির্বিচারে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকার উপরে বালু লুট করেছে তিনি ওই অভিযোগে উল্লেখ করেছিলেন।

সারী নদীতে অবৈধ বালু লুটপাট বন্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রাজুর আসামীরা তাঁর উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজু। ওই দূর্বৃত্তরা স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতায় মিথ্যা মামলা-হামলার ভয় দেখাচ্ছে তাঁকে। এছাড়া দূর্বৃত্তরা রাজুকে মারতে তার এলাকায় নিয়মিত সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক।

(আরআর/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test