E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বিয়ে দেয়ার কথা বলে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ

২০২৩ নভেম্বর ১৬ ১৮:১১:১৮
বিয়ে দেয়ার কথা বলে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ করেছে। ভিকটিম এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনায় ৪ জন নামীয় এবং আরো আজ্ঞাতসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বুধবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে।

এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা সদরে।

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় চিরিরবন্দর উপজেলা শহরের তেলীপুকুর এলাকায় নির্মানাধীন একটি ভবনের পিছনে এ ঘটনা ঘটে। সংবদ্ধ গণধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রেমিক চিরিরবন্দর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। সে মামলার সাক্ষী হয়েছে।

ধর্ষণের শিকার ওই যুবতির (১৮)। বাড়ি চিরিরবন্দর উপজেলার খালপাড়া গুচ্ছগ্রাম এলাকায়। তার পিতা রবিউল ইসলাম। ছোট বোনের এই ঘটনায় বড় বোন সালমা আক্তার থানায় মামলা করেছে।ধর্ষিত যুবতির প্রেমিক মাসুদ রানা(২৪) পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুড়া এলাকার বাসিন্দা।

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু ওই ভিকটিম জানান, মাসুদ রানার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। মঙ্গলবার সকালে মাসুদ রানা পঞ্চগড় থেকে চিরিরবন্দরে তাদের বাসায় আসে। রওশন আরার মা-বাবার কাছে বিয়ের কথা জানায়। কিন্তু মেয়ের পরিবার এ বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় রাত সাড়ে নয়টায় মাসুদের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রথমে চিরিরবন্দর রেলস্টেশনে আসে। পঞ্চগড় আসার কোন ট্রেন না পাওয়ায় হাঁটাপথে উপজেলার ঘুঘরাতলী এলাকায় বটগাছের নিচে বসে ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। স্টেশন থেকে দুটি ছেলে তাদেরকে অনুসরন করে তাদের পিছু নেয়।রাত ১০টায় পিছু নেওয়া ছেলে দুটি ঘুঘরাতলীতে এসে তাদের গন্তব্যের কথা জানতে চায়। ওই দুইজন ছেলের মধ্যে একজন হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আলীম সরকারের ছেলে নুর আলমের গাড়ির চালকের ছোট ভাই মোবিন (২০)।

ঘটনাস্থলে তাদের সাথে যোগ হয় আরও তিনজন (মাস্ক পরিহিত) সব কথা শুনে মোবিন তাদের বলেন, ‘তোমরা পালায় যাচ্ছো কেন? তোমরা যদি বিয়ে করবা আমরা তোমাদেরকে বিয়ে দেব। এখানে আমাদের সভাপতির ছেলে আছে, আমরা বিষয়টা ওনাকে জানাইছি। তোমরা চলো আমাদের সাথে।’ জবাবে ভিকটিম তাদের বলেন, ‘ভাইয়া আমরাতো বিয়ে ম্যানেজ করেই ফেলছি, আমরা নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারি। আপনারাতো আইনের লোক না। আমাদেরকে কি হেল্প করবেন।’ একথা শুনে তাদেরকে মারধর শুরু করে পরে একটা ভ্যানে জোরপূর্বক তুলে নেন এবং সাথে থালা তাদের মুঠোফোন কেড়ে নেন। পরে তাদেরকে এলএসডি (খাদ্য গোডাউন) সংলগ্ন একটি নির্মানধীন ভবন(নুর আলমের আত্মীয়ের বিল্ডিং) এ নিয়ে যান। সেখানে উভয়কে মারধর শুরু করে মাসুদকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে তার প্রেমিকাকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রওশনআরাকে ধাক্কা দিলে সে ধানক্ষেতে পড়ে যায়। তার পা ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। এ সময় সবাই ধানক্ষেতে নেমে পালাক্রমে ধর্ষন করে।

ভিকটিম আরো বলেন, মোমিনকে আমি দেখেছি। বাকিরা মাস্ক পড়া ছিলো। নুর আলমের কথা বলে আমাকে নিয়ে গেছে। ফোনে কাকে যেন বলতেছিলো ভাই আপনি আসেন, আমরা নিয়ে আসছি, কাজ হবে।’

পরে পাশের একটি ধানক্ষেতে শুইয়ে রেখে ভিকটিমকে তার ফোনটি দিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে বাড়ি চলে যেতে বলে।

পরে বিষয়টি অবহিত করে প্রেমিক মাসুদ রানা জরুরীসেবা ৯৯৯ এ ফোন দেন। পুলিশ রাত আড়াইটায় ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিম ও প্রেমিক মাসুদ রানাকে ‍উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বজলুর রশিদ বলেন, ৯৯৯ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের বোন সালমা আক্তার বাদি হয়ে বুধবার রাত পৌনে দশটায় চিরিরবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৬। পুলিশ ঘটনার সাথে যুক্তদের শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

(এসএস/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test