E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে নাঈম হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নুরুলসহ ৬ আসামি কারাগারে 

২০২৩ নভেম্বর ২০ ১৬:৫৮:০৭
মৌলভীবাজারে নাঈম হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নুরুলসহ ৬ আসামি কারাগারে 

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের আলোচিত কলেজ ছাত্র রেজাউল করিম নাঈম হত্যা মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬ আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তবে ঘটনার পরদিন সকালেই সোহান মিয়া নামের এক আসামীকে পুলিশ আটক করে। 

গত রবিবার সকালে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫ আসামী আত্মসমর্পণ করেন বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।

আত্মসমর্পণের পর আসামিরা আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাঁদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠনোর নির্দেশ দেন। আত্মসমর্পণ করা আসামীরা হলেন, মূলহোতা বর্ষিজোড়া এলাকার নুরুল ইসলাম, তার ছেলে রনি মিয়া, ভাতিজা আনোয়ার হোসেন, নাতি সোহান মিয়া ও ইমন মিয়া। এর আগে গত ১৫ নভেম্বর আদালতে আত্মসমপর্ণ করেন ওই মামলার এজাহারভুক্ত ৭নং আসামী আলামীন মিয়া। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই মামলায় এ পর্যন্ত কারাগারে পাঠানো হয়েছে মোট ৭ আসামীকে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো: ইউনুছ মিয়া পাঁচ আসামির আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান আদালত চলাকালে ওই পাঁচ আসামী আত্মসমপর্ণ করে জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেছেন।

আলোচিত ওই হত্যাকা-ের ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল রেজা জানান, আসামীদের খোঁজে তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়ি এমন কী প্রধান আসামী নুরুল ইসলামের শ্বশুর বাড়িতেও খোঁজ নেয়া হয়েছে। তাদের ব্যবহৃত ফোন বন্ধ থাকায় কোথাও তাদের পাওয়া যায়নি। আসামীরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য নুরুল ইসলাম এর পাসপোর্টর নাম্বারও সংগ্রহ করেছি। সব মিলিয়ে পুলিশ জেলার বিভিন্ন জায়গায় তাদের খোঁজে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আসামীরা আত্মসমর্পণ করার পর ১৯ নভেম্বর রাতেই তাদের তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন চাওয়া হয়েছে। আসামীদের রিমান্ড মঞ্জুর হলে আশা করি জিজ্ঞাসাবাদেই বেড়িয়ে আসবে ঘটনার প্রকৃত রহস্য।

এদিকে জেলা জুড়ে তোলপাড় করা এই হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িরদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছিলো।

উল্লেখ্য গত ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাসায় বাবা-মা ও বোনের সামনে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের বর্ষিজোড়া গ্রামে মো. চেরাগ মিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের কথিত ফেসবুক আইডি নিয়ে বাকবিত-া হয়। এসময় নুরুল ইসলাম দাবি করেন তার ছবি ব্যবহার করে চেরাগ মিয়া ফেক আইডি চালাচ্ছেন। মূলত ওই ঘটনার জেরেই নুরুল ইসলাম নাঈমের বাবা-মাকে গালাগালি ও মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে চেরাগ মিয়ার কলেজ পড়–য়া ছেলে রেজাউল করিম নাঈম ঘটনা থামাতে এগিয়ে আসলে তাঁকেও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করে নুরুল ইসলাম, তার ছেলে রনি মিয়াসহ সহযোগীরা। এতে নিজ বাড়িতেই নাঈমের রক্তক্ষরণ শুরু হলে নাঈমের বাবা-মা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে ওইদিন ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে পরিবারে সবার বড় নাঈম। সে এ বছর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। ঘটনার দু’দিন পর ৯ নভেম্বর নিহত রেজাউল করিম নাঈমের বাবা মো. চেরাগ মিয়া বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার পর থেকেই মুলহোতা নুরুল ইসলামসহ অন্য আসামীরা গা-ঢাকা দেন।

(একে/এসপি/নভেম্বর ২০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test