E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নূর হোসেনের অফিসে আগুন

২০১৪ মে ০১ ১৩:০৫:০৮
নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নূর হোসেনের অফিসে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জে কাউন্সিলর নূর হোসেনের অফিস ও ট্রাক স্ট্যান্ডে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা । কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম খুন হওয়ার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা নূর হোসেনকে দায়ি করে বক্তব্য দেয়ায় সাধারণ মানুষ নূর হোসেনের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। নজরুল ইসলাম গুম হওয়ার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে মামলা করা হয়েছিল তাতে ট্রাকের হেলপার থেকে কাউন্সিলর বনে যাওয়া নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়।

তাছাড়া অপহরণের পর পরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন নূর হোসেন। আজ দুপুরে বিক্ষুব্দ জনতা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

সকাল ১০ টার পর নজরুলের জানাযা শেষে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় সাধারণ মানুষ হঠাৎ নূর হোসেনের অফিস ও প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় ও তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে অবশ্য নূর হোসেনের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে, চলে আসে দমকলকর্মীরাও। পরে দমকলকর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরিস্থিতি ১২ টার দিকে শান্ত হয়ে আসে।

শিমরাইলে সিটি করপোরেশনের ট্রাক টার্মিনালের ভেতরে নূর হোসেনের ব্যক্তিগত কার্যালয়টি অবস্থিত। কাঁচপুরে শীতলক্ষ্যা নদী দখল করে বালু-পাথরের ব্যবসা, উচ্ছেদে বাধা, পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে বারবার আলোচনায় এসেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, কাঁচপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজি, নদী দখল, মাদক ব্যবসাসহ অনেক কিছুরই নিয়ন্ত্রক তিনি ও তাঁর লোকজন। তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় ছয়টি হত্যা মামলাসহ ২২টি মামলা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ-সমর্থক নজরুলের পরিবারের অভিযোগ, বিরোধের জের ধরে নূর হোসেন ও তাঁর লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এলাকার লোকজন জানান, ট্রাকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে জীবন শুরু করা নূর হোসেন পরে চালক হন। ১৯৯২ সালের পর তিনি কৃষক লীগের সাবেক নেতা ও পরে বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে যোগ দেন বিএনপিতে। সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি শামীম ওসমানের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর সিদ্ধিরগঞ্জে তিনি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে থাকেন। ওই সময় তাঁর বিরুদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ ১৩টি মামলা হয়। বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ইউনিয়ন কাঁচপুর শাখার সভাপতিও হন তিনি। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি এলাকায় ছিলেন না। ওই সময় তিনি ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁকে ধরিয়ে দিতে ইন্টারপোলে রেড নোটিশও পাঠানো হয়েছিল। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনের পর তিনি এলাকায় ফেরেন। গত বছর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে তিনি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজধানীতে প্রবেশের অন্যতম পথ শিমরাইল মোড় ও কাঁচপুরে পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রণ করেন নূর হোসেন ও তাঁর লোকজন।

(ওএস/এটি/মে ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test