E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্বাচিত হওয়ার আশায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন রুবেল হোসেন

২০২৩ ডিসেম্বর ২৮ ১৬:০৬:০৯
নির্বাচিত হওয়ার আশায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন রুবেল হোসেন

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : সংসদ নির্বাচনে একটি পরিচিত নাম হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন। অন্য যে কোন মানুষ থেকে তিনি আলাদা। তিনি যে কোন নির্বাচনেই অংশ গ্রহণ করেন না। অংশগ্রহণ করেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন ভৈরবের একজন মাঝারিগোছের ব্যবসায়ী। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না থাকলেও তিনি ইসলামী অনুশাসনে আলো বিলিয়ে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে বক্তৃতা করেন তিনি। এখন ইসলামিক বক্তা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য পদে গতবার হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন প্রার্থীতা হিসেবে প্রথম জানান দেন। কিশোরগঞ্জ-৬ আসনটি আসলে ভিআইপি আসন। এখানে রুবেল হোসেন একজন ক্ষুদ্র প্রার্থী। এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন জিল্লুর রহমান। যিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ আসনে তার ছেলেই আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন এমপি হয়েছেন ৩ বার। এ আসনে নাজমুল হাসান পাপন একজন অপ্রতিন্দ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবেই পরিচিত। তার আরেকটি কারণ হলো তিনি নারীনেত্রী শহীদ আইভি রহমানের একমাত্র পুত্র। তিনি বিসিবি সভাপতি ও দেশের একজন স্বনামধন্য ঔষধ ব্যবসায়ী। তার দেশে যেমন পরিচিতি রয়েছে, দেশের বাহিরে তেমন পরিচিতি রয়েছে। এদিকে যদি বিএনপি নির্বাচনে আসতো তাহলে এ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।

এ আসনের জন্য তিনিও একজন ভিআইপি প্রার্থী। তার বাড়ি কুলিয়ারচরে। তার পিতা মরহুম আলহাজ্ব ছিদ্দিক মিয়া ছিলেন একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। বিএনপি নেতা শরীফুল আলমও কম নয় এ আসনে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও সিআইপি। এ আসনে হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন টিকে থাকায় কষ্টকর। নির্বাচনে অংশ নিতে নিজস্ব সহায় সম্বলকে পূঁজি করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার অনুপস্থিতিতে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তার ছোট ভাই। নির্বাচনের মোহ তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। এ মোহ থেকে তার বের হওয়া অসম্ভব। তিনি নির্বাচন করবেনই। ভোট কে দিবে না দিবে তার জন্য আক্ষেপ নেই। হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তার সাথে কয়েক জনকে নিয়ে প্রচারণায় বেড়িয়ে যান। কখন নাস্তা করবেন, কখন দুপুরের খাবার খাবেন বা রাতের খাবারও কখন খাবেন তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। এভাবেই তিনি পরিশ্রম করে নির্বাচনীয় এলাকা দুটি উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কখনও কারও বাড়িতে, কখনো চায়ের দোকানে আবার কখনো ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে তিনি ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন আওয়ামী লীগ বা বিএনপির কোন দলেরই সমালোচনা করেন না। কে কতটা উন্নয়ন করলো তাও তিনি বলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বুকে লালন করে তার মতো করে প্রচার প্রভাকান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইতিমধ্যে নির্বাচনীয় এলাকার ভৈরবে ৮৬টি, কুলিয়ারচরে ৫৬টি কেন্দ্রের সামনে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে একাকার করে ফেলেছেন। তার এসবগুণের কারণে অনেকেই মনে করছেন তাকে ভোট দিবেন। মানুষের কথায় কতটা এগুতে পারে তা গত সংসদ নির্বাচনে হিসেব গণনা করলেই আমরা পেয়ে যেতে পারি।

ভৈরব-কুলিয়ারচর দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-৬ সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সমাজ কল্যাণ সচিব ভৈরবের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও তরুন সমাজ সেবক হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন দু’উপজেলার নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর শহরে ব্যাপক গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, কর্মী সমাবেশ ও পথসভার মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে মোমবাতি প্রতীকে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।
এরই অংশ হিসেবে প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর হতে কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গণসংযোগ শুরু করে রামদী ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজারে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে হাতে হাত, বুকে বুক মিলিয়ে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে সকলের দোয়া ও মোমবাতি মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়ান।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯১ জন। এতে কুলিয়ারচর উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৩ জন ও ভৈরব উপজেলায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৮ জন ভোটার।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা যদি সহায় হোন তাহলে আমি জয়যুক্ত হতে পারি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটায় ভাগ্যের ব্যাপার। এখানে পাশ ফেল কোন ব্যাপার নয়। আমি যার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি তিনি আমাদের সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মো. জিল্লুর রহমান ও নারী নেত্রী শহীদ বেগম আইভি রহমানের সন্তান। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আমি তেমন কিছ্ইু করতে পারবো না। তা জেনেও আমি ভোটের মাঠ দখল করে আছি। বর্তমানে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ আছে। আমাকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। আমার ধারণা ভবিষ্যতেও নির্বাচনের দিন পর্যন্তও তারা আমাদের সাথে কোন অসদাচরণ করবে না এটা আমার বিশ্বাস। পরিশেষে এলাকাবাসীকে বলতে চাই আমাকে একবারের জন্য হলেও জয়যুক্ত করুন। আমি আপনাদের সুখে-দুঃখে কাছে থাকতে চাই। নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও আপনাদের সুখে-দুঃখে আছি।

উল্লেখ্য, হাজী মোহাম্মদ রুবেল হোসেন ভৈরব পৌর শহরের রানীর বাজার এলাকার এক মুসলিম পরিবারে ৩ মার্চ ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গণি মিয়া ও মাতা সালেহা বেগম এর ৩য় পুত্র তিনি। তার মরহুম পিতা গণি মিয়া ছিলেন একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। সেই সুবাধে তার ভাইয়েরা এখন সবাই ব্যবসায়ী।

(এসএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test