E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে দেশ উন্নয়ন বঞ্চিত থেকেছে দীর্ঘদিন’

২০২৩ ডিসেম্বর ২৯ ১৫:৪০:০৫
‘বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে দেশ উন্নয়ন বঞ্চিত থেকেছে দীর্ঘদিন’

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : ‘২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে। ৭৫ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে ছিল। এই সময়ে কি রকম উন্নয়ন হয়েছে আর এই ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ কি উন্নয়ন করেছে, ওরা ক্ষমতায় ছিল দীর্ঘ ২১ বছর, এর মধ্যে তুলনা করলেই বোঝা যাবে, কোন দলকে ভোট দেবো। নৌকা একটি প্রাচীন ও সুপরিচিত মার্কা। এই মার্কা নিয়েই বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন। এই মার্কা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী সরকার গঠন করেছেন।’

‘একটি দেশের জাতীয় নির্বাচনের ওপর দেশ, জাতি, উন্নয়ন সব কিছুই নির্ভর করে। নীলফামারী আগামীতে এক বিরাট সম্ভাবনা। ইতিমধ্যে এখানে গ্যাস চলে এসেছে। গ্যাসের পাইপ বসানোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এটা হয়ে গেলেই এখানে হুলুস্থুল হয়ে যাবে। তখন দেখা যাবে রাজধানী ঢাকায় এক কাঠা জমির দাম কোটি কোটি টাকা ওই টাকায় এখানে একশো গুণ বেশি জমি পাওয়া যাবে। গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, সড়ক যোগাযোগ হয়েছে কারখানার পর কারখানা তৈরি হবে। কাজের আর কোন অভাব হবে না। আমরাও উন্নত দেশের কাতারে সামিল হবো। এই কাজ গুলো করার জন্য নেতৃত্বের দরকার আছে। নেতৃত্বাহীন কোন কিছু গড়ে উঠে না।'

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূরের সমর্থনে নির্বাচনী ট্রাক-শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শহরের চৌরঙ্গী মোড়ের ট্রাক-ট্রাকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় প্রাঙ্গণে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা গুলো বলেছেন।

ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রহমান ডালুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন দেশ বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব, নীলফামারী-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাফিজুর রশীদ মঞ্জু, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হোসেন রানা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিকুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম।

সমাবেশের সভাপতি গোলাম রহমান ডালু তার বক্তৃতায় জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ছেড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদানের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করতে গিয়ে জেলা শহরে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় স্থানান্তরের ঘটনাটির অবতারণা করেন, তিনি বলেন, ' আমি বিএনপি করতাম, এরপরও সেসময় আমি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে গিয়েছি। আমি একজন বিএনপির নেতা, তারা আমাকে বুকে টেনে নিলো, তাঁরা প্রতিহিংসার উর্ধ্বে উঠে বুকে টেনে নিয়ে বলল, 'তুমি এগিয়ে যাও, যত সহযোগিতা লাগে আমরা দেবো। শ্রমিক সংগঠনটির জেলা কার্যালয় কীভাবে জেলা সদরে আনা যায়-আমরা দেখবো।'

গোলাম রহমান ডালু আরও বলেন, তখন থেকে আমি বিএনপি ত্যাগ করেছি, এরপর থেকে আওয়ামী লীগের যেকোন কর্মসূচিতে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পালন করি।'

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে গোলাম রহমান ডালু আরও বলেন, 'এ অঞ্চলে যে আওয়ামী লীগ গড়ে উঠছে, সে আওয়ামী লীগ হলো মানবতার আওয়ামী লীগ।’

এ প্রসঙ্গে তিনি তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়েন। লোকে প্রধানমন্ত্রীকে মানবতার মা কেন বলে, আমি সেদিন তার প্রমাণ পেয়েছি।

২০০১ সালের জুন মাসে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেট চালুর প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে নৌকা মার্কার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, অক্টোবরে ভোট হলো, কিন্তু আমাদের দল ক্ষমতায় এলো না। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। সে সময় এই আসনের এমপি হিসেবে উন্নয়নের জন্য ১ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয় নাই।

এ সময় আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, সে সময় এই এলাকার মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ক্ষমতায় এসেই খালেদা জিয়া আমাদের এলাকার উত্তরা ইপিজেডটি বন্ধ করে দিলেন। কোন যুক্তিতে তিনি ইপিজেটটি বন্ধ করলেন, বিদ্যুত দিয়ে ইপিজেট চলবে না, লোকসান হবে, বিনিয়োগকারীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে কলকারখানা করবে না। ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া এই উদ্দোগকে তিনি 'ভূয়া প্রকল্প' আখ্যা দিয়ে ইপিজেটটি বন্ধ করে দিলেন।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের এমপি থাকায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি এলাকাটিকে উন্নয়ন বঞ্চিত করলেন।

আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আজ উত্তরা ইপিজেডে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুত দিয়ে কারখানা চলছে। এখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিনিয়োগকারীরা কারখানা তৈরি করছে। তাদের কি লোকসান হচ্ছে। লোকসান হলে এখানে তারা বিনিয়োগ করতে আসতো না। বেগম খালেদা জিয়া কিভাবে বুঝেছিলেন যে বিদ্যুত দিয়ে কারখানা চলবে না।

(ওকে/এসপি/ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test