E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভোট চলাকালে

নবীনগরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত, ঢাকায় প্রেরণ

২০২৪ জানুয়ারি ০৭ ১৮:১৯:০৩
নবীনগরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত, ঢাকায় প্রেরণ

বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের দ্বিধাবিভক্ত গ্রুপের মধ্যে বর্তমান সাংসদ (মনোনয়ন বঞ্চিত) এবাদুল করিম বুলবুল গ্রুপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়ে নবীনগরে ফেরার পথে তিনি রাস্তায় ওই নৃশংস হামলার শিকার হন। এ নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। এদিকে গুরুতর আহত সাদেককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাদেকের অনুসারী নেতা কর্মীরা উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান ও জেলা পরিষদ সদস্য নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে হাসপাতাল সড়কে দুপুরে বিক্ষোভ করে।

নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'পূর্ব বিরোধের জের ধরে সাদেকের গ্রামের বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষজনই এ হামলা চালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

পুলিশ, এলাকাবাসি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট চলাকালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন সাদেক সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে ভোট দিতে তার গ্রামের বাড়িতে অবস্থিত বাশারুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান। এসময় সাদেকের সঙ্গে থাকা তার ২০/৩০ জন অনুসারী ভোটকেন্দ্রে মোবাইলের মাধ্যমে ফেসবুকে কেন্দ্রের দৃশ্যাবলী লাইভে দেখাচ্ছিলেন। ওইসময় লাইভ না দেখাতে সাদেকের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ভোট দিয়ে সাদেক বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তার উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে সাদেকের মাথা, চোখের নীচে ও সারা শরীরের বিভিন্ন অংশে বেপরোয়া লাঠির আঘাতে মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকায় প্রেরণ করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, 'উনার (সাদেক) মাথা, চোখের নীচে ৮/১০টি সেলাই লেগেছে। এছাড়া লাঠির আঘাতে সারা শরীরেও জখম হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, আমরা ঢাকায় রেফার করেছি।'

এদিকে খবর পেয়ে বর্তমান সাংসদের (বুলবুল) অনুসারী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য নাছির উদ্দিন ও ভাইস চেয়ারম্যান (নারী) শিউলী বেগমের নেতৃত্বে সাদেকে অনুসারীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে হাসপাতালে ছুটে যান।

এ সময় জেলা পরিষদ সদস্য নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, 'সাদেকের নিজ ইউনিয়ন লাউর ফতেপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী জুয়েল ও তার বড় ভাই শওকত আলীর নেতৃত্বে এ ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।'

তবে দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের অপর গ্রুপের প্রধান, এ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া সাবেক জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা লিয়াকত আলী জুয়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'এটি সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যে কথা। মূলত হামলা হয়েছে রাস্তায়। তখন আমি ও আমার ভাই কেন্দ্রের ভেতরে নির্বাচন নিয়ে দায়িত্ব পালন করছিলাম। সুষ্ঠু তদন্ত হলেই এমন মিথ্যে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যাবেনা।'

নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম আজ বিকেলে বলেন, 'ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, সাদেক চেয়ারম্যানের উপর বিগত দিনে তার নানা কর্মকান্ডে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ থাকা এলাকার কিছু বিক্ষুব্ধ লোকজন মূলত এ হামলা করেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।'

(জিডি/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test